E-Paper

জলাধার তৈরির জন্য কাটা পড়ল পার্কের গাছ, ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা

কারও মতামতের তোয়াক্কা না করেই গাছ কাটতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। তাতে স্থানীয় এক প্রৌঢ়কে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩২
কেটে ফেলা হয়েছে শিশু উদ্যানের গাছ। বুধবার, কসবা এলাকার জগন্নাথ ঘোষ রোডে।

কেটে ফেলা হয়েছে শিশু উদ্যানের গাছ। বুধবার, কসবা এলাকার জগন্নাথ ঘোষ রোডে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।

শিশুদের উদ্যানে গাছ কাটা নিয়ে উত্তেজনা ছড়াল কসবার জগন্নাথ ঘোষ রোডে। পানীয় জলের জলাধার তৈরির কাজের জন্য বুধবার সকালে ২২ নম্বর জগন্নাথ ঘোষ রোডের শিশু-উদ্যানে একটি পুরনো শিরিষ গাছ সম্পূর্ণ এবং একটি বটগাছের বেশ খানিকটা অংশ কেটে ফেলা হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলকাতা পুরসভার নাম করে গাছ কাটতে আসা হয়েছিল। কারও মতামতের তোয়াক্কা না করেই গাছ কাটতে দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেন। তাতে স্থানীয় এক প্রৌঢ়কে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ বাসিন্দাদের।

কলকাতা পুরসভার ৯১ নম্বর ওয়ার্ডে রয়েছে ওই জায়গাটি। বাসিন্দারা জানান, অসামাজিক কাজ এড়াতে আশির দশকে ওই উদ্যানটি তৈরি করা হয়। সেখানে একটি ঘরে বর্তমানে অঙ্গনওয়াড়ির পড়ুয়ারা লেখাপড়া করে। তারাই মূলত ওই পার্কটিতে খেলাধুলো করে বলে জানান বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এলাকায় পানীয় জলের অভাব রয়েছে। তার জন্য একটি জলাধার কলকাতা পুরসভা তৈরি করবে বলে জানিয়েছিল। সেই প্রস্তাবিত জলাধারের জন্য স্থানীয় বৈকুণ্ঠ ঘোষ রোডে শচীন সেন পার্কে জায়গা নির্ধারিত করা রয়েছে। তা সত্ত্বেও ওই শিশু উদ্যানের গাছগুলি কেটে সেখানে জলাধার তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে এ দিন অভিযোগ তোলেন বাসিন্দারা।

জলাধার তৈরির জন্য যে গাছ কাটা হবে, তা অবশ্য স্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল পুর প্রতিনিধি বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘শচীন সেন পার্কে রায়তি জমির জন্য সেখানে কলকাতা পুরসভা হাত দিতে পারেনি। ওই শিশু উদ্যানে জলাধার তৈরির বিষয়টি পুরসভার বোর্ড থেকে অনুমোদন করা হয়েছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের একটি অংশ তাঁদের বস্তি ফেডারেশনের অফিস ভাঙা পড়ার ভয়ে জলাধারের কাজ আটকাতে চাইছেন। এলাকায় পানীয় জলের দাবি অনেক দিন ধরেই করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।’’ পুর প্রতিনিধির দাবি, ওই এলাকায় গভীর নলকূপ থেকে জল দেওয়া হয়। তার বদলে ভূপৃষ্ঠের জল বা পানীয় জলের তিনটি জলাধার তৈরি করা হবে। একটি জলাধার ওই শিশু উদ্যানে তৈরি হওয়ার কথা।

এ দিন ওই জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, একটি আস্ত শিরিষ গাছ কাটা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একটি বটগাছেরও বেশ খানিকটা অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। বাসিন্দারা জানান, শিরিষ গাছটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো। এ দিন সকালে গাছ কাটার শব্দ পেয়ে লোকজন ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। গাছ যাঁরা কাটছিলেন, তাঁদের বাধা দেন স্থানীয় মানুষ। তাতে নাগিনা প্রসাদ নামে এক প্রৌঢ়কে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। নাগিনা বলেন, ‘‘গাছ কাটার জন্য বাসিন্দাদের অনুমতি কিংবা মতামত নেওয়া হয়নি। আমি গাছ কাটায় বাধা দেওয়ায় আমাকে ফেলে মারধর করেন কয়েক জন। ঘুষি মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়া হয়। আমার বাইপাস সার্জারি হয়েছে। আমার বুকে লাথি মারা হয়।’’

এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পুর প্রতিনিধি বৈশ্বানর বলেন, ‘‘নাগিনার সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। নাগিনা এলাকার পুরনো দুষ্কৃতী। এক সময়ে বিরোধী দলের হয়ে সক্রিয় ছিল। জলাধার তৈরির কাজ আটকে সরকারকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। সেটা বরদাস্ত করা হবে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Trees Protest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy