পুলিশ সূত্রে খবর, প্রথম ঘরটি খাওয়ার এবং বসার ঘর। সেই ঘরে কাউকে দেখতে পাননি তাঁরা। শোওয়ার ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন দরজায় বাইরে থেকে তালা। সেই তালা ভেঙে দরজা খুলতেই, সামনেই পাওয়া যায় সৌমিত্রবাবুর দেহ। তাঁর স্ত্রীর দেহ পাওয়া যায় খাটের তলা থেকে। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘স্ত্রীয়ের পা দুটো খালি বেরিয়ে ছিল খাটের তলা থেকে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা ঘর লণ্ডভণ্ড অবস্থায় ছিল। আততায়ীরা আলমারি থেকে শুরু করে সমস্ত ড্রয়ার তছনছ করেছে। বিছানার উপরও সমস্ত জিনিসপত্র ছড়ানো ছেটানো ছিল। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, লুঠ করতেই ঢুকেছিল দুষ্কৃতীরা। সেই সময় কোনও ভাবে বাধা পেয়ে দম্পতিকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে কী ভাবে খুন করা হয়েছে তা নিয়ে নিশ্চিত নয় পুলিশ। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘দেহে পচন আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে। ফলে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় নি। দেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে।”
এই আবাসনে থাকতেন ওই দম্পতি।
প্রতিবেশিদের সূত্রে জানা গিয়েছে, যে জমিতে ওই আবাসন তৈরি হয়েছে, সেই জমিটি সৌমিত্রবাবুর মামা পশুপতি দত্তের। সৌমিত্রবাবু আগে কল্যাণীতে থাকতেন। সেখানেই তিনি প্রাইভেট টিউশন করাতেন। এখনও তিনি গৃহশিক্ষকের কাজ করেন। ২০০৬-০৭ সাল নাগাদ মামা পশুপতিবাবু তাঁকে ওই ফ্ল্যাটটি উপহার দেন। তারপর থেকে ওই ফ্ল্যাটেই সস্ত্রীক থাকতেন সৌমিত্রবাবু। প্রতিবেশিরা বলেন, ওই দম্পতি কারওর সঙ্গে বিশেষ মেলামেশা করতেন না। তবে প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে তাঁদের বাড়িতে কিছু দামী বৈদ্যুতিন জিনিসপত্রের ডেলিভারি হয় বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশিরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ওই তল্লাটে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। স্কুল রোডে একটি দোতলা বাড়িতে ভর সন্ধ্যায় তালা ভেঙে চুরি হয়। এলাকার একাধিক দোকানেও চুরি হয়েছে। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন,‘‘কয়েক দিন আগে একটি মাংসের দোকানের তালা ভেঙে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। সেখানে টাকা পয়সা না পেয়ে মাংস কাটার বড় বড় চপার হাতিয়ে চম্পট দেয় তারা।” তদন্তকারীদের সন্দেহ নতুন একটি গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই এলাকায় এবং সেটি বেশ বেপরোয়া।