—প্রতীকী ছবি।
কালীপুজোর রাত। রাস্তায় অন্য দিনের মতো গাড়ির চাপ নেই। দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েক জন পুলিশকর্মী। হেলমেটহীন অবস্থায় তিন জনকে দেখে একটি মোটরবাইক আটকালেন ওই পুলিশকর্মীরা। দেখতে চাইলেন মোটরবাইকের নথি। অভিযোগ, নথি দেখানোর বদলে রাস্তার মাঝখানে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে বচসা শুরু করে ওই মোটরবাইক আরোহীরা। তারা ডেকে নেয় নিজেদের আরও সঙ্গীদের। অভিযোগ, বচসার মাঝেই ওই মোটরবাইকের চালক এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে ধাক্কা মারে এবং হেনস্থা করা শুরু করে। তাতে মাটিতে পড়ে জখম হন ওই পুলিশকর্মী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশবাহিনী। বাকিরা পালিয়ে গেলেও আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় মোটরবাইকের চালককে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকার বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে। জখম ট্র্যাফিক কনস্টেবলের নাম সুমন বিশ্বাস। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ধৃত চালকের নাম আজহার আলি। তাঁর বাড়ি বৌবাজার থানা এলাকায়।
কালীপুজোর রাতে পথেঘাটে মোটরবাইকের দৌরাত্ম্য কমানোর বিষয়ে নজর দিতে নির্দেশ দিয়েছিল লালবাজার। সেই মতো ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে মঙ্গলবার রাত থেকে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় শুরু হয় বেপরোয়া এবং মত্ত মোটরবাইক আরোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা শুরু হয়। লালবাজারের ওই মৌখিক নির্দেশের প্রেক্ষিতে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে হেড কোয়ার্টার ট্র্যাফিক গার্ডের তরফে শুরু হয় বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান।
পুলিশ জানিয়েছে, রাত দশটা নাগাদ বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে ডিউটি করছিলেন হেড কোয়ার্টার ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট পলাশ নট্ট এবং কনস্টেবল সুমন বিশ্বাস। তাঁরা দেখতে পান, ধর্মতলার দিক থেকে দ্রুতগতিতে আসছে একটি মোটরবাইক। তিন আরোহীর করাও মাথায় নেই হেলমেট। সুমনবাবু মোটরবাইকটি থামিয়ে গাড়ির নথি দেখতে চান। অভিযোগ, মোটরবাইকের চালক আজহার প্রশ্ন করে, এলাকার বাসিন্দা হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কেন তার কাছে নথি দেখতে চাইছে। অভিযোগ, এর পরে আজহার রাস্তার মাঝে মোটরবাইকটি দাঁড় করিয়ে নিজের বন্ধুদের ডেকে আনে।
এক তদন্তকারী অফিসার জানান, কয়েকটি মোটরবাইকে চেপে আজহারের অন্য বন্ধুরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে তর্ক জুড়ে দেন। হেনস্থাও করা হয় পুলিশকর্মীদের। সুমনবাবুকে ধাক্কা মেরে রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যে আজহারকে আটক করেন পলাশবাবু। পুলিশকর্মীদের হেনস্থা করা হচ্ছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশ। তারা আজহারকে গ্রেফতার করলেও পালিয়ে যায় বাকিরা।
লালবাজার সূত্রে খবর, কালীপুজোর রাতেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় ৫০ জনেরও বেশি মত্ত চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আরও কয়েক দিন মত্ত চালক এবং বেপরোয়া মোটরবাইকের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে বলা হয়েছে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ডকে। পুলিশের দাবি, এ ভাবে রাস্তায় বেপরোয়া বাইক চালানোয় যেমন লাগাম টানা যাবে, তেমনই অন্য অপরাধও আটকানো যাবে। দুর্গাপুজোর সময়েও বেপরোয়া মোটরবাইকের তাণ্ডব আটকাতে অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy