Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সল্টলেক

জমি হস্তান্তর নিয়ে কোর্টের আদেশ

কাঠা পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা সরকারি ‘প্রিমিয়াম’-এর বিনিময়ে বিধাননগরে জমি হস্তান্তরের বিষয়ে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি আগেই খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেটা ছিল ১৯৮৬ সালের আগের লিজ গ্রহীতাদের সম্পর্কিত মামলা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২১
Share: Save:

কাঠা পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা সরকারি ‘প্রিমিয়াম’-এর বিনিময়ে বিধাননগরে জমি হস্তান্তরের বিষয়ে রাজ্য সরকারের জারি করা বিজ্ঞপ্তি আগেই খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেটা ছিল ১৯৮৬ সালের আগের লিজ গ্রহীতাদের সম্পর্কিত মামলা। ’৮৬ সালের পরে যাঁরা সল্টলেকে জমি পেয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও সরকার ওই অর্থ নিতে পারবে না বলে বৃহস্পতিবার সরকারি বিজ্ঞপ্তির উপরে স্থগিতাদেশ জারি করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে রাজ্য সরকার প্রথম রায়টিকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছে। রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা আবেদনের সঙ্গে বৃহস্পতিবারের রায়টিকেও জুড়ে দেব। অপেক্ষা করব চূড়ান্ত রায়ের জন্য। তবে এখন আমরা এই অর্থও নিচ্ছি না। হস্তান্তরের অনুমতিও স্থগিত রাখা হয়েছে।’’

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৫ জুন রাজ্য সরকার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, বিধাননগর পুর এলাকায় সরকারের থেকে লিজ নেওয়া জমির মালিকেরা তাঁদের জমির লিজ হস্তান্তর করতে পারবেন। তবে হস্তান্তরের জন্য লিজ নেওয়া জমির মালিকদের কাঠা প্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা করে রাজ্য সরকারকে ‘প্রিমিয়াম’ হিসেবে দিতে হবে। ওই অর্থ জমা দিলে সরকার প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে। জমির নতুন ‘মালিক’-এর সঙ্গে সরকার নতুন করে লিজ চুক্তি করবে।

বিধাননগরে জমির লিজ দু’ধরনের। ১৯৮৬ সালের আগে যে সব জমি লিজ দেওয়া হয়, সেখানে দলিলে সরকার ১৭ দফা শর্ত দিয়েছিল। সেখানে জমি বিক্রি করা যাবে না, এমন কথা কোথাও স্পষ্ট করে লেখা নেই। কিন্তু ১৯৮৬ সালের পরে যে সব জমি সরকার লিজে বণ্টন করে, সেখানে আরও তিনটি নতুন শর্ত যোগ করা হয়। সব মিলিয়ে শর্ত দাঁড়ায় মোট ২০ দফা। সেখানে জমি হস্তান্তরের উপরে সরকার স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

আইনজীবী নয়ন বিহানি জানান, বিচারপতি শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, যে সব জমির ক্ষেত্রে ১৭ দফা শর্ত রয়েছে, সে ক্ষেত্রে ২০১২ সালের সরকারি বিজ্ঞপ্তি কার্যকর হবে না। ২০১২ সালের বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে সম্প্রতি ফের কলকাতা হাইকোর্টে আর একটি মামলা হয়। এ বারের মামলাকারী বিধাননগরের বাসিন্দা জনৈক সুশীলা দ্রোলিয়া। সূত্রের খবর, ওই মহিলাকে যিনি জমিটি উইল করে দিয়েছেন, তাঁর লিজে ২০ দফা শর্ত রয়েছে। অর্থাত্ তিনি জমিটি ১৯৮৬ সালের পরে লিজ পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার আদালতে সরকারি আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় জানান, ওই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে রাজ্যপালের অনুমোদন ছিল। জবাবে সুশীলাদেবীর আইনজীবী দেবাশিস সাহা বলেন, জমি হস্তান্তরের জন্য রাজ্য সরকার এই ভাবে টাকা আদায় করতে পারে না। টাকার বিনিময়ে লিজ জমির হস্তান্তর বেআইনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE