মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে অবশেষে দক্ষিণেশ্বরে ‘স্কাইওয়াক’ প্রকল্পের প্রথম ধাপের কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। কিন্তু প্রথম থেকেই সেই কাজের বিরোধিতা করেও কোনও ফল না মেলায় অবশেষে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দক্ষিণেশ্বরের ব্যবসায়ীরা। যদিও প্রশাসন সূত্রে ব্যাখ্যা, আদালত স্কাইওয়াক প্রকল্পের কাজের উপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। তবে দোকানদারেরা যাই করুন না কেন, স্কাই ওয়াকের কাজ হবে বলে বৃহস্পতিবারও দাবি করেছেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের সামনের রানি রাসমণি রোডে যানজট কমাতেই আধুনিক প্রযুক্তির এই স্কাইওয়াক তৈরির পরিকল্পনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাস্তার দু’পাশে থাকা দোকানদারেরা প্রতিবাদ জানান। ফলে প্রকল্পের শিলান্যাস হয়ে গেলেও দীর্ঘদিন কাজই শুরু করা
যায়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রী-আমলাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক করেন। প্রকল্প-এলাকা ঘুরে দেখেন স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা। এর পরেই প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পিছনের রাস্তায় দোকানদারদের জন্য বিকল্প অস্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থার কাজ শুরু হয়।
ওই কাজের বিরোধিতা করে কলকাতা আদালতে মামলা দায়ের করে রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতি। সংগঠনের তরফে সম্পাদক অজিত সিংহ বলেন, ‘‘বুধবার বিচারপতি আমাদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্রের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে বলেন। তবে কোনও পক্ষেরই যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেটিও দেখতে বলেছে আদালত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা কাজের উপর স্থগিতাদেশ চাইলেও তা এখনও দেয়নি আদালত। তবে আগামী ৩০ নভেম্বর পরবর্তী শুনানি রয়েছে।’’ রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘আদালত কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। উল্টে বলেছে, ভাল কাজ আটকানো যাবে না। তাই ওঁদের আইনজীবী বিকাশবাবুকে অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে প্রকল্প ও পুনর্বাসনের বিষয়টি জেনে নিতে বলেছেন বিচারপতি।’’ পুরমন্ত্রীর আরও দাবি, ‘‘আমরা তো কোনও দোকানদারকে উচ্ছেদ করছি না। ওঁদের পুনর্বাসনের সুবন্দোবস্ত করেছি। অহেতুক ওঁরা এ সব করছেন।’’
এ দিন দোকানদারেরা সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির নেতাদের নিয়ে একটি সভা করেন। অজিতবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘বেলুড় মঠে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা করা হয়েছে মন্দিরের বাইরে। কিন্তু দক্ষিণেশ্বরের ক্ষেত্রে সেটা উল্টো। মন্দিরের বাইরে গাড়ি পার্কিং করলেই আর রাস্তার যানজট থাকে না। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত। কিন্তু সব ক্ষেত্রেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি পরিষদের সম্পাদক কুশল চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে বলা হচ্ছে।’’ এ বিষয়ে ফিরহাদ বলেন, ‘‘প্রশাসন তার নিজের সিদ্ধান্তেই চলবে। মুখ্যমন্ত্রী দোকানদারদেরও আলোচনায় ডেকেছিলেন। ওঁরা আসেননি। আমিও ওঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তার পরেও বাধা দিচ্ছেন।’’ কুশলবাবুর দাবি, ‘‘রাজ্য প্রশাসন আমাকে স্কাইওয়াক কমিটির সদস্য করেছেন। তাই প্রশাসন যা বলছে, আমি সেটুকুই করছি মাত্র। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তাই এর বেশি কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy