Advertisement
E-Paper

অনিয়মের অটোয় নিয়মের ঘণ্টা বাঁধবে কে

তাঁর নির্দেশে তদানীন্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র একটি অটো কমিটিও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ওই কমিটির জমা দেওয়া রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি এখনও।

অত্রি মিত্র

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৭:২০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে বলেছিলেন, ছ’মাসের মধ্যে নিয়মে বাঁধবেন অটোকে। তাঁর নির্দেশে তদানীন্তন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র একটি অটো কমিটিও তৈরি করেছিলেন। কিন্তু ওই কমিটির জমা দেওয়া রিপোর্ট প্রকাশ হয়নি এখনও।

২০১৬ সালে শুভেন্দু অধিকারী পরিবহণমন্ত্রী হওয়ার পরে ফের তৈরি হয় অটো সংক্রান্ত একটি উচ্চস্তরীয় কমিটি। ঠিক হয়, ওই কমিটি অটো-নীতি তৈরি করবে। সেই মতো রিপোর্টের খসড়াও প্রস্তুত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তা প্রকাশ করা নিয়েও টালবাহানা শুরু করে পরিবহণ দফতর।

সরকারের কড়া না হতে পারার সুযোগ নিয়ে অটো চলে গিয়েছে ফের নৈরাজ্যের দেশে। মন্ত্রী হুঙ্কার দিলে কলকাতা ও শহরতলির পুলিশ কিছু দিন অভিযানে নামে। তখন শৃঙ্খলিত ভাবে চলে অটো। তার মাসখানেক পেরোতে না পেরোতেই আবার যে কে সেই।

পুজোর আগে অটো নিয়ে কড়াকড়ি করেছিল কলকাতা পুলিশ। পুজোর মরসুম কাটতেই অটোয় শুরু হয়েছে ইচ্ছেমতো ভাড়া নেওয়ার সঙ্গে অতিরিক্ত যাত্রী তোলার প্রবণতাও।

যেমন কাদাপাড়া-মেছুয়া রুটে দিনভরই অটোচালকেরা পাঁচ জন করে যাত্রী তুলছেন। কোনও কিছুর তোয়াক্কা না করেই। একই অবস্থা উল্টোডাঙা-ফুলবাগান রুটের। উল্টোডাঙা থেকে বাগুইআটি, এয়ারপোর্ট রুটে আবার গোলাঘাটা পেরোলেই পাঁচ জন যাত্রী নেওয়ার ছাড়পত্র পেয়ে যান অটোচালকেরা।

একই অবস্থা দক্ষিণ কলকাতায়। পার্ক সার্কাস থেকে চাঁদনি চক পর্যন্ত রুটে যেমন দিনভরই পাঁচ জন করে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে। গড়িয়া-গোলপার্ক, যাদবপুর-তারাতলার মতো ব্যস্ত রুটগুলিতে আবার রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনিয়ম শুরু হয়ে যায়। প্রথমে পাঁচ জন, কখনও কখনও ছ’জন যাত্রীও তুলছেন অটোচালকেরা।

তার পরে কাটা রুটের দৌরাত্ম্য তো আছেই। কখনও কখনও কোনও রুট ছ’কিলোমিটার হলে, সেটা ছ’টা রুটেও ভেঙে ফেলছেন অটো চালকেরা, এমন নিদর্শনও রয়েছে। যেমন, টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো-গড়িয়া রুটে এত দিন রানিকুঠি, বাঁশদ্রোণী এই দুই ভাগে কাটা রুট চলত। এখন, টালিগঞ্জ থেকে মালঞ্চ অবধি যাত্রী পৌঁছে ফের টালিগঞ্জের দিকে গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছেন অটো চালকেরা।

এ সব অনিয়ম কী ভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে অবশ্য দিশা দেখাতে পারছেন না সরকারি অফিসার এবং শাসক দলের নেতা— কোনও পক্ষই। সরকারি অফিসারদের বক্তব্য, ‘‘নিয়ম আমরা করেছি। তা মানা হচ্ছে কি না, তা দেখার দায়িত্ব পুলিশের।’’ পুলিশ কর্তাদের দাবি, ‘‘সব জায়গাতেই শাসক দলের ইউনিয়ন। ধরলেই ইউনিয়নের নেতারা চালকদের ছাড়াতে থানায় চলে আসেন।’’ আর বিরোধী দল সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটু-র নেতারা বলছেন, ‘‘অটো ইউনিয়ন এখন চালকদের উপরে নির্ভরশীল। তাঁদের থেকে ইউনিয়নের নেতারা টাকা তুলছেন। অটো চালকদের দিয়েই দলীয় সমাবেশে লোক জড়ো করছেন। এর জেরে তাঁদের শৃঙ্খলিত করার চেষ্টা নেই, ইচ্ছেও নেই।’’

এই অভিযোগ অবশ্য মানছেন না শাসক দলের নেতারা। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘আমরা নিয়ম না মানলে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছি। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা না নিলে, তার দায় আমরা নেব কেন!’’

Auto Mamata Banerjee Suvendu Adhikari অটো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy