Advertisement
২০ মে ২০২৪

রাতেও পথে পড়ে জঞ্জাল, অভিযানে পুরসভা ও পুলিশ

ছিঃ ছিঃ, এত্তা জঞ্জাল! রাতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায়, নালায়, ফুটপাথে পড়ে থাকা জঞ্জাল দেখে হতবাক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিকেলে ওই সব জায়গায় জঞ্জাল পরিষ্কার করার পরেও কেন সেখানে ফের জঞ্জাল?

রাতের শহরে সাফাই অভিযান। —নিজস্ব চিত্র।

রাতের শহরে সাফাই অভিযান। —নিজস্ব চিত্র।

অনুপ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

ছিঃ ছিঃ, এত্তা জঞ্জাল!

রাতে শহরের বিভিন্ন রাস্তায়, নালায়, ফুটপাথে পড়ে থাকা জঞ্জাল দেখে হতবাক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। বিকেলে ওই সব জায়গায় জঞ্জাল পরিষ্কার করার পরেও কেন সেখানে ফের জঞ্জাল? রাতে শহরে ঘোরার সময়েও তাঁর নজরে এসেছে, দোকান বন্ধ করার আগে যা কিছু জঞ্জাল থাকে সব রাস্তা, ফুটপাথে ফেলে দিয়ে যান দোকানদার-হকারেরা। তা দেখেশুনে বেজায় ক্ষুব্ধ শোভনবাবু। কলকাতা পুলিশের পদস্থ কর্তা এবং জঞ্জাল দফতরের মেয়র পারিষদকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, রাতে কলকাতায় অভিযান চালাবে পুলিশ এবং ওই দফতর। ১০ জানুয়ারি থেকে তা শুরু হয়েছে। আপাতত রাত আটটার পরে গড়িয়াহাট, কালীঘাট ও আলিপুরের বাজার-দোকানে ঘুরছে দলটি।

মেয়র বলেন, ‘‘সকাল-বিকেলে দু’বার সাফাইয়ের পরেও কেন থাকবে জঞ্জাল? এটা যাচাই করতেই দেখা যায় বেশ কিছু হকার, দোকানদার এ সব করছেন। এই কু-অভ্যাস বন্ধ করতে চায় পুর প্রশাসন। তাই রাতে অভিযান শুরু করা হয়েছে।’’ তবে সতর্ক করার পরেও হকার, দোকানদারেরা ওই কাজ চালিয়ে গেলে পুর প্রশাসন যে চুপ করে বসে থাকবে না, সে কথাও শুনিয়ে দিয়েছেন শোভনবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শহর সাফ রাখতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। এর পরেও আপনাদের হুঁশ না হলে অভিযুক্ত দোকানি বা হকারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা হবে। প্রয়োজনে লাইসেন্স নিয়েও টানাটানি হবে।’’

কী করছে ওই দল? পুরসভার জঞ্জাল দফতরের এক আধিকারিক জানান, আপাতত শহরের ওই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা বেছে নেওয়া হয়েছে। ঘুরে ঘুরে দেখা গিয়েছে, সকাল-বিকেল দু’বার সাফ করার পরেও অনেক জঞ্জাল জমে থাকে সেখানে। অথচ, প্রতিটি জায়গায় ডাস্টবিন রয়েছে। সেখানে ময়লা না ফেলে বাইরে ছড়িয়ে ফেলার প্রবণতাই বেশি। পুলিশ এবং পুরসভার কর্মীরা ওই সব এলাকার সব ব্যবসায়ীকে যত্রতত্র ময়লা না ফেলার আবেদন জানাচ্ছেন। মেয়র নিজেও বলছেন, কোথাও ময়লা ফেলার জায়গার অভাব থাকলে পুরসভা তা সরবরাহ করবে। সেটাও তাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার এর জন্য টাকাও বরাদ্দ করে দিয়েছে।

পুরসভা সূত্রের খবর, গত ১০ তারিখ থেকে রাত আটটার পরে পুরসভার তিনটি দল ঝাড়ু নিয়ে বেরোচ্ছে। গড়িয়াহাট বাজার, কালীঘাট বাজার, ফুটপাথে থাকা দোকান-রেস্তোরাঁ এবং চিড়িয়াখানার সামনে থাকা দোকান এবং হকারদেরও সতর্ক করা হয়েছে। ওই সব ব্যবসায়ীর সামনেই পড়ে থাকা জঞ্জাল সাফ করছে পুরসভার ওই দল।

মেয়র নিজেও ওই কাজ দেখতে ঘুরছেন একাধিক এলাকায়। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গোটা শহর জুড়েই এই কাজ করা হবে। ব্যবসায়ীদের প্রথম প্রথম সতর্ক করা হচ্ছে। পুরসভার দল তো অনন্তকাল ধরে এটা করবে না। তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে যে, শহরের রাস্তা, ফুটপাথ কিন্তু ডাস্টবিন নয়। ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার অভ্যাস করতেই হবে তাঁদের।’’

পুরসভার জঞ্জাল দফতরের আধিকারিক জানান, ২৪০ লিটারের ডাস্টবিন দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের পছন্দ মতো জায়গাতেই তা রাখা হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন পুরসভার এই অভিযান চলবে রাত ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত। আপাতত তিনটি জায়গায় মোট ৫০ জন পুরকর্মী কাজ করছেন। প্রতিটি এলাকায় স্থানীয় থানার ওসি-র নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনীও থাকছে। মাইকে ব্যবসায়ীদের বলে দেওয়া হচ্ছে, এখন পুরসভা সাফ করছে, তবে এ বার থেকে এলাকা সাফ রাখা দায়িত্ব তাঁদেরই। না রাখলে যে তার মাশুল গুণতে হবে, তা-ও জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Garbage Collection Kolkata Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE