সম্প্রতি শহরে এসে পৌঁছেছে মেট্রোর এই রেকটি। নিজস্ব চিত্র
অপেক্ষা করে কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময়। অবশেষে যাত্রী পরিবহণে নামতে চলেছে চেন্নাই থেকে আসা কলকাতা মেট্রোর এসি রেক।
মেট্রোকর্তাদের দাবি, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা মিটে যাওয়ার পরে রেল বোর্ডের প্রয়োজনীয় সম্মতি তাঁদের হাতে এসে পৌঁছেছে। চলতি মাসেই প্রথম রেকটিকে যাত্রী নিয়ে নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষের মধ্যে চলাচল করতে দেখা যাবে। ধাপে ধাপে বাকি রেকগুলিকেও নামানো হবে যাত্রী পরিবহণে।
মেট্রো সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের জুলাই মাসের পর থেকে এখনও পর্যন্ত পাঁচটি এসি রেক চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আইসিএফ) থেকে এসেছে। পঞ্চম রেকটি কলকাতায় পৌঁছেছে গত সপ্তাহের শেষ দিকে। বাকি চারটি রেক অবশ্য আগেই এসে গিয়েছে। পাঁচটির মধ্যে প্রথম রেকটি প্রোটোটাইপ। ওই রেকটির মহড়া-দৌড়ের সময়ে একাধিক সমস্যা নজরে আসায় দীর্ঘদিন বাকি রেকগুলিও ব্যবহার করা যায়নি।
মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাই থেকে আসা রেকগুলিতে এসি এবং ছাদ থেকে জল পড়ার মতো সমস্যার পাশাপাশি চাকার কনিক্যাল স্প্রিংয়ের মান নিয়েও অভিযোগ ছিল। লাইনে নেমে নোয়াপাড়া থেকে বেলগাছিয়ার মধ্যে বাঁক ঘোরার সময়েও ওই রেকে সমস্যা দেখা দিয়েছিল । ট্রেনের মোটর এবং অন্যান্য বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি থেকে বেরিয়ে আসা তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণের পরিমাণও ছিল নির্দিষ্ট সীমার থেকে বেশি। প্রসঙ্গত, এই বিকিরণ বেশি হলে তা সিগন্যালিং ব্যবস্থায় গোলমাল সৃষ্টি করে। প্রথম রেকটির ওই সমস্ত ত্রুটি মেরামত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বছর তিন আগে, ২০১৬-র জুলাইয়ে চেন্নাই থেকে প্রথম রেকটি এসে পৌঁছয় কলকাতায়। অল্প সময়ের ব্যবধানে আসে দ্বিতীয়টি। মেট্রোর একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই দু’টি রেক প্রায় এক রকম। পরের তিনটি রেকে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত বদল ঘটানো হয়েছে। ওই রেকগুলি তুলনায় কিছুটা আধুনিক এবং কলকাতা মেট্রোর নিজস্ব ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সূত্রের খবর, ওই তিনটি রেকের প্রতিটি কামরায় সিসি ক্যামেরা, স্মোক অ্যালার্ম এবং টক ব্যাকের মতো সুবিধা রয়েছে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, প্রথম রেকটি এক বার চলা শুরু করলে বাকি রেকগুলিকে পরিষেবায় নামানোর ক্ষেত্রে তত সমস্যা হবে না।
বর্তমানে চালু ১৩টি এসি রেকের পাশাপাশি চেন্নাই থেকে আসা প্রথম দু’টি এসি রেকেও ক্যামেরা এবং অন্যান্য আধুনিক ব্যবস্থা যোগ করতে চান মেট্রোকর্তারা। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মোট ১৫টি এসি রেকে ক্যামেরা, স্মোক অ্যালার্ম-সহ আধুনিক যন্ত্র বসানোর জন্য নির্দিষ্ট প্রস্তাব রেল বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় সম্মতি পেলেই ওই কাজ শুরু হবে। সূত্রের খবর, ওই রেকগুলির প্রতিটি কামরায় চারটি করে ক্যামেরা বসবে।
গত ডিসেম্বরে ময়দান স্টেশনে একটি এসি রেকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে রেলওয়ে সেফটি কমিশনার তদন্ত করে একাধিক সুপারিশ করেছিলেন। তার ভিত্তিতেই মোট ১৫টি এসি রেকে নতুন ব্যবস্থা যোগ করতে চান মেট্রো কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের চিফ অপারেশন্স ম্যানেজার সাত্যকি নাথ বলেন, ‘‘চলতি মাসেই চেন্নাই থেকে আসা আইসিএফ রেকটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy