যানজট: দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের কাছে এটাই রোজকার ছবি। আজ কল্পতরু উৎসবের জেরে যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। সোমবার। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়
নতুন বছরে দক্ষিণেশ্বর ও ডানলপ চত্বরে যানজটের আশঙ্কা করছেন সকলেই।
কয়েক মাস আগেই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের জন্য চালু হয়েছে স্কাইওয়াক। তা সত্ত্বেও স্কাইওয়াকের সামনের রাস্তা দিয়ে দর্শনার্থীরা হাঁটাচলা করায় মাঝেমধ্যেই যানজট তৈরি হচ্ছে। আবার কয়েক দিনের মধ্যেই ডানলপ মোড়ের উড়ালপুলে পুরোদমে সংস্কারের কাজ শুরু হবে। তাতে বন্ধ থাকবে বিটি রোডের খানিকটা অংশ। সব মিলিয়ে ওই তল্লাট নতুন বছরে যানজটে জেরবার হবে বলেই আশঙ্কা গাড়ি চালক- সহ সাধারণ পথচারীদেরও। এমনিতেই বেশ কয়েক মাস ধরে ডানলপ উড়ালপুল বন্ধ থাকায় প্রতিদিনই তীব্র যানজট হচ্ছে ডানলপ মোড়ে।
আজ, মঙ্গলবার নতুন বছরের শুরুর দিনে কল্পতরু উৎসব। ফলে দক্ষিণেশ্বর মন্দির ও কাশীপুর উদ্যানবাটীতে ভিড় উপচে পড়বে। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও কতটা ‘ভয়াবহ’ হবে সেটা নিয়েই আতঙ্কিত স্থানীয় মানুষ। তবে পুলিশের দাবি, কল্পতরুর মতো বিশেষ উৎসবের দিনে পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কিন্তু সাধারণ মানুষের দাবি, অন্যান্য বছর এমনিতেই যানজট সামালাতে পুলিশ হিমশিম খায়। এ বার স্কাইওয়াকে বদলে লোকজন রাস্তায় ভিড় করছেন। ফলে এ বারে কী অবস্থা দাঁড়াবে সেটাই এখন প্রশ্ন অনেকের কাছে।
প্রতি বারেই নতুন বছরের শুরুতে দক্ষিণেশ্বরে দর্শনার্থীদের ভিড় বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি থাকে। যানচালকদের অনেকের প্রশ্ন, পুলিশ প্রথম দিন পরিস্থিতি সামলে নিলেও বাকি দিনগুলিতে কী হবে? পুলিশ কর্মীদের একাংশের মতে, ডানলপ রাইট টার্ন ফ্লাইওভারের কাজ চলাকালীন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে ডানলপমুখী রাস্তায় লরি চলাচল বন্ধ রাখলে ভোগান্তি কমবে। তবে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
শনিবার পূর্ত দফতরের কর্তাদের সঙ্গে ডানলপের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন ব্যারাকপুরের ডিসি ট্রাফিক জবি থমাস কে। উড়ালপুলের কাজে বিটি রোডের একাংশ বন্ধ করার ফলে তৈরি হওয়া সমস্যা কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে সে ব্যাপারে আলোচনা হয়। ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল চৌধুরী বলেন, ‘‘ডানলপ মোড়ে কাজের জন্য সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। তবে আরও ট্র্যাফিক বাড়িয়ে সমস্যা মেটানোর কথা ভাবা হচ্ছে।’’
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যেতে স্কাইওয়াক রয়েছে। রেল স্টেশন এবং দক্ষিণেশ্বর চার রাস্তার মোড় থেকে সরাসরি স্কাইওয়াকে ওঠা-নামার গেট রয়েছে। সেখানে যাতায়াতের জন্য লোহার রেলিং দিয়ে ঘেরা নির্দিষ্ট জায়গা থাকলেও নিজেদের মর্জিমতো চার রাস্তার মাঝে নেমে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কিংবা হাঁটাচলা করছেন দর্শনার্থীরা। পুলিশের হাজার ঘোষণাতেও কোনও কাজ হচ্ছে না। আর তার জেরে মন্দিরে ঢোকা রাস্তা ছাড়াও আড়িয়াদহের দিকে যাওয়ার রাস্তা এবং বালি ব্রিজেও গাড়ির জট লেগে যাচ্ছে।
অন্য দিকে ডানলপ উড়ালপুলের দুটি স্তম্ভের বিয়ারিংয়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় পুজোর আগে থেকেই সেখানে ভারী গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ। ফলে দক্ষিণেশ্বরের দিক থেকে আসা বাস, লরি সবই পিডব্লিউডি রোড ব্যবহার করে ডানলপ মোড়ে পৌঁছচ্ছে। তাতেই সকাল ১১টার পর থেকে কার্যত স্তব্ধ হয়ে পড়ছে ওই রাস্তা। ইতিমধ্যেই সেতুর নিচ থেকে ভগৎ সিংহের মূর্তি সরানো হয়ে গিয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, কয়েক দিনের মধ্যেই বাঁশের খাঁচা করে কলকাতামুখী বিটি রোডের একাংশ বন্ধ করে সেতুর কাজ পুরোদমে শুরু হবে।
সব মিলিয়ে নতুন বছরে যানজটের ‘জুজু’ তাড়া করছে সক্কলকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy