Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata

Firhad Hakim: একসঙ্গে কাজের বার্তা ফিরহাদের

রাজারহাট এলাকার ওই দুই কাউন্সিলরের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন সেখানকার রাজনৈতিক মহলে অনেকেরই জানা।

মাস্কহীন: বিধাননগর পুরবোর্ডের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। শুক্রবার।

মাস্কহীন: বিধাননগর পুরবোর্ডের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে কারও মুখেই মাস্কের বালাই নেই। শুক্রবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৭:২৪
Share: Save:

সদ্য নির্বাচিত দুই কাউন্সিলরকে শপথ গ্রহণ মঞ্চে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে হাসতে দেখে দর্শকাসন থেকে এক যুবকের মন্তব্য, ‘‘পাঁচটা বছর এ ভাবে কাটাতে পারলেই ভাল।’’ বিধাননগর পুরসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে শুক্রবার পাশাপাশি দাঁড়ানো ওই দুই কাউন্সিলরের এক জন প্রথম বার জিতেছেন। অন্য জন দ্বিতীয় বার। রাজারহাট এলাকার ওই দুই কাউন্সিলরের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপড়েন সেখানকার রাজনৈতিক মহলে অনেকেরই জানা।

পুর নির্বাচনের পরে এ দিন ছিল বিধাননগরে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত-সহ এ দিন শপথ নেন বিধাননগরের ৪১ জন কাউন্সিলর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত কলকাতার মেয়র তথা পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য ছিল তাৎপর্যপূর্ণ। এ দিন ফিরহাদ বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস একটা পরিবার। একসঙ্গে থাকি, একসঙ্গে এগিয়ে যাই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নিয়ে মানুষের সেবা করি। কে চেয়ারম্যান, কে ডেপুটি মেয়র, কে কাউন্সিলর নয়, সব সময়ে টিম-মমতা কাজ করবে। মানুষের সেবা করবে।’’

পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী থাকাকালীন দীর্ঘদিন বিধাননগরের পুর পরিষেবার নানা সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ফিরহাদ সেখানকার পুর নেতৃত্বের একাংশের নানা ধরনের রাজনৈতিক টানাপড়েনেরও সমাধান করতেন। তাই এ দিন ফিরহাদের বক্তব্যকে সদ্য তৈরি হওয়া পুরবোর্ডের সদস্যদের এক হয়ে কাজ করার নির্দেশ বলেও মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। পুর এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, ‘‘সিঙ্গাপুরে যে ভাবে বিমানবন্দর থেকে নামার পরে শহর দেখতে ছোটেন মানুষ, এখানেও রাজারহাট-বিধাননগরকে উন্নয়নের মাধ্যমে সে ভাবেই সাজিয়ে তোলা হবে।’’

২০১৫ সালে প্রথম বারের বিধাননগর কর্পোরেশনের বোর্ডের সময়ে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে পুরসভা চত্বরে তোয়ালে পেতে শুয়ে পড়েছিলেন এক মেয়র পারিষদ। আবার বোর্ড মিটিংয়ের দিন ছাড়া এক মহিলা নেত্রীর ঘর সাধারণত খোলা থাকতে দেখা যেত না। পুরসভার সদস্য এক দাপুটে নেতার বিরুদ্ধে রাজারহাটের সমস্যাকে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ প্রায়
প্রকাশ্যেই করতেন আর এক দাপুটে সদস্য। প্রথম বোর্ডে এ রকম নানা কিছু ঘটার কথা পৌঁছেছিল ফিরহাদ-সহ দলের উপর মহলে। ২০১৯ সালে মেয়র পদ ছেড়ে বিজেপিতেই
চলে গিয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত।

বিধাননগর পুর এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এ দিন সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবরাজ চক্রবর্তীকে শপথবাক্য পাঠের পরে ‘রাজারহাটের জয় হোক’ বলতে শুনে দর্শকাসন থেকে হাততালির ঝড় ওঠে। যাঁদের রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে বরাবরই আলোচনা হয়, সেই সব্যসাচী দত্ত, তাপস চট্টোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষদস্তিদার, কৃষ্ণা চক্রবর্তী, সুজিত বসুদের অবশ্য এ দিন একে অন্যের সঙ্গে হাসিমুখেই কথা বলতে দেখা গিয়েছে। সব্যসাচীকে দেখা যায়, বক্তব্য রাখার জন্য তাপস চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে তাঁর হাতে মাইক তুলে দিতে।

শপথ গ্রহণের পরে মেয়র কৃষ্ণা বলেন, ‘‘আমরা সবাই মেয়র, সবাই কাউন্সিলর। রাজারহাটের সর্বত্র মিষ্টি জল পাঠানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে হবে আমাদের। সল্টলেক তো রয়েছেই।’’ চেয়ারম্যান সব্যসাচী বলেন, ‘‘কৃষ্ণাদির নেতৃত্বে সব ধরনের উন্নয়ন করা হবে।’’ অন্য দিকে, এ দিন শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে একাধিক বার নেতা-নেত্রীদের নামে ‘জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিতে শোনা যায় সমর্থকদের। সরকারি অনুষ্ঠানে সে সব না করতে দর্শকদের উদ্দেশে বলেন কৃষ্ণা। পরে সেই সরকারি মঞ্চেই কাউন্সিলর জয়দেব নস্করকেও জয়ধ্বনি দিতে দেখা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Bidhannagar Firhad Hakim Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE