তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, বন্ধুর পাশে দাঁড়াতেই এমএলএ হস্টেলে ভাঙচুরে জড়িয়ে পড়েন তিনি। কারণ, সরকারি সম্পত্তি ভাঙা তো দূর অস্ত্, পাড়ায় ছোটখাটো গোলমালেও থাকেননি তিনি। তবে পড়শিদের একাংশের দাবি, মা-বাবার রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তিতে ইদানীং যেন কিছুটা বদলে গিয়েছেন পুত্র।
তিনি শুভ আঢ্য। বনগাঁ পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধান জ্যোৎস্না আঢ্য ও বনগাঁ শহর তৃণমূল কংগ্রেসের প্রভাবশালী সভাপতি শঙ্কর আঢ্য ওরফে ডাকুর একমাত্র ছেলে। বয়স ২৩। আঢ্য দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ে। শুভ বড়। এলাকার মানুষ তাঁকে গোপাল বলে ডাকেন।
পুলিশের অভিযোগ, শুক্রবার কিড স্ট্রিটের এমএলএ হস্টেলে চড়াও হয়ে সুপার তুষারকান্তি চক্রবর্তীকে ঘুষি মেরেছেন তিনি। দলবল নিয়ে হস্টেলে ভাঙচুরও চালিয়েছেন। কিন্তু শুভর এলাকার অনেকেই পুলিশের এ হেন অভিযোগ মানতে নারাজ। কারণ, তাঁর ঘনিষ্ঠরাই জানাচ্ছেন, নরম স্বভাবের শুভ বরাবরই বাধ্য।
শুভর বাড়ি বনগাঁ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে। শুক্রবার টিভিতে হস্টেলে গোলমালের ঘটনা দেখানোর পরে ওই ওয়ার্ডের অনেকেরই চর্চার বিষয়, ডাকুর ছেলে শুভ। শনিবার শঙ্করবাবু অবশ্য দাবি করেন, ‘‘হস্টেলের ক্যান্টিনের কর্মীরাই শুভদের দু’দফায় মারেন। হস্টেলের বাইরে মারধর করা হয় শুভর বন্ধু প্রশান্তকে। তাঁকে কেন মারা হল, তা জানতে গেলে শুভদের ফের মারা হয়। হস্টেলের সুপারও নিগৃহীত হন ক্যান্টিনের কর্মীদের হাতেই। হস্টেলের ভিতর তো সিসিটিভি আছে। তার ফুটেজ প্রমাণ দেবে। আমিও চাই প্রকৃত দোষীদের শাস্তি হোক।’’
এই ঘটনায় পুলিশ যাঁদের গ্রেফতার করেছে, তাঁরা সকলেই শুভর ব্যবসার কর্মী। এমএলএ হস্টেলের কাছেই ১১ নম্বর চৌরঙ্গি লেনে বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচার অফিস রয়েছে শুভর।
শুভর পড়শিরা জানান, বনগাঁ হাইস্কুল থেকে ২০১১-এ প্রথম বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিনি। তার পরে কলকাতায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনায়ারিং কলেজে ভর্তি হন। প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, শুভর আচরণে যেটুকু পরিবর্তন এসেছে, তা ২০১০-এর পরে। ওই বছরই তাঁর মা পুর-চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।