Advertisement
০৮ মে ২০২৪

প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে রহস্য, চলছে মহিলার খোঁজ

চানঘরের পাশেই পড়ে আছে এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ। গলায় দড়ি বা কোনও ফিতের ফাঁসের দাগ স্পষ্ট। দেহটি যেখানে পড়ে ছিল, তার উপরে কাপড় মেলার দড়ি টানটান অবস্থাতেই টাঙানো। ঘরে বা বাইরে আর কোনও ছেঁড়া দড়ি বা ফিতে কিংবা দড়ির ফাঁস দেখা যাচ্ছে না।

মৃত শেখ মুশরফ আলি। — নিজস্ব চিত্র

মৃত শেখ মুশরফ আলি। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০২:০৪
Share: Save:

চানঘরের পাশেই পড়ে আছে এক প্রৌঢ়ের মৃতদেহ। গলায় দড়ি বা কোনও ফিতের ফাঁসের দাগ স্পষ্ট। দেহটি যেখানে পড়ে ছিল, তার উপরে কাপড় মেলার দড়ি টানটান অবস্থাতেই টাঙানো। ঘরে বা বাইরে আর কোনও ছেঁড়া দড়ি বা ফিতে কিংবা দড়ির ফাঁস দেখা যাচ্ছে না। মৃতের পেটে ধারালো অস্ত্রের কোপের একটি দাগ। ঘরের দরজা হাট করে খোলা।

মঙ্গলবার বিকেলে কড়েয়ার বেকবাগান রো-এর ওই ঘরে ঢুকে চমকে যায় পুলিশ। এই অস্বাভাবিক মৃত্যু তাদের ভাবিয়ে তুলেছে। ঠিক কী ভাবে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হল, ফাঁসে মৃত্যু হয়ে থাকলে কে কোথায় কী ভাবে লাগাল ফাঁস, ফাঁসের দড়িটিই বা কোথায়— এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। এটা আত্মহত্যা, নাকি খুন— তা নিয়ে গোয়েন্দারা ভীষণ ধন্দে পড়ে গিয়েছেন। এর পিছনে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কোনও জটিলতা আছে কি না, সেটাও যাচাই করা হচ্ছে। পুরো ঘটনায় সোনাগাছি এলাকার এক যৌনকর্মী জড়িত থাকতে পারেন বলে ইঙ্গিত পেয়েছেন তদন্তকারীরা।

পুলিশ জানায়, মৃতের নাম শেখ মুশরফ আলি। বয়স পঞ্চাশ বা কিছু বেশি। মুশরফ আদতে হুগলির শ্রীরামপুরের বাসিন্দা। সেখানে তাঁর স্ত্রী এবং তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছেন। বেকবাগান রো-এ রঙের দোকান আছে মুশরফের। দোকানেরই পিছনে দোতলায় একটি ঘরে থাকতেন তিনি। এ দিন দুপুরে এলাকার এক ব্যক্তি তাঁকে ডাকতে গিয়ে দেখেন, ঘরের দরজা খোলা। চানঘরের পাশে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন মুশরফ। তার পরেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

কড়েয়া থানার পুলিশ এবং লালবাজারের হোমিসাই়ড শাখার গোয়েন্দারা কুকুর নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মদ্যপান করতেন মুশরফ। গ্রামে স্ত্রী-সন্তান থাকলেও কয়েক বছর ধরে বেকবাগানে বছর পঁচিশের এক মহিলার সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্কে থাকতেন তিনি। ওই মহিলা সোনাগাছির যৌনকর্মী। বছরখানেক আগে মহিলাটির সঙ্গে মুশরফের সম্পর্কের কথা জানতে পারে তাঁর পরিবার। তার পরেই পারিবারিক ঝামেলা শুরু হয়। বাড়িতে কম যাতায়াত কমে যায় মুশরফের।

সোমবার রাতেও তাঁরা সোনাগাছির ওই মহিলাকে মুশরফের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে দেখেছেন বলে এলাকার লোকজন পুলিশকে জানান। তার পর থেকেই তিনি নিখোঁজ। ওই মহিলার নাগাল পেতে স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর স্কেচ আঁকাচ্ছে পুলিশ। মৃত্যুরহস্য ভেদ করতে মুশরফের স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গেও কথা বলবেন গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police deceased Body mystical death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE