Advertisement
E-Paper

রকগুলি নেই ঠিকই, কিন্তু আড্ডাটা রয়েছে

বাড়ির সামনে গাছগাছালি আর উন্মুক্ত মাঠ, ইট কাঠ, ইমারতে মিশে থাকা এক অদৃশ্য আকর্ষণ, আর সকলের ভালবাসা নিয়ে আমার পাড়া রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার। এখানেই জন্ম, বেড়ে ওঠা। আমাদের পাড়াটা খুব বড় নয়।

দেবাশিস ভোঁস

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৩
সাক্ষাৎ: যাতায়াতের পথে পড়শিদের আলাপচারিতা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

সাক্ষাৎ: যাতায়াতের পথে পড়শিদের আলাপচারিতা। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

বাড়ির সামনে গাছগাছালি আর উন্মুক্ত মাঠ, ইট কাঠ, ইমারতে মিশে থাকা এক অদৃশ্য আকর্ষণ, আর সকলের ভালবাসা নিয়ে আমার পাড়া রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার। এখানেই জন্ম, বেড়ে ওঠা।

আমাদের পাড়াটা খুব বড় নয়। এক দিকে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ, পাশে নির্মলচন্দ্র স্ট্রিট, ও দিকে ক্রিক রো। গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ থেকে শুরু রাস্তাটা মিশেছে লেনিন সরণিতে।

অতীতের পাড়া আর আজকের পাড়া যেন দুই ভিন্ন জগৎ। ৃসময়ের প্রভাবে এখানেও এসেছে নানা উন্নয়ন। আগে আশপাশের বেশ কিছু ভ্যাটের আবর্জনা এনে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারের সামনে একটি ভ্যাটে ফেলা হতো। পুর-উদ্যোগে সেখানেই বসেছে কম্প্যাক্টর। এখন আর অবর্জনা থেকে চার দিকে দুর্গন্ধ ছড়ায় না। তবে মাঝেমাঝে পথ চলতি কিছু মানুষের দেওয়ালের গায়ে পানের পিক ফেলার অভ্যাসটা আজও বদলায়নি। কয়েক বছর আগে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে তৈরি হয়ছে ভূগর্ভস্থ জলাধার। এতে পানীয় জলের সমস্যা মিটছে।

অনেকটাই কমেছে পাড়ার খেলাধুলোর পরিবেশ। এখন বেশির ভাগ সময়ে মাঠটা ফাঁকা পড়ে থাকে। পাড়ার ছেলেদের পরিবর্তে আশপাশের অঞ্চলের কিছু ছেলে মাঠে খেলতে আসে। আর চলে কিছু ক্লাবের অনুশীলন। আগে ফুটপাথে হতো ক্যারাম খেলা এবং শীতের রাতে জোরালো আলো লাগিয়ে চলত টেবল টেনিস। এখন আবার কাছেই হয়েছে একটা লাফিং ক্লাব। এলাকার বেশ কিছু মানুষ এতে যোগ দিয়েছেন।

শীত এলেই বদলে যায় এ পাড়ার ছবিটা। শীতবস্ত্রের সম্ভার নিয়ে বহু বছর ধরে হাজির হন পাহাড়ের মানুষ। শীতে সামনের মাঠে হয় বনসাই ও পাখির প্রদর্শনী।

কিছু সমস্যা থাকলেও আছে অনেক সুবিধাও। পাড়াটার ভৌগলিক অবস্থান এমনই যে যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল। কাছেই ধর্মতলা, শিয়ালদহ স্টেশন। সারা দিন পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় যানবাহন।

এ পাড়ার পুজো মানেই রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার। পুজোটাই এলাকার মানুষের দেখা সাক্ষাতের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। গল্পে-আড্ডায় সকলেই মেতে ওঠেন। আলাপ হয় কত অপরিচিতের সঙ্গে। আগে পাড়ার সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আসতেন কত বিখ্যাত শিল্পী। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় থেকে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, কে না আছেন সেই তালিকায়। আজ সেই কৌলীন্য আর নেই।

রকগুলো না থাকায় এখন মাঝেমাঝে আড্ডা বসে বন্ধুদের বাড়িতে। পার্কের ভিতরেও বিকেলে বসে প্রবীণদের আড্ডা। অনেকটাই কমেছে এ অঞ্চলের ঘুড়ি ওড়ানোর চলটা। মনে পড়ে পাড়ার নিমাইদার কাছেই ঘুড়ি ওড়ানো, সুতোয় মাঞ্জা দেওয়ার হাতে খড়ি। এখন দেখি সেই উৎসাহও কমে যাচ্ছে শহরে।

লেখক চিকিৎসক

Roak Debasish Bhonsh Subodh Mullick Square Hangout
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy