এ বারই প্রথম নয়, আগেও বারবার ১০০ ডায়ালে ফোন করেছেন তিনি। অচেনা নম্বরে ফোন করে অপিরিচিত মহিলাকেও উত্ত্যক্ত করেছেন। বিপদে ফেলেছেন নিজের পরিবারের লোকজনকে। গত রবিবার ওই ১০০ নম্বরে ফোন করে নবান্নের বিপদঘণ্টি বাজিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন ভবানীপুর থানার কালীঘাট রোডের বাসিন্দা অনিরুদ্ধ ঘোষ।
পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে ওই নম্বরে ফোন করে ৫২ বছরের অনিরুদ্ধবাবু জানান, নবান্নে বোমা রাখা আছে। বিস্ফোরণ হতে পারে যে কোনও মুহূর্তে। এই খবর পেয়েই নবান্নে পৌঁছয় কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াড এবং বম্ব স্কোয়াড। নবান্ন জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চলতে থাকে। ঘটনাস্থলে যান কলকাতা পুলিশের কমিশনার রাজীব কুমার এবং হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ। তবে তল্লাশি চালিয়ে কিছুই মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর পরেই তদন্ত শুরু হয় ওই ফোনের সূত্র ধরে। কালীঘাট রোডে অনিরুদ্ধবাবুর বাড়িতে পৌঁছে যান তদন্তকারীরা। সেখান থেকেই তাঁকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় ভবানীপুর থানায়। পরে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর মোবাইল ফোনটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের জেরায় অনিরুদ্ধবাবু ১০০ নম্বরে ওই ফোন করার কথা স্বীকার করেছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।
কেন ওই ফোন করলেন তিনি?
লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তির পরিবারের দাবি, তিনি মানসিক ভাবে সুস্থ নন। তাই তাঁর চিকিৎসাও চলছে। কলকাতায় তাঁদের পরিবারের একাধিক মিষ্টির দোকান রয়েছে। কিন্তু অনিরুদ্ধবাবুর সে সব দিকে কোনও দিনই মন নেই। জেরায় তদন্তকারীরা জেনেছেন, গত সপ্তাহে আরও এক বার ১০০ নম্বরে ফোন করেছিলেন ওই ব্যক্তি। সে বার তিনি কী বলেছিলেন, সোমবার পর্যন্ত তা জানতে পারেননি তদন্তকারী অফিসারেরা। তবে তাঁর মোবাইলের কল লিস্টে ঘেঁটে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এর আগেও বারবার ১০০ নম্বরে ফোন করেছেন তিনি।
এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘কেন ১০০ ডায়ালে রবিবার ফোন করতে গেলেন অনিরুদ্ধবাবু, তা এখনও ঠিক করে জানতে পারিনি। তবে এর আগেও তিনি অচেনা নম্বরে ফোন করে পরিবারের সদস্যদের বিপদ ডেকে এনেছেন, তা আমরা জানতে পেরেছি।’’ পুলিশ জানতে পেরেছে, কিছু দিন আগে তিনি একটি অচেনা নম্বরে ফোন করলে এক মহিলা ফোন ধরেন। সে বার ঘটনা এত দূর গড়িয়েছিল যে, ওই মহিলার পরিবারের লোকজন অনিরুদ্ধবাবুর বাড়িতে চলে আসেন। পুলিশের দাবি, সে যাত্রায় নিজের পরিবারের সদস্যদের হস্তক্ষেপে কোনওমতে আইনি ঝামেলা থেকে বেঁচে যান অনিরুদ্ধবাবু।
প্রাথমিক ভাবে পাওয়া সব তথ্যই এখন যাচাই করছে পুলিশ। পাশাপাশি, তাঁর কোনও জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে কি না, সে দিকটিও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy