Advertisement
১৮ মে ২০২৪

মিড-ডে মিল বিবাদে ‘মারধর’ শিক্ষকদের

স্কুলে ঢুকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর ও অশ্রাব্য গালিগালাজের অভিযোগ উঠল এক দল স্থানীয় যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে পুলিশে খবর দিতে না পারেন, তাই তাঁদের মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০১৬ ০১:৩৭
Share: Save:

স্কুলে ঢুকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মারধর ও অশ্রাব্য গালিগালাজের অভিযোগ উঠল এক দল স্থানীয় যুবকের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে পুলিশে খবর দিতে না পারেন, তাই তাঁদের মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সোমবার শিবপুরের জগৎ ব্যানার্জী ঘাট রোডের শ্রীশীতলা হিন্দি বিদ্যালয়ের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামলায়। স্কুলের তরফে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। স্কুলের টিচার ইনচার্জ (টিআইসি) মধু প্রসাদ জানান, পরীক্ষার পরে শিক্ষক-শিক্ষিকারা যখন টিচার্স রুমে বসেছিলেন তখন ২০-৩০ জন যুবক অশ্রাব্য গালিগালাজ দিতে দিতে ঘরে ঢুকে আসেন। ‘কেন পড়ুয়াদের মিড ডে মিল দেওয়া হচ্ছে না’, এই প্রশ্ন তুলে তাঁরা টিচার ইনচার্জকে হেনস্থা করতে গেলে বাধা দিতে এগিয়ে আসেন বাকি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অভিযোগ, যুবকেরা উত্তেজিত হয়ে চন্দন দাস নামে এক সহকারি শিক্ষককে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন। টিআইসি বলেন, ‘‘শুধু মারধর বা গালিগালাজই নয়, ওই যুবকেরা আমাদের মোবাইল কেড়ে নেন যাতে পুলিশকে ফোন না করতে পারি।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, নিয়মানুযায়ী প্রতিটি পুর-ওয়ার্ডে মিড ডে মিলের টাকা বা খাবার বন্টনের দায়িত্বে থাকে ওয়ার্ডের কাউন্সিলের নেতৃত্বে গঠিত ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির। সেই কমিটির প্রেসিডেন্ট হিসাবে থাকেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও কমিটির সম্পাদক করা হয় এলাকার পাঁচটি স্কুল থেকে নির্বাচিত সব থেকে বর্ষীয়ান টিআইসিকে। সেই মতো ওই ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটিতে রয়েছেন কাউন্সিলর বিনয় সিংহ এবং‌ সম্পাদক হিসাবে নির্বাচিত করা হয়েছে শিবপুর হিন্দি হাইস্কুলের টিআইসি কুন্দন সিংহকে।

হাওড়া শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর, শ্রীশীতলা হিন্দি হাইস্কুলে যিনি দীর্ঘ দিন ধরে টিআইসির দায়িত্বে ছিলেন তিনি জুলাইয়ে অবসর নেন। এর পরে ওই পদে উন্নীত হন মধু প্রসাদ নামে ওই শিক্ষিকা। শিক্ষিকার অভিযোগ, তিনি টিআইসি পদে যোগ দেওয়ার পরেই দু’সপ্তাহ ধরে মিড ডে মিলের টাকা দেওয়া নিয়ে ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটিতে গোলমাল বাধে। শুধু শ্রীশীতলা হিন্দি হাইস্কুলে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয় কমিটি। ফলে বন্ধ হয়ে যায় পড়ুয়াদের মিল ডে মিল। মধু প্রসাদের অভিযোগ, ‘‘কমিটি এত দিন প্রতি পড়ুয়া পিছু ৪ টাকা ১৩ পয়সা করে দিয়েছে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার কিছু দিন পরেই টাকা বন্ধ করে দেয়। শিক্ষা সংসদে প্রতিবাদ করেছিলাম। এর পরেই এ দিনের হামলা।’’

হাওড়া পুরসভার ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিনয় সিংহ অবশ্য মিড ডে মিলের টাকা বন্ধের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওই স্কুলে মিড ডে মিল থেকে টাকা চুরি হচ্ছিল। তাই মিড ডে মিল তৈরির দায়িত্ব স্কুলের হাতে না দিয়ে ওয়ার্ড এডুকেশন কমিটির হাতে দিয়েছিলাম। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে রান্না করা খাবার ওই স্কুলে পাঠালেও তা পড়ুয়াদের খেতে দিচ্ছিলেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এলাকার ছেলেরা তারই প্রতিবাদ করতে যান। মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়।’’

হাওড়ার প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের ডিআই কবিতা মাইতি বলেন, ‘‘যে যার খুশি মতো চলছেন তা আমরা বরদাস্ত করব না। কেন শিশুরা মিড ডে মিল পায়নি, তা নিয়ে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Miscreants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE