ক্ষতিগ্রস্ত দোকানের তাকে কী ভাবে যেন রক্ষে পেয়ে গিয়েছে পুঁচকে গণেশমূর্তিটি। সেই সিদ্ধিদাতার সামনে জোড় হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা-ছেলে রমাপ্রসাদ চৌধুরী, রাজা চৌধুরী।
ক্যানিং স্ট্রিটের দিকে একতলায় সফ্ট টয়ের দোকানের বিপুল সামগ্রী নষ্ট হয়েছে বাগড়ি মার্কেটের বিধ্বংসী আগুনে। দেড় দিন পরে সোমবার নিজেদের দোকানে ঢুকতে পেরেছেন রমাপ্রসাদবাবুরা। ধ্বংসস্তূপ থেকে হাতড়ে কিছু জিনিস উদ্ধারের পরে তাকের গণেশের দিকে ফিরে তাকালেন। দোকানের ছাদে চিড় ধরেছে। দেওয়ালও ক্ষতবিক্ষত। তবু গণেশের নীল তাকটা বেঁচে গিয়েছে। সে-দিকে মুখ করে টানা মিনিট পাঁচেক দাঁড়িয়ে থাকলেন দোকানের মালিক। শেওড়াফুলির বাসিন্দা রমাপ্রসাদ বললেন, ‘‘যা পেরেছি সরিয়ে নিয়ে কে জানে কত দিনের জন্য দোকান বন্ধ করে চলে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে মন্ত্র পড়ে পুজোটা অন্তত সেরে যাই!’’
রবিবার ক্যানিং স্ট্রিটে কলকাতার অন্যতম প্রধান এই পাইকারি বাজার ঘিরে শুধুই ধ্বংসলীলা আর আতঙ্ক চোখে পড়ছিল। এ দিন থেকে শুরু হল জ্বলন্ত শ্মশানে ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা। দুপুরে সরু গলিটায় থিকথিকে ভিড়। লাইন ঠেলে একবারটি ভিতরে ঢোকার আকুতি। বেলা ১২টা নাগাদ সেই ভিড়টার মাথার উপরেই চারতলার জানলার ভিতরটা জ্বলে উঠতে দেখা গেল। আমড়াতলা স্ট্রিটের গলিতে বাগড়ি মার্কেটের ‘বি’ ব্লকের দিকে জড়ো হওয়া জনতাকে সরাতে তবু হার মানল পুলিশ। মহম্মদ আফতাব, পারভেজ আহমেদের মতো ব্যবসায়ীরা বলছিলেন, বাড়ির ভিতরটা তপ্ত কড়াইয়ের মতো ফুটছে।