Advertisement
E-Paper

কলকাতার মডেলে বাজি বাজার হাওড়ায়

যেখানে সেখানে বসে পড়া আর নয়। হাওড়াতেও এ বার বাজি বিক্রি করতে হবে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় বসে। এ জন্য কলকাতার ধাঁচে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি বাজি বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা। এই উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছে দমকল ও হাওড়া সিটি পুলিশও।

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০০:১৪

যেখানে সেখানে বসে পড়া আর নয়। হাওড়াতেও এ বার বাজি বিক্রি করতে হবে নির্দিষ্ট একটা জায়গায় বসে। এ জন্য কলকাতার ধাঁচে কেন্দ্রীয় ভাবে একটি বাজি বাজার তৈরির সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা। এই উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছে দমকল ও হাওড়া সিটি পুলিশও।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, ফি বছর কালীপুজোর আগে হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় যথেচ্ছ বাজি বিক্রি হয়। রাস্তার দু’পাশে তা রীতিমতো বাজি বাজারের আকার নেয়। অভিযোগ, এই সব বাজারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও পুলিশের অনুমতিপ্রাপ্ত আলোর বাজি ছাড়াও নিষিদ্ধ শব্দবাজি প্রকাশ্যে বিক্রি হয়। হাওড়া পুরসভার বক্তব্য, এ ভাবে বাজি বিক্রি সম্পূর্ণ আইন-বিরুদ্ধ। অভিযোগ পেলে পুলিশ মাঝে মাঝে তল্লাশি চালিয়ে বাজি বিক্রি বন্ধ করে দেয় বটে, কিন্তু ফের কালীপুজোর ঠিক কয়েক দিন আগে থেকে হাওড়ার আশপাশের গ্রাম থেকে বাজির পসরা এনে দোকান খুলে বসে পড়েন বিক্রেতারা।

নিয়মানুযায়ী বাজি বিক্রি করতে জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স লাগে। সেই লাইসেন্স দেখে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দেয় দমকল। যদিও সে ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হয়। বাজির পরিমাণ ৫০ কেজির মধ্যে হলে তবেই সেই নো অবজেকশন সার্টিফিকেট মেলে। এর চেয়ে বেশি বাজি বিক্রিতে দমকলের ডিজির অনুমতি লাগে। রাজ্য অগ্নিনির্বাপণ দফতরের হাওড়া শাখার ডিভিশনাল অফিসার অভিজিৎ পাণ্ডে বলেন, ‘‘হাওড়ায় অধিকাংশ বাজি বাজারেরই লাইসেন্স বা দমকলের ছাড়পত্র থাকে না। তাই কলকাতার ধাঁচে এখানেও বাজি বাজার হলে ভাল হবে।’’

হাওড়া পুরসভার অভিযোগ, দাশনগর ও ব্যাঁটরার কামারডাঙা-শিয়ালডাঙা অঞ্চলে রাস্তার দু’ধারে বাজির দোকান প্রায় বাজারের আকার নেয়। ঘিঞ্জি বসতিপূর্ণ বাজার এলাকা বলে পরিচিত কালীবাবু বাজার সংলগ্ন নেতাজি সুভাষ রোডেও কালী পুজোর সময়ে দোকান সাজিয়ে বসতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। ফুলঝুরি, রংমশাল, রকেট, হাউই, নানা মাপের তুবড়ি থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি দোদমা, চকোলেট বোমা বা লঙ্কাপটকা— কী নেই সেই পসরায়!

হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এ ভাবে বাজি বিক্রি আটকাতেই কেন্দ্রীয় ভাবে একটা বাজি বাজার তৈরির পরিকল্পনা চলছে। কলকাতা ময়দানে যে ভাবে প্রতি বছর বাজি বাজার বসে, এখানেও কোনও বড় মাঠ বা স্টেডিয়ামে বাজার বসবে। ডুমুরজলা ময়দানে তা হতে পারে কি না, সে বিষয়ে কথা চলছে।’’ রথীনবাবু জানান, বাজি বাজার চলাকালীন অগ্নিনিরাপত্তা বজায় রাখতে দমকলকেও থাকতে বলা হবে। সাহায্য নেওয়া হবে হাওড়া সিটি পুলিশেরও।

হাওড়ার যত্রতত্র বাজি বিক্রিতে যথেষ্ট আপত্তি রয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশের কর্তাদের। তাঁদের বক্তব্য, কালীপুজোয় নিষিদ্ধ বাজি আটকানো যেমন পুলিশের কাজ, তেমনই পুরসভার দায়িত্ব কী ভাবে এই বিক্রি বন্ধ করা যায়, তা দেখা। তাই পুরসভার তরফে কেন্দ্রীয় ভাবে বাজি বাজারের চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছে পুলিশও। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে বাজি বিক্রি হলে প্রতি বছরই পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। নিষিদ্ধ বাজি বিক্রি হলে তা বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রে সরকারি ভাবে বাজি বাজার হলে তার উপরে নজরদারি করতে সুবিধা হবে পুলিশের। পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এগোব।’’

তবে পুলিশ কমিশনার জানান, নিষিদ্ধ বাজি নিয়ে সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেও। সে জন্য সামনের সপ্তাহ থেকে বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে সচেতনতা শিবির করতে চলেছে পুলিশ। এ ছাড়া, কালীপুজোয় বহুতল আবাসনের উপর থেকে নীচে বাজি ফেলা বন্ধে বাসিন্দাদের নিয়েও সচেতনতা শিবির হবে। বাজি ফাটানো নিয়ে সকলকে সতর্ক করার পাশাপাশি নিষিদ্ধ বাজির তালিকা অনুযায়ী বাজি বাজেয়াপ্তও করবে পুলিশ।

Fire crackers Municipality
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy