Advertisement
E-Paper

প্রতিশ্রুতিই সার, এলাকায় অধরা উন্নয়ন

পুরসভার নকশায় রাস্তা আছে। আছে নিকাশি নালাও। কিন্তু নকশার সঙ্গে বাস্তব মিলিয়ে দেখতে গেলে কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানচিত্রে যেখানে রাস্তা আসলে তা হোগলা পাতার জঙ্গল, কচুবন আর ডোবা। বাঁশের সাঁকো, বাড়ির পাঁচিলই রাস্তা। নিকাশি নালা উধাও। ফলে এই গরমেও জল জমে থাকে। সেই জল পেরিয়েই বাসিন্দাদের নিত্য যাতায়াত। কোনও গ্রামগঞ্জ নয়, অঞ্চলটি উত্তর দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মহানগর বাইলেন, ধানমাঠ। প্রতি বারই ভোটের সময়ে প্রতিশ্রুতি মেলে। তার পরে যে-কে-সেই। ফলে ক্ষোভ জমছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৫
এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: সুদীপ ঘোষ।

পুরসভার নকশায় রাস্তা আছে। আছে নিকাশি নালাও। কিন্তু নকশার সঙ্গে বাস্তব মিলিয়ে দেখতে গেলে কিছুই খুঁজে পাওয়া যাবে না। মানচিত্রে যেখানে রাস্তা আসলে তা হোগলা পাতার জঙ্গল, কচুবন আর ডোবা। বাঁশের সাঁকো, বাড়ির পাঁচিলই রাস্তা। নিকাশি নালা উধাও। ফলে এই গরমেও জল জমে থাকে। সেই জল পেরিয়েই বাসিন্দাদের নিত্য যাতায়াত। কোনও গ্রামগঞ্জ নয়, অঞ্চলটি উত্তর দমদম পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত মহানগর বাইলেন, ধানমাঠ। প্রতি বারই ভোটের সময়ে প্রতিশ্রুতি মেলে। তার পরে যে-কে-সেই। ফলে ক্ষোভ জমছে বাসিন্দাদের মধ্যে।

মহানগর বাইলেনের প্রভাকর সাহানির বাড়িতে যেতে গেলে প্রথমে অন্য একটি বাড়ির পাঁচিলের উপর দিয়ে রীতিমতো ব্যালেন্স করে যেতে হবে। পাঁচিল শেষে হলে বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো। সেই সাঁকো পেরিয়ে পৌঁছানো যাবে প্রভাকরবাবুর বাড়িতে। প্রভাকরবাবু বলেন, ‘‘যাঁদের বাড়ির পাঁচিলের উপর দিয়ে হেঁটে আসি তাঁরা আমাদের দয়া করে ওই পাঁচিল ব্যবহার করতে দেন। যদি না দিতেন তা হলে বন্দি হয়ে থাকতাম।’’ এই বাড়িতে এক সাত বছরের শিশুও রয়েছে। তাঁকেও ওই একই কসরত করে স্কুলে যেতে হয়। আপনাদের আসল রাস্তা কোথায়? প্রভাকরবাবু আঙুল তুলে দেখান কিছুটা দূরেই বিদ্যুৎ স্তম্ভের দিকে। সেখান দিয়েই পুরসভার নকশা অনুযায়ী রাস্তা হওয়ার কথা। সেখানে এখনও হোগলা পাতার বন। সাপ, পোকামাকড় ঘুরে বেড়ায়। অনেক সময় বাড়িতে সাপও ঢুকে পড়ে।

প্রভাকরবাবুর বাড়ির পরে সবিতা বিশ্বাস, তপন সিংহরায়দের বাড়ির মতো বেশ কয়েকটি বাড়ি রয়েছে। কারও বাড়ি যেতে গেলে অন্যের বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্কের উপর দিয়ে যেতে হয়, কারও বা বেশ কয়েকটি পাঁচিল ডিঙাতে হয়। বাসিন্দারা জানান, পুরসভার প্ল্যানে রাস্তা দেখেই তাঁরা ওই এলাকায় বাড়ি করেছিলেন। কিন্তু তা যে ২৫ বছরেও বাস্তবায়িত হবে না তা ভাবতে পারেননি।

বাড়ি করার সময় কল্পনা মিত্রের পরিবার ভাবতেও পারেননি সারা বছর ধরে বাড়ির সামনে জল জমে থাকবে। কল্পনাদেবীর পাশের বাড়িতে ঢুকতে গেলে শুধু জলই নয় জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হবে। বাড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গামবুট না পরে তাঁদের বাড়ি আসা বিপজ্জনক। কল্পনাদেবীরা জানান, বাড়ি যখন করেছিলেন তখন তাঁরা জানতেন জায়গাটা একটু নিচু। তা বলে সারা বছর জল জমে থাকবে সেটা তাঁরা ভাবতে পারেননি। অন্য এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘নিচু জমিতে কী কলকাতায় কেউ বাড়ি করে না? তা বলে সারা বছর জল কোথায় জমে থাকে?’’ বাসিন্দাদের দাবি, রাস্তা পাকা করার আগে নিকাশি নালা করা হোক।

গত ৪০ বছর ধরে এখানে রয়েছে বামফ্রন্ট পরিচালিত পুরসভা। উন্নয়নের ছিঁটেফোঁটাও হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘কাজ হয়নি এই অভিযোগ ঠিক নয়। পুরসভার বিভিন্ন লেন, বাইলেনের অনেকটা অংশই কংক্রিট হয়েছে। নিকাশি নালার কাজ প্রায় শেষ। তবে কিছুটা কাজ বাকি রয়েছে।’’ তবে ওই এলাকায় ভোট চাইতে এসে রীতিমতো অপ্রস্তুত তৃণমূল প্রার্থী সৌমেন দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘মহানগর বাইলেনের বাসিন্দাদের অবস্থা সত্যিই দুর্বিষহ। এখানে মানুষ কী ভাবে থাকেন তা না দেখলে বিশ্বাস হয় না। প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ভোটে জিতে এলে এই এলাকায় আগে রাস্তা ও নিকাশি নালা হবে।’’

North DumDum municipality municipal election Trinamool CPM BJP Aryabhatta Khan
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy