ছাত্রীর যৌন হেনস্থায় দিনভর উত্তাল ঢাকুরিয়া। নিজস্ব চিত্র।
বাড়িতে বসে টিভিতে খবর দেখছিলেন মা। বোনকে টানাহেঁচড়া করতে দেখেই আমায় হাক দেন। আমিও টিভিতে এই দৃশ্য দেখে হতভম্ব। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না? হাফপ্যান্ট পড়েই দৌড় দিলাম। বোন তখন ঢাকুরিয়া স্টেশনের দিকে ছুটছে। কোনও রকমে ওকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যাই।
স্কুলের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে এমনই অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন দাদা বিশ্বতোষ ভট্টাচার্য। চোখেমুখে তখনও আতঙ্কের ছাপ। তাঁর কথায়: “আমার বোন ২০ বছর ধরে ওই স্কুলে পড়াচ্ছে। এ রকম ঘটনা ঘটবে কখনও ভাবতে পারিনি। স্কুলে পড়াতে যাবে কিনা, তা-ও জানি না। আতঙ্কে ঘরের এক কোণে বসে আছে।”
বিশ্বতোষ বলেন, “কিছু না করেও আমার বোনকে হেনস্থার শিকার হতে হল। এরকম আরও কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে। যাঁরা এই ধরনের নোংরা কাজ করেছেন, তাঁদের শাস্তি হওয়া উচিত।
আর পাঁচটা দিনের মতোই বুধবারও ক্লাস নিয়েছিলেন বিনোদিনী গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। সকালেও আঁচ করতে পারেননি এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে বলে। অভিযুক্ত শিক্ষক দীপক কর্মকারও ক্লাস নিয়েছিলেন।
দেখুন ভিডিয়ো
স্কুলে যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে ২৪ সেপ্টেম্বর, অর্থাৎ বিজেপির ডাকা বনধের দিন। ওই দিন স্কুল খোলা থাকলেও ছাত্রীদের সংখ্যা কমছিল। স্কুলের ১০ নম্বর ঘরে যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।
এতদিন পরে কেন অভিযোগ জানালেন নির্যাতিতার মা? এর জবাবে তিনি বলেছেন, “এই ঘটনায় প্রথমে ভয়ে কিছু বলতে পারছিল না। কিছু দিন পরেই মেয়ের শরীর খারাপ হয়ে যায়। জ্বর আসে। তার পর আবার আমি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হই। আমাদের দু’জনের শরীরের অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না। একটু সুস্থ হতেই এদিন স্কুলে চলে আসি। শিক্ষকের গ্রেফতারের দাবি জানাই।”
আরও পড়ুন: মদ খেয়ে ক্লাস নিতেন অভিযুক্ত শিক্ষক! ঢাকুরিয়ার স্কুলে অভিযোগ অভিভাবকদের
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য সরকার। শিক্ষিকা নিগ্রহ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে বহিরাগতদের ভূমিকা উঠে এসেছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বহিরাগতদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকুরিয়ায় বিনোদিনী গার্লস হাইস্কুলের প্রাথমিক বিভাগে পুরুষ শিক্ষক থাকবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্কুল শিক্ষা দফতরই।
আরও পড়ুন: ছাত্রীকে যৌন হেনস্থা, রণক্ষেত্র ঢাকুরিয়ার বিনোদিনী স্কুল, গ্রেফতার শিক্ষক
তদন্তের পাশাপাশি স্কুলের পরিবেশ যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে না হয়, তার জন্য স্কুলের বাইরে পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আপাতত ওই শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। যতদিন না তদন্ত রিপোর্ট আসবে, ততদিন দীপক কর্মকারকে ক্লাস নিতে নিষেধ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy