Advertisement
১৭ জুন ২০২৪
Cyclone Remal Update

শহরে রেমালের আগমন অনিশ্চিত, তবু প্রস্তুত থাকছে পুলিশ

কলকাতায় ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে, তা আগাম বোঝা না গেলেও সম্ভাব্য বিপর্যয়ের মোকাবিলায় লালবাজারে খোলা হয়েছে ‘ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম’।

লালবাজার।

লালবাজার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২৪ ০৬:৪৯
Share: Save:

বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। যা আজ, শনিবার সকালের মধ্যে ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। যে ঝড়ের নাম রাখা হয়েছে ‘রেমাল’। সেই ঘূর্ণিঝড় পরে আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে রবিবার মধ্যরাত নাগাদ আছড়ে পড়তে পারে স্থলভাগে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বাংলাদেশের খেপুপাড়া এবং সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গের সাগর দ্বীপের উপকূলে সর্বশক্তি নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে রেমাল। সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার।

কলকাতায় ওই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কতটা পড়বে, তা আগাম বোঝা না গেলেও সম্ভাব্য বিপর্যয়ের মোকাবিলায় লালবাজারে খোলা হয়েছে ‘ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম’। সেখানে পুলিশ ছাড়াও থাকবেন দমকল, পুরসভা, পূর্ত দফতর, কেএমডিএ, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর, সিইএসসি এবং এনডিআরএফের প্রতিনিধিরা। সরকারি বিভিন্ন দফতরের মধ্যে সমন্বয় রাখতেই মূলত ওই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই কন্ট্রোল রুম কাজ শুরু করেছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, অতীতের একাধিক অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে যে, ঝড়ের প্রভাবে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় প্রচুর গাছ উপড়ে পড়ে। কোথাও আবার পুরনো, জীর্ণ বাড়ি ভেঙে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটে। এ বারেও ঝড়ের প্রভাবে এমন কিছু ঘটলে যাতে দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়, তার জন্যই ওই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের কর্তারা। তাঁদের আশা, প্রতিটি দফতরের প্রতিনিধিরা সেখানে উপস্থিত থাকায় উদ্ধারকাজ চালাতে হলে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে কোনও রকম সমস্যা হবে না। এবং দ্রুত সেই কাজ করা যাবে। এর পাশাপাশি, সেনাবাহিনীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তেমন প্রয়োজনে উদ্ধারকাজ চালাতে সেনার সাহায্য চাওয়া হতে পারে।

ঝড়ের প্রভাব এ শহরে পড়বে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হলেও লালবাজারের তরফে প্রতিটি থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে রেমাল নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে বলে খবর। ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে বিপর্যয়ের মোকাবিলায় বিশেষ দল তৈরি রাখতে বলা হয়েছে, যাতে ঝড়ে গাছ পড়ার মতো ঘটনা ঘটলে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু করে দিতে পারে। এর জন্য ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে করাত-সহ প্রয়োজনীয় সব রকম সরঞ্জাম মজুত করে রাখতে বলা হয়েছে। সাধারণত, কোথাও রাস্তার উপরে গাছ পড়ে গেলে ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরাই মাটিতে পড়ে থাকা ডালপালা সরানোর কাজ শুরু করে দেন, যাতে গাড়ি চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক হতে পারে। লালবাজারের তরফে থানাগুলিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার পাশাপাশি জেনারেটরের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। ঝড়ে বিদ্যুৎ-বিপর্যয় ঘটলে সেগুলি কাজে লাগবে।

লালবাজার জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ঝড়ের আশঙ্কায় কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৫টি দল তৈরি করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের ১০টি ডিভিশনে একটি করে দল রাখা হয়েছে। লালবাজারে এবং পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে থাকছে দু’টি দল। প্রতিটি দলে সাত জন করে সদস্য থাকছেন। তাঁদের সঙ্গে থাকছে গাছ কাটার করাত-সহ প্রয়োজনীয় সব রকম জিনিস।

লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতা শহরের ভগ্নপ্রায় এবং বিপজ্জনক বাড়িগুলির বাসিন্দাদের কোথাও সরানোর প্রয়োজন আছে কি না, তা নিয়ে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। প্রতিটি থানাকে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি, সিইএসসি-র আঞ্চলিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে, যাতে ঝড়ের পরবর্তী অবস্থা তাঁদের সাহায্য নিয়ে দ্রুত সামলানো যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE