দরজা-জানলা বন্ধ করে এক চিলতে ঘরেই জন্ম হয় শিশুপুত্রের। অভিযোগ, এর পরেই শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয় সেই সদ্যোজাতকে। প্লাস্টিক জড়িয়ে দেহটি লুকিয়ে রাখা হয় খাটের নীচের একটি বাক্সে।
হরিদেবপুরের দরগাতলা এলাকায় এক সদ্যোজাতের মৃতদেহ উদ্ধারের পরে মায়ের বিরুদ্ধে এ ভাবেই সন্তানকে ‘খুনের’ অভিযোগ উঠেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে সেই মা, বছর সাঁইত্রিশের মানোয়ারা বিবিকে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনা জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। মানোয়ারার বড় মেয়ে দাবি করেছে, তার চোখের সামনেই ঘটেছে গোটা ঘটনা। কিন্তু স্ত্রী কেন ‘খুন’ করলেন সন্তানকে, সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই বলে দাবি স্বামীর। চিকিৎসকদের অবশ্য বক্তব্য, সন্তান প্রসবের পরে অনেক মা-ই ভোগেন চরম অবসাদে। তার থেকে সন্তানকে খুন কিংবা আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয় অনেকের মধ্যে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দরগাতলায় কয়েক মাস আগে দু’টি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন শেখ হান্নান ও তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী মানোয়ারা। শহরের এক বইয়ের দোকানের কর্মী হান্নানের পরিবারে ছিল তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলেও। মানোয়ারা গ্রেফতার হওয়ার পরে ছ’বছরের ভাই আর সাড়ে তিন বছরের বোনকে নিয়ে পাশের পাড়ায় দিদার কাছে চলে গিয়েছে মানোয়ারার বড় মেয়ে, চোদ্দ বছরের রুকসানা। তার দাবি, পুরো ঘটনাটাই সে দেখেছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টে নাগাদ মানোয়ারার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ করে গরম জল, কাঁচি এনে নিজেই প্রসবের ব্যবস্থা করেন মানোয়ারা। তার পরে জন্ম দেন পুত্রসন্তানের। রুকসানা বলে, ‘‘কিছু ক্ষণ পরেই মা বলল, ওকে আর রাখবে না। মেরে ফেলতে হবে। এর পরেই নুন নিয়ে ওর মুখে ঢুকিয়ে দেয়। তার পরে গলা টিপে ধরে।’’ তবে মায়ের এই আচরণের কারণ জানা নেই বলেই দাবি মেয়ের।