Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা, পাকড়াও

পুলিশ সূত্রে খবর, কুমিরছানার মতো একটি ফ্ল্যাটকে বারবার বিক্রি করে বেশ কয়েক জন গ্রাহকের কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দানিস মল্লিক নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁকে ধরে কাশীপুর থানার পুলিশ। আদতে বিহারের বাসিন্দা বর্তমানে কাশীপুর এবং চিৎপুর এলাকায় গত কয়েক বছর ধরেই প্রোমোটারি করছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ০১:৩৮
Share: Save:

এ যেন ঠিক কুমিরছানার গল্প!

একটাই ফ্ল্যাট। একাধিক বার তা বিক্রি করা হচ্ছে নানা গ্রাহকের কাছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, কুমিরছানার মতো একটি ফ্ল্যাটকে বারবার বিক্রি করে বেশ কয়েক জন গ্রাহকের কয়েক লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে দানিস মল্লিক নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁকে ধরে কাশীপুর থানার পুলিশ। আদতে বিহারের বাসিন্দা বর্তমানে কাশীপুর এবং চিৎপুর এলাকায় গত কয়েক বছর ধরেই প্রোমোটারি করছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে আধ ডজন অভিযোগ পুলিশের কাছে রয়েছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

পুলিশি তথ্য অনুযায়ী, কুমিরছানার গল্পের মতোই নিজের প্রতারণার ছক সাজিয়েছিলেন কাশীপুরের প্রতারক ওই যুবক। কাশীপুর এবং চিৎপুরে প্রথমে জমির মালিকের সঙ্গে ফ্ল্যাট তৈরি করার চুক্তি করতেন। একাধিক ক্রেতাকে ঘুরিয়ে দেখিয়ে ওই ফ্ল্যাট বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আগাম টাকা নেওয়া হতো তাঁদের কাছ থেকে। পরে তাঁদের সেই ফ্ল্যাট দেওয়া হতো না। খগেন চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা দুর্গা দাসের এই রকম একটি অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে দানিসকে। চলতি মাসেই নির্ধারিত সময়ে ফ্ল্যাট না দেওয়ায় দানিসের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করেছিলেন তিনি।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, দুর্গাদেবীর পুরোনো বাড়ি ভেঙে ফ্ল্যাট তৈরির চুক্তি হয়েছিল দানিসের সঙ্গে। সেই সঙ্গে তাঁকে তিনতলায় একটি ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল দানিসের। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই ফ্ল্যাট না দিয়ে চারতলায় দুর্গাদেবীকে একটি ঘর দেন দানিস। পুলিশ জানায়, আসল ফ্ল্যাটটি দু’জনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত প্রোমোটার।

পুলিশ সূত্রে খবর, প্রতারণার ছক ছিল আনকোরা। অফিস খুলে লোক ঠকানোর ব্যবসা ফেঁদেছিলেন ধৃত দানিস। চলতি বাজারদর থেকে অবিশ্বাস্য কম দামে ফ্ল্যাট বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। ফলে সহজেই ক্রেতারা আকর্ষিত হতেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও তা দেওয়া হতো না। এই নিয়ে ক্রেতাদের মনে প্রশ্ন তৈরি হলে দানিস তাঁদের কাছে দাবি করতেন, পুরসভা তাঁর ফ্ল্যাটের প্ল্যান আটকে দিয়েছে। অথবা পুলিশ কাজ করতে দিচ্ছে না। সব মিটে গেলেই ওই ফ্ল্যাট হাতে তুলে দেওয়ার আশ্বাস দিতেন তিনি।

তদন্তকারীদের দাবি, শুধু দুর্গাদেবী নন, একই ভাবে প্রতারিত হয়েছেন ওই এলাকার বহু মানুষ। এর মধ্যে ধৃতের বিরুদ্ধে কাশীপুর থানার পাশাপাশি চিৎপুর থানাতেও প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, এলাকায় প্রভাব থাকায় অনেক প্রতারিতই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার সাহস পাননি। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ধৃতের সঙ্গে ওই এলাকার এক প্রাক্তন পুলিশ অফিসারের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। প্রাক্তন ওই অফিসারের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Illegal Business Fraud Case
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE