Advertisement
E-Paper

ডিসি-র অফিসের সামনেই কনস্টেবলকে ছুরি

টিফিন খেতে অফিস থেকে সবে বেরিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল। হঠাৎই সামনে হাজির এক যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পকেট থেকে ছুরি বার করে সে সটান ঢুকিয়ে দিল ওই পুলিশকর্মীর তলপেটে! বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে এস এন ব্যানার্জি রোডে, ডিসি (সেন্ট্রাল)-র অফিসের সামনে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:১৬

টিফিন খেতে অফিস থেকে সবে বেরিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবল। হঠাৎই সামনে হাজির এক যুবক। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পকেট থেকে ছুরি বার করে সে সটান ঢুকিয়ে দিল ওই পুলিশকর্মীর তলপেটে! বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে এস এন ব্যানার্জি রোডে, ডিসি (সেন্ট্রাল)-র অফিসের সামনে। অফিসের আশপাশে থাকা কয়েক জন পুলিশকর্মী আক্রমণকারী যুবককে জাপটে ধরেন। পরে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ছুরির আঘাতে তরুণ দত্ত নামে ওই কনস্টেবলের ক্ষুদ্রান্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঘটনার পরেই একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সন্ধ্যায় সেখানেই তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তরুণবাবুর অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সঙ্কট কাটেনি। এই ঘটনায় ধৃত মহম্মদ আলিম ওরফে রাজা নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তরুণবাবুর সঙ্গে আলিমের পরিচয় নেই। হঠাৎ এসে সে কেন তরুণবাবুকে ছুরি মারল, রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট হয়নি। তবে তদন্তকারীদের একটি সূত্রের ব্যাখ্যা, পুলিশের উপরে কোনও গোপন রাগ থেকেই আলিম এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘তরুণকে ছুরি মারার পরে আলিম ভাবলেশহীন মুখে দাঁড়িয়ে ছিল।’’ সে মানসিক রোগে আক্রান্ত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে পুলিশ।

ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?

পুলিশ সূত্রের খবর, তরুণবাবুর বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার নওদাপাড়ায়। তিনি জোড়াসাঁকো থানায় কর্মরত। এ দিন সকালে থানা থেকে ডিসি-র অফিসে ডিউটি পড়েছিল তাঁর। দুপুর দুটো নাগাদ অফিস থেকে টিফিন সারতে বেরোন তরুণবাবু। গেটের মুখেই তাঁর তলপেটের বাঁ দিকে ছুরি চালিয়ে দেয় আলিম। যন্ত্রণায় লুটিয়ে পড়েন তরুণবাবু। তার পরেও অবশ্য আলিম পালায়নি। বরং ভাবলেশহীন মুখে সেখানেই দাঁড়িয়ে ছিল সে।

পুলিশ সূত্রের খবর, তরুণবাবু ছুরিকাহত হওয়ার সময়ে আরও কয়েক জন পুলিশকর্মী কাছেপিঠেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছেলেটি যাতে পালাতে না পারে, তার জন্য একটু দূরে ঘিরে দাঁড়ান তাঁরা। ইতিমধ্যে নিউ মার্কেট থানার পুলিশকর্মী অনুপকুমার মিত্র ধীরে ধীরে আলিমের কাছে এগিয়ে যান। মাথা ঠান্ডা করার জন্য তাকে বোঝান তিনি। আশ্বস্ত হয়ে আলিম ছুরি পকেটে ঢোকাতেই অনুপবাবু সপাটে চড় কষিয়ে জাপটে ধরেন তাকে। পরে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ আলিমকে ধরে নিয়ে যায়।

পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, আদতে পটনার বাসিন্দা আলিম সোদপুরে থাকে। বাবা মহম্মদ আলম সাব্রির সঙ্গে এজরা স্ট্রিটে মুটের কাজ করে সে। এ দিন সকালেই চাঁদনি চক থেকে ছুরিটি কেনে আলিম। তখন থেকেই নিউ মার্কেট চত্বরে ঘুরে বেড়াচ্ছিল সে। এর পরে দুপুরে ডিসি-র অফিসের সামনে পৌঁছে হঠাৎই তরুণবাবুর উপরে চড়াও হয় ওই যুবক।

তদন্তকারীরা জানান, আলিম কেন তরুণবাবুর উপরে হামলা করল, সেটাই বোঝা যাচ্ছে না। লাগাতার জেরায় নানা অসংলগ্ন কথা বলছে সে। পুলিশের দাবি, আলিম জানিয়েছে জেলে যেতে চেয়েই সে ছুরি মেরেছে। কিন্তু কেন সে জেলে যেতে চায়, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেনি। কখনও বা বলেছে, তার পুলিশের উপরে রাগ রয়েছে। তা মেটাতেই ছুরি মেরেছে। এ সব কথা শুনে পুলিশের একাংশ তাঁকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে করলেও আর এক অংশ তা মানতে নারাজ। তাঁদের বক্তব্য, আলিমের চলন-বলন কোনওটাই অস্বাভাবিক নয়। এক অফিসারের কথায়, ‘‘এ সব আজেবাজে কথা বলে ও কিছু লুকোতে চাইছে কি না, তা-ও বুঝতে পারছি না।’’ এ দিন থানায় আসেন আলিমের বাবা। কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেন তদন্তকারীরা।

constable DC office knife
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy