Advertisement
E-Paper

Murder: বাড়ির সামনেই ছুরি হাতে রক্তাক্ত দেহ, সন্দেহ খুন

তদন্তকারীরা জানান, ঘাড় ও ডান হাত-সহ মৃতের শরীরের একাধিক জায়গায় কোপানোর চিহ্ন ছিল। এমনকি, তাঁর ডান হাতে ধরা ছিল একটি ছুরিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:২৮
পর্যবেক্ষণ: মুকেশ সাউয়ের বাড়িতে তদন্তে পুলিশ। মঙ্গলবার, বাঁশদ্রোণীর সোনালি পার্কে।

পর্যবেক্ষণ: মুকেশ সাউয়ের বাড়িতে তদন্তে পুলিশ। মঙ্গলবার, বাঁশদ্রোণীর সোনালি পার্কে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।

দেওয়ালে চাপ চাপ রক্ত। রক্তের দাগ ঘরের ভিতরেও। বাড়ির দরজার বাইরে হাঁটু মুড়ে পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর ডান হাতে ধরা একটি ধারালো ছুরি। রক্তে ভেসে যাচ্ছে আশপাশ। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির বাইরে ভয়াবহ এই দৃশ্য দেখে চমকে উঠেছিলেন সকলে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম মুকেশ সাউ (৪৩)। মঙ্গলবার সকাল ৭টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে বাঁশদ্রোণী থানা এলাকার সোনালি পার্কের কাছে। বাড়ির বাইরে প্রথমে মুকেশকে ওই ভাবে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁরই ভাই সঞ্জয় সাউ। তিনিই চিৎকার করে বাড়ির লোকজন ও প্রতিবেশীদের ডাকেন। প্রতিবেশীরা বাঁশদ্রোণী থানায় খবর দেন। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সঞ্জয়কে আটক করেছে। তাঁর বয়ানে অসঙ্গতি মিলেছে বলেই পুলিশ সূত্রের খবর। তাঁকে অবশ্য রাত পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি।

তদন্তকারীরা জানান, ঘাড় ও ডান হাত-সহ মৃতের শরীরের একাধিক জায়গায় কোপানোর চিহ্ন ছিল। এমনকি, তাঁর ডান হাতে ধরা ছিল একটি ছুরিও। তাতেও রক্তের দাগ মিলেছে। সেই কারণে মুকেশের মৃত্যু ঘিরে দানা বেঁধেছে রহস্য। এ দিন দুপুরেই ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দল। দীর্ঘ সময় ধরে ঘটনাস্থল পরীক্ষা করার পাশাপাশি বেশ কিছু নমুনাও সংগ্রহ করে তারা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরেছিলেন মুকেশ। তার পরেই এ দিন সকালে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তিনি নিজেই নিজের গলায় ছুরির কোপ মেরেছিলেন, না কি তাঁকে খুন করে হাতে ছুরি ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, খুনই করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। এ দিন দেহের ময়না-তদন্ত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সেই রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে, এটি খুন না আত্মহত্যা। আপাতত সব রকম সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। ভাইকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। মুকেশের সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

মুকেশ সাউ।

মুকেশ সাউ।

এ দিকে, ঘটনার খবর পেয়ে সকাল থেকেই মৃতের আত্মীয়-পরিজনেরা বাড়ির সামনে ভিড় করেন। সুমিত্রা সাউ নামে এক আত্মীয়া বলেন, ‘‘মুকেশের স্ত্রী বিহার থেকে ফোনে ঘটনার কথা জানায়। শুনেই চলে এসেছি। মুকেশের সঙ্গে তো কারও কোনও শক্রতা ছিল না। কেন এমন ঘটল, বুঝতে পারছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা দীপঙ্কর দাস বলেন, ‘‘দুই ভাই এলাকার কারও সঙ্গেই তেমন মিশতেন না। কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। ওঁদের নিজেদের মধ্যেও কোনও দিন গন্ডগোল হয়েছে বলে শোনা যায়নি।’’ এত বড় একটি ঘটনা ঘটে গেলেও আশপাশের কেউ চেঁচামেচি শোনেননি বলেই জানা গিয়েছে। এটাও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোনালি পার্কের ওই একতলা বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকতেন মুকেশ। সঞ্জয়ও সপরিবার সেই বাড়িতেই থাকেন। ফলস সিলিংয়ের ঠিকাদারির কাজ করতেন মুকেশ। দাদার সঙ্গে ওই কাজ করতেন সঞ্জয়ও। সঞ্জয়ের স্ত্রী সোনালি পার্কের বাড়িতে থাকলেও মুকেশের স্ত্রী ছটপুজোর আগে বিহারে বাবা-মায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন। দুই সন্তানকে নিয়ে বিহার থেকে এ দিনই রওনা দিয়েছেন তিনি।

Death
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy