—প্রতীকী চিত্র।
একটি চারতলা বাড়ির সিঁড়ির একাংশ ভেঙে পড়ায় আহত হলেন এক জন। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বেনিয়াপুকুর থানা এলাকার গোরাচাঁদ লেনে। এর পাশাপাশি, বাড়িটিতে আটকে পড়েন বাসিন্দাদের একাংশ। খবর পেয়ে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। তবে এই ঘটনায় ঘরহারা বাসিন্দারা কোথায় যাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা পুরসভার ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের ৩, গোরাচাঁদ লেনের ওই বাড়িটি প্রায় ৩০ বছরের পুরনো। প্রায় ৫৪টি পরিবার সেখানে বসবাস করে। তাদের অধিকাংশই ভাড়ায় থাকে। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ আচমকা ওই বাড়িটির সিঁড়ির তেতলার অংশ ভেঙে পড়ে। ভাঙা অংশ দোতলার সিঁড়ির উপরে পড়ায় সেটিও ভেঙে যায়। গোটা বাড়িটিতে একটিই সিঁড়ি থাকায় একতলার বাসিন্দারা কোনও মতে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারলেও আটকে পড়েন বাকিরা। আতঙ্কে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন তাঁরা। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ। আসে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। ভাঙা সিঁড়ির অংশে মই লাগিয়ে একে একে নামানো হয় বাসিন্দাদের। সিঁড়ির চাঙড় পায়ের উপরে পড়ায় এক বাসিন্দা আহত হন। মহম্মদ সাবির নামে ওই যুবক এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাড়ি ভাঙার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। বাড়িটি আপাতত খালি করে দেওয়া হয়েছে।
তবে কী ভাবে সিঁড়ির অংশটি ভেঙে পড়ল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। প্রশ্ন উঠছে বাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়েও। জানা গিয়েছে, বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরে মেয়েকে নিয়ে থাকেন বাড়িওয়ালা। বাকি অংশে থাকতেন ভাড়াটেরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাড়া নিয়ে মালিকের সঙ্গে ভাড়াটেদের দীর্ঘদিনের বিরোধ। আর সেই বিবাদের জেরেই দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি সারাই করা হত না বলে অভিযোগ। এমনকি, বছর দেড়েক আগে বাড়ির একাংশ মেরামতির কাজ শুরু হলেও অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িওয়ালার মেয়ে মর্জিনা বেগম বলেন, ‘‘কেউই ভাড়া দেন না। জবরদখল করে রয়েছেন। এর আগেও মেরামতির জন্য টাকা চাওয়া হয়েছে। কিন্তু কেউ কোনও কথা শোনেননি।’’
তবে হঠাৎ করে বাসস্থান হারিয়ে সমস্যায় পড়েছেন ভাড়াটেরা। এমনকি, অধিকাংশই ঘর থেকে টাকা বা প্রয়োজনীয় জিনিস বার করে আনতে পারেননি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপাতত কোথায় রাত কাটাবেন, সেটাই বুঝে উঠতে পারছেন না কেউ।
এক বাসিন্দা সাহারা খাতুন বলেন, ‘‘তেতলায় পরিবার নিয়ে থাকতাম। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুই তো হারিয়ে গেল। ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন কোথায় যাব, কিছুই জানি না।’’ একই বক্তব্য মহম্মদ আয়ান, কল্পনা দাসদের। যদিও এই বিষয়ে ৬০ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি তৈসার জামিনবলেন, ‘‘বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেছি। সিঁড়ি ভেঙে পড়ায় আপাতত কাউকে ঘরে ঢোকানো সম্ভব নয় বলে প্রশাসন জানিয়েছে। ঘরছাড়াদের জন্যস্থানীয় স্কুলে বা অন্য ব্যবস্থা করা যায় কি না, তার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy