E-Paper

জোড়া কার্নিভালে যানজটে নাভিশ্বাস মধ্য কলকাতার

এ দিন রেড রোডে ছিল রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। আবার আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রেড রোড সংলগ্ন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৭:৫২
কার্নিভালের জেরে যানজট শহরে, এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভারে।

কার্নিভালের জেরে যানজট শহরে, এজেসি বোস রোড ফ্লাইওভারে। —নিজস্ব চিত্র।

আশঙ্কা যতটা ছিল, বাস্তবে জোড়া কার্নিভালের জেরে তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হল মানুষকে। মঙ্গলবার মধ্য কলকাতার একাধিক রাস্তায় যানজট ঠেকাতে কলকাতা পুলিশের তরফে একাধিক ব্যবস্থা করা হলেও সে সব কার্যত কোনও কাজেই এল না। ফলে, রাস্তায় ভোগান্তির শেষে কেউ গন্তব্যে পৌঁছলেন কয়েক ঘণ্টা পরে, কেউ আবার বাস থেকে নেমে হেঁটেই বাড়ির পথ ধরলেন। ঘণ্টা পাঁচেক পরে কার্নিভাল শেষ হলেও রাস্তায় তার রেশ থেকে গেল আরও বহু ক্ষণ।

এ দিন রেড রোডে ছিল রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল। আবার আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে রেড রোড সংলগ্ন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর ডাক দিয়েছিলেন আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা। বিকেলে এই দুই কর্মসূচিকে ঘিরে দীর্ঘক্ষণ অবরুদ্ধ থাকল মধ্য কলকাতা। রেশ গিয়ে পড়ল সংলগ্ন একাধিক রাস্তায়। লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, চৌরঙ্গি রোড-সহ বহু রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইন দেখা গেল। ডোরিনা ক্রসিং বন্ধ থাকায় উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে যোগাযোগ কার্যত বন্ধ ছিল বহু ক্ষণ।

দুর্গাপুজোর কার্নিভাল ঘিরে দুপুর ২টো থেকে রেড রোড এবং সংলগ্ন কুইন্স ওয়ে, লাভার্স লেন, পলাশি গেট ও এসপ্লানেড র‌্যাম্প বন্ধ রাখা হবে বলে লালবাজার আগেই জানিয়েছিল। দুপুর ২টোর কিছু পর থেকে রাস্তা বন্ধ করতে শুরু করে পুলিশ। যার জেরে মূলত হাওড়ামুখী গাড়ির চাপ বাড়ে রবীন্দ্র সদন সংলগ্ন রাস্তায়। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, কার্নিভাল শুরু হওয়ার আগে থেকেই গাড়ির লম্বা লাইন তৈরি হয় রাস্তাগুলিতে। এর পরে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে দ্রোহের কার্নিভালের জমায়েত শুরু হতেই পরিস্থিতি কার্যত হাতের বাইরে চলে যায়। দিনের আলো ফুরোতেই ওই জমায়েত এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের মানববন্ধব কর্মসূচিতে ডোরিনা ক্রসিং চলে যায় মানুষের দখলে। গাড়ি দাঁড়িয়ে যায় লেনিন সরণি এবং এস এন ব্যানার্জি রোডে। এমনকি, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে আসা ধর্মতলামুখী গাড়িগুলিও ঘুরিয়ে দিতে হয়। যার প্রভাব গিয়ে পড়ে শিয়ালদহ সংলগ্ন এপিসি রোডে। অ্যাম্বুল্যান্সও আটকে যায় যানজটে। দাঁড়িয়ে যায় সরকারি, বেসরকারি বাস এবং গাড়ি। দীর্ঘ সময় আটকে থাকার পরে অনেকেই শিয়ালদহের দিকে হেঁটে যেতে বাধ্য হন। লেনিন সরণি দিয়ে হেঁটে ফিরছিলেন বারাসতের এক বাসিন্দা। তিনি বললেন, ‘‘আধ ঘণ্টা বাসে বসে থেকে হাঁটা দিয়েছি।’’

শুধু শিয়ালদহ যাওয়ার রাস্তাই নয়, রেড রোডের কার্নিভালের জেরে রবীন্দ্র সদন মোড় থেকে হাওড়ামুখী গাড়িও আটকে যায়। বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে যানবাহন সচল রাখার চেষ্টা পুলিশ করলেও লাভ হয়নি। উল্টে সময় যত এগিয়েছে, ভোগান্তিও তত বেড়েছে। অনেকেই গন্তব্যে পৌঁছতে মেট্রোয় চেপেছেন। ফলে মেট্রোয় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। লালবাজার অবশ্য জানিয়েছে, পরিস্থিতি সামলাতে সমস্ত রকম চেষ্টা করা হয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘যতটা সম্ভব বিকল্প পথে গাড়ি ঘুরিয়ে, রাস্তায় পুলিশ নামিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা হয়েছে। পরিস্থিতির আন্দাজ করে রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মীও নামানো হয়েছিল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kolkata Traffic Jam Kolkata Police Kolkata Traffic Police Traffic Congestion Durga Puja 2024 Durga Puja Carnival RG Kar Protest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy