E-Paper

বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে ফের ‘হেনস্থা’র শিকার পুরকর্মীরা

বিল্ডিং দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকালে দফতরের কর্মীরা বাড়িটির বেআইনি অংশ ভাঙতে গিয়ে দেখেন, প্রতিটি ফ্ল্যাটেই লোকজন রয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৫ ১০:০০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে আবারও বিক্ষোভের মুখে পড়লেন কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মী-ইঞ্জিনিয়ারেরা। তাঁদের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। পুরসভা সূত্রের খবর, বুধবার সকালে টালিগঞ্জের গোবিন্দ ব্যানার্জি লেনে একটি বহুতল আবাসনের বেআইনি অংশ ভাঙতে যান পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মীরা। ছ’তলা ওই বহুতলের দোতলা পর্যন্ত পুর অনুমোদন রয়েছে। তেতলা থেকে ছ’তলা পর্যন্ত তোলা হয়েছিল সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে।

বিল্ডিং দফতর সূত্রের খবর, এ দিন সকালে দফতরের কর্মীরা বাড়িটির বেআইনি অংশ ভাঙতে গিয়ে দেখেন, প্রতিটি ফ্ল্যাটেই লোকজন রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর অসুস্থ রোগীও আছেন। পুরকর্মীদের দেখে বহুতলটির বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সঙ্গে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও প্রথমে বহুতলে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় তাঁদের। পরে অনেক কষ্টে বহুতলের ছাদের একাংশ ভাঙেন পুরকর্মীরা। যদিও তেতলা থেকে ছ’তলা পর্যন্ত ফ্ল্যাটগুলির কতটা অংশ শেষমেশ ভাঙা যাবে, সে বিষয়ে সন্দিহান বিল্ডিং দফতর। এক ইঞ্জিনিয়ারের পর্যবেক্ষণ, ‘‘অতীতেও বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে এই ধরনের তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে বিল্ডিং দফতরের কর্মীদের। বহিরাগতদের ফ্ল্যাটে ঢুকিয়ে দাবি করা হয়, তাঁরা সেই ফ্ল্যাট কিনেছেন। এখন কোথায় যাবেন? কেউ বা আদালতে মামলা করে বাড়ি ভাঙা বন্ধ রেখেছেন।’’

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কলকাতা শহরে বেআইনি বাড়ি ভাঙার কাজ কি আদৌ ঠিক মতো হচ্ছে? বিরোধীদের অভিযোগ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে আসতে হয় পুরসভার বিল্ডিং দফতরের কর্মীদের। যদিও মেয়র বার বারই দাবি করেছেন, ‘‘বেআইনি নির্মাণের খবর পেলেই আমরা গিয়ে ভেঙে দিচ্ছি।’’ গত বছর পুজোর আগে শহরে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে একাধিক জায়গায় হেনস্থার শিকার হন পুরকর্মীরা। মাসকয়েক আগে ৮৯ নম্বর ওয়ার্ডে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে চরম হেনস্থা হতে হয় এক মহিলা ইঞ্জিনিয়ারকে। অভিযোগ, তাঁকে ঘিরে ধরে আটক রাখেন এলাকার বাসিন্দারা। শেষমেশ পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ দিন ওই ওয়ার্ডেরই গোবিন্দ ব্যানার্জি লেনে বেআইনি বহুতল ভাঙতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হন পুরকর্মীরা।

এই ঘটনায় অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, বহুতলটি ফাঁকা না করেই এ দিন বেআইনি অংশ ভাঙতে যাওয়া হল কেন? এ দিনের ঘটনায় হেনস্থা হওয়া পুরসভার অসন্তুষ্ট ইঞ্জিনিয়ারেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানাচ্ছেন, বেআইনি বাড়ি ভাঙার ক্ষেত্রে পুরসভার বিল্ডিং দফতরের বিস্তর প্রক্রিয়াগত বিচ্যুতি রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ দিনের ঘটনায় পুলিশ সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশকর্তাদের বক্তব্য ছিল, ‘‘বাড়ি কারও দখলে থাকলে আমরা তো তাঁদের জোর করে বার করে দিতে পারি না।’’

মোটের উপরে পরিস্থিতি যা, তাতে বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পুরো অংশ ভাঙা যাচ্ছে না। এ দিনও যে বেআইনি বহুতলটি ভাঙতে যাওয়া হয়েছিল, সেটির ছাদের কিছুটা অংশ ছাড়া বাকি কিছুই ভাঙা যায়নি। এর পরে কবে আবার ভাঙতে যাওয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত হয়নি। পুরসভার বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আবারও বাড়ি ভাঙার কাজ ত্বরান্বিত করতে সক্রিয় হব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

KMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy