E-Paper

বেসরকারি অ্যাপের টোপে সরকারি ক্যাব, গাড়ি না পেয়ে ভোগান্তি বাড়ছে যাত্রীদের

ক্যাব সংস্থাগুলির চড়া হারে কমিশন কেটে নেওয়ার প্রবণতা ছাড়াও চাহিদার সময়ে যাত্রীদের থেকে যথেচ্ছ সার্জ আদায়ের সমস্যা মেটাতে চালু হয়েছিল সরকারি অ্যাপ-ক্যাব ‘যাত্রী সাথী’।

ফিরোজ ইসলাম 

শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ০৬:০৬
ধাক্কা খাচ্ছে সরকারি অ্যাপ।

ধাক্কা খাচ্ছে সরকারি অ্যাপ। —প্রতীকী চিত্র।

অ্যাপ-ক্যাব চালকদের আয়ের বড় অংশ থেকে বাণিজ্যিক ক্যাব সংস্থাকে কমিশনের টাকা দিতে হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেয়ে সমাধানের পথ বার করতে গিয়ে রাজ্য সরকার নিজেই অ্যাপ তৈরির কাজে হাত লাগিয়েছিল। ক্যাব সংস্থাগুলির চড়া হারে কমিশন কেটে নেওয়ার প্রবণতা ছাড়াও চাহিদার সময়ে যাত্রীদের থেকে যথেচ্ছ সার্জ আদায়ের সমস্যা মেটাতে চালু হয়েছিল সরকারি অ্যাপ-ক্যাব ‘যাত্রী সাথী’। কিন্তু, বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির ভাড়ার কৌশলী টোপের কাছে চালক এবং যাত্রী, উভয় দিক থেকেই ধাক্কা খাচ্ছে সেই সরকারি অ্যাপ।

দিনভর ভাড়া থেকে বাড়তি রোজগারের আশায় অ্যাপ-ক্যাব চালকদের বড় অংশ একসঙ্গে একাধিক অ্যাপে লগ-ইন করে রাস্তায় নামছেন বলে অভিযোগ। সকাল এবং সন্ধ্যার ব্যস্ত সময়ে বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থার অ্যাপে যে কোনও দূরত্বে ভাড়ার হার যাত্রী সাথী অ্যাপের তুলনায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি। চালকেরা ওই অঙ্ক দেখে বেসরকারি অ্যাপ থেকে ট্রিপ নিচ্ছেন। যে দূরত্ব যেতে যাত্রী সাথী ২৫০ টাকা ভাড়া দেখাচ্ছে, সেই দূরত্ব যেতে বেসরকারি সংস্থার অ্যাপ ৩২০ টাকার মতো ভাড়া দেখাচ্ছে। যে কারণে ব্যস্ত সময়ে বাণিজ্যিক অ্যাপের তুলনায় পিছিয়ে থাকছে সরকারি অ্যাপ।

ফলে দিন-রাতের ব্যস্ত সময়ে সরকারি অ্যাপ থেকে ক্যাব বা বাইক-ট্যাক্সি পেতে গিয়ে যাত্রীদের নাকাল হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাড়তি ভাড়া গুনে ‘সার্চ বুস্ট’ করার ব্যবস্থা চালু করেছেন যাত্রী সাথী অ্যাপ কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যবস্থায় যাত্রী তাঁর ইচ্ছে অনুযায়ী অ্যাপের ভাড়া থেকে ১০, ২০, ৩০ বা ৪০ টাকা বেশি দিতে চাইলে ক্যাব খোঁজার পর্ব শুরু করছে অ্যাপ। বাড়তি ভাড়ার অঙ্ক অন্য অ্যাপের কাছাকাছি পৌঁছলে তখন হয়তো বা ক্যাব মিলছে। ফলে, যাত্রীদের ঘুরে-ফিরে সার্জের ফাঁদে সরকারি অ্যাপেও পড়তেই হচ্ছে।

আবার যে সময়ে ব্যস্ততা নেই, তখন যাত্রী সাথী অ্যাপে ক্যাব চোখে পড়লেও অতিরিক্ত কম ভাড়া হেঁকে যাত্রীদের বড় অংশকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি অ্যাপগুলি। ফলে ইচ্ছে মতো ভাড়া ওঠানামার কৌশলের কাছে সরকারি অ্যাপ দু’দিক থেকেই ধাক্কা খাচ্ছে বলে দাবি ওই অ্যাপ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের।

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল অনলাইন ক্যাব অপারেটর্স গিল্ড’-এর সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কিলোমিটার-পিছু ভাড়া এবং সর্বোচ্চ সার্জ বেঁধে না দিলে সমস্যা সামলানো মুশকিল।’’ বাম শ্রমিক সংগঠন এআইটিইউসি-র হলুদ ট্যাক্সি এবং অ্যাপ-ক্যাব চালক সংগঠনের নেতা নওলকিশোর শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘ভাড়া বেঁধে দেওয়া ছাড়াও তা ওঠানামা করার বিপুল ব্যবধান বেসরকারি সংস্থাগুলিকে ফাটকা খেলার বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে।’’ সরকারি অ্যাপের সুবিধা নিয়ে প্রচারের দাবি জানান তিনি।

‘অল বেঙ্গল তৃণমূল ক্যাব ড্রাইভার অ্যান্ড অপারেটর্স ইউনিয়ন’-এর সাধারণ সম্পাদক তন্ময় কুণ্ডু এবং অর্ণব গিরিও সমস্যা মেটাতে পরিবহণ দফতরের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। সমস্যার কথা দফতরের গোচরে আনা হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের। দফতরের কর্তারা অবশ্য জানান, অ্যাপ থেকে পাওয়া তথ্য নিয়মিত বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তিতে বদল আনা হচ্ছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

CAB Public Transport

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy