ভোলানাথ পাল
রেললাইনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে এক মহিলা ছুটে আসা ট্রেনের দিকে তাকিয়ে আছেন, দৃশ্যটা দেখে যা বোঝার বুঝে গিয়েছিলেন স্টেশনের এক সংবাদপত্র বিক্রেতা। তখন সবে স্টেশনে ঢুকছে বি বা দী বাগ-গামী ট্রেন। আগুপিছু না ভেবে মহিলাকে বাঁচাতে প্রাণপণ দৌড় লাগান তিনি। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার ঠিক আগের মুহূর্তে ওই মহিলাকে নিয়ে লাইনের ধারে ছিটকে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর কলকাতার আহিরীটোলা স্টেশনে। এ দিকে, সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও শেষ মুহূর্তে তাঁকে বাঁচানোয় ওই মহিলার সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ে সংবাদপত্র বিক্রেতা ওই যুবকের উপরে। উল্টে ওই যুবককেই তিনি মারধর করতে শুরু করেন। তা দেখে ছুটে আসেন অন্য যাত্রীরা। তাঁরাই ওই মহিলার হাত থেকে যুবককে উদ্ধার করেন। যাত্রীদের সাহায্যেই ওই মহিলাকে জিআরপি-র হাতে তুলে দেন ওই যুবক।
জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই মহিলার বাড়ি শ্যামপুকুর থানা এলাকায়। তাঁর প্রাণ বাঁচিয়েছেন যে যুবক, তাঁর নাম ভোলানাথ পাল। তিনি বড়তলা থানা এলাকার নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের বাসিন্দা।
কেন আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন ওই মহিলা? তিনি রেল পুলিশকে জানিয়েছেন, পারিবারিক অশান্তির কারণেই তিনি আত্মহত্যা করতে এসেছিলেন। ওই মহিলার আরও অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির অশান্তি নিয়ে তিনি শ্যামপুকুর থানায় অভিযোগও জানিয়েছিলেন। কিন্তু বহু দিন কেটে গেলেও তার সুরাহা হয়নি। সেই কারণে তিনি অবসাদেও ভুগছিলেন। এ দিন সকালে বাজারে যাওয়ার নাম করে বেরিয়ে তিনি আহিরীটোলা স্টেশনে চলে আসেন। মহিলার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে বলে জিআরপি সূত্রে জানা গিয়েছে।
ওই মহিলার প্রাণ বাঁচালেন যিনি, কী বলছেন সেই যুবক? ভোলানাথ বলেন, ‘‘এর আগেও আমি দু’-এক জনের প্রাণ বাঁচিয়েছি। আবার অনেককে বাঁচাতেও পারিনি। এ দিন ওই মহিলাকে ঠিক সময়ে দেখতে পেয়ে যে বাঁচাতে পেরেছি, সেটা ভেবেই ভাল লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy