Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি রোধে পুরসভার নির্দেশ রয়ে গিয়েছে খাতায়-কলমেই

বিজয়গড়ের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত অক্টোবরের শেষেও একাধিক বাড়িতে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল। অথচ, পুরসভার তেমন হেলদোল নেই। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন কলোনির বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ডেঙ্গি রুখতে বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলিয়েই কাজ সারছেন পুরকর্মীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৮ ০১:৫৯
অস্বাস্থ্যকর: বৃষ্টির জল। বিজয়গড়ের বিভিন্ন এলাকার ছবিটা এখন এমনই। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

অস্বাস্থ্যকর: বৃষ্টির জল। বিজয়গড়ের বিভিন্ন এলাকার ছবিটা এখন এমনই। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

এ বছর ডেঙ্গি ঠেকাতে একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করেছে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভা সূত্রের খবর, সারা শহরের পাশাপাশি বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে টালিগঞ্জ, যাদবপুর-সহ দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশের উপরে। কারণ, গত বছর ১০, ১১ ও ১২ নম্বর বরোর অধীনস্থ ওয়ার্ডগুলি থেকেই সব চেয়ে বেশি ডেঙ্গি সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। একের পর এক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছিল। কিন্তু পুরসভার নির্দেশ কতটা বাস্তবায়িত হচ্ছে, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। কারণ, শহরের একাধিক ওয়ার্ড ঘুরে একেবারে আলাদা চিত্র উঠে এসেছে।

১০, ১১ এবং ১২। গত বছর ডেঙ্গি-মানচিত্রের শীর্ষে থাকা এই তিনটি বরোর বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পুর প্রতিনিধিদের কোথাও নিয়মিত প্রচারে দেখা যায় না! কোথাও আবার লিফলেট বিলি করেই অভিযান শেষ করা হচ্ছে। এমনকি, পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি ঢুকে পরিস্থিতি পরিদর্শনও করেন না ঠিকমতো। যেমন বিজয়গড়ের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, গত অক্টোবরের শেষেও একাধিক বাড়িতে ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছিল। অথচ, পুরসভার তেমন হেলদোল নেই। ১০২ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন কলোনির বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ডেঙ্গি রুখতে বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলিয়েই কাজ সারছেন পুরকর্মীরা।

৯৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এলাকার বেশ কিছু পুকুরের আশপাশে জমা জল ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ডেঙ্গির মশা জন্মাচ্ছে। বাঘা যতীন এলাকার একটি স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁদের তরফেও পুকুর পরিষ্কারের জন্য একাধিক বার পুরসভার কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। তার পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। যার জেরে আতঙ্কে রয়েছেন এলাকাবাসী।

আবর্জনা পড়ে সর্বত্র।

প্রসঙ্গত, পুরসভার নিয়ম অনুযায়ী, ডেঙ্গি প্রতিরোধে বাড়ির ভিতরে ঢুকে নজরদারির পাশাপাশি দেখতে হবে প্রতিটি বাড়ির ছাদের অবস্থাও। গত বছর দেখা গিয়েছিল, বিভিন্ন বাড়ির ছাদে জল কিংবা নোংরা জমে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হয়ে রয়েছে। সেই পরিস্থিতি এড়াতেই এই নিয়ম। অথচ, ছাদে যাওয়া তো দূর, পুরকর্মীরা বাড়ির ভিতরেও ঢোকেন না বলে অভিযোগ ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। যদিও ১০ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘অনেক জায়গায় হয়তো পরিচয়পত্র না থাকার কারণে পুরকর্মীরা বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। কিন্তু সব জায়গাতেই তাঁরা পরিষ্কার করছেন।’’ ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান সুশান্তকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর অভাব রয়েছে। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী নেই। তবু তার মধ্যেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’’

এ বছর ৩ নম্বর বরো এলাকা ইতিমধ্যেই পুরসভার মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, ওই বরোর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৫০ জন বাসিন্দা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। স্থানীয় বাসিন্দা ভীষ্মদেব কর্মকার বলেন, ‘‘সারা বছর কাউন্সিলরের পাত্তা পাওয়া যায় না। ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর পাওয়ার পরেই বাড়ি বাড়ি তোলপা়ড় করছেন। ছাদে যাচ্ছেন, জল জমেছে কি না দেখছেন!’’ যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, ওই ওয়ার্ডের সেই কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারা বছরই জোরকদমে কাজ চলে। সব সময়ে সবটা তো হাতে থাকে না!’’ ওই বরোরই ৩২ এবং ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, উন্নয়নের নামে গাছ কেটে রাস্তা চকচকে হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গি সচেতনতার ন্যূনতম কাজও হয়নি। ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান অনিন্দ্য রাউত গাফিলতির কথা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েকটা ওয়ার্ডে কয়েক জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন ঠিকই, এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’

Garbage Dengue Municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy