Advertisement
E-Paper

ভোটের মুখে ‘মন্দ’ কপাল, পুলিশের জালে নন্দলাল

গত বছর পুর-নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কাশীপুর। সেই দ্বন্দ্বে দল এতটাই বিব্রত হচ্ছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং দলের দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৬ ০০:০২
গ্রেফতার হওয়া নন্দলাল সাউ। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

গ্রেফতার হওয়া নন্দলাল সাউ। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

গত বছর পুর-নির্বাচনের সময় থেকেই তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল কাশীপুর। সেই দ্বন্দ্বে দল এতটাই বিব্রত হচ্ছিল যে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং দলের দুই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধেই কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ করপুরকায়স্থকে। এর কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন পুলিশ কমিশনার হিসেবে রাজীব কুমার দায়িত্ব নেন এবং গত ১১ ফেব্রুয়ারি খুনের চেষ্টা ও অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করা হয় সেখানকার তৃণমূলের এক গোষ্ঠী-নেতা স্বপন চক্রবর্তীকে। তিনি অবশ্য এখন জামিনে রয়েছেন। এর এক মাসের মাথায় বুধবার গ্রেফতার হলেন অপর এক তৃণমূল নেতা, দলের এক নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি নন্দলাল সাউ। যিনি স্থানীয় রাজনীতিতে স্বপনের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলেই এলাকায় পরিচিত। নন্দলালকে অবশ্য ধরা হয়েছে লুঠপাট, শ্লীলতাহানির অভিযোগ এবং অস্ত্র আইনে। তবে এর মধ্যেও রাজনীতির আঁচ মিলেছে, যখন ১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সীতা জয়সোয়ারা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় ভোটের মুখে দলেরই ভাবমূর্তিরই ক্ষতি হল।’’

বুধবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ সিঁথি মোড়ের কাছ থেকে গ্রেফতার হন নন্দলাল। পুলিশের বক্তব্য, তিনি দলে স্বপনের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত, আনোয়ার খানের গোষ্ঠীর লোক। নন্দলাল আবার দলীয় বিধায়ক ও কাউন্সিলর মালা সাহারও অনুগামী। ফলে ভোটের মুখে স্বপন গ্রেফতার হওয়ার এক মাসের মাথায় নন্দলালের ধরা পড়া আসলে ‘ভারসাম্য’ রক্ষার চেষ্টা কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৃণমূলের অন্দরেই।

পুলিশ জানায়, নন্দলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূলেরই এক মহিলা কর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে। পুলিশ সূত্রে খবর, কাশীপুর রোডের বাসিন্দা ওই মহিলা জানিয়েছেন, তিনি নিজের বাড়ি থেকে বাবুঘাটের উদ্দেশে বেরোনোর সময়ে কয়েক জন ঘিরে ধরেন তাঁকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন নন্দলালও। ওই মহিলার অভিযোগ, হামলাকারীরা তাঁকে বন্দুক দেখিয়ে তাঁর ব্যাগ ও গলায় পরে থাকা সোনার হার ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগে ছিল কয়েক হাজার টাকা। তাঁকে শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলেও অভিযোগ করেন ওই মহিলা। পাশাপাশি ওই মহিলার দাবি, পুলিশে অভিযোগ জানালে তাঁকে খুন করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। মহিলার চিকিৎসাও করানো হয় হাসপাতালে। নন্দলাল অবশ্য সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ দিন দাবি করেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে এই সব অভিযোগ ঠিক নয়।’’

তবে ওই মহিলা তো পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিলেন গত ২৭ জানুয়ারি। তা হলে তৃণমূল নেতাকে ধরতে ৪২ দিন সময় লাগল কেন?

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে খোঁজা হচ্ছিল নন্দলাল সাউকে। কিন্তু তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। বুধবার ধরা হয় তাঁকে। নন্দলালের সঙ্গী, ওই ঘটনায় অন্য অভিযুক্তদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অর্পিতা হীরার আদালতে বুধবার ধৃত তৃণমূল নেতাকে হাজির করানো হলে বিচারক তাঁকে দু’দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

তৃণমূল কাউন্সিলর সীতা জয়সোয়ারার বক্তব্য, ‘‘নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে ওই মহিলা নন্দলাল সাউয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ঠিক করেননি।’’

অবশ্য কাশীপুর-বেলগাছিয়ার বিধায়ক মালা সাহা বলেন, ‘‘কারও ব্যক্তিগত ঝামেলায় পার্টির ভাবমূর্তির ক্ষতি হওয়ার ব্যাপার নেই। সব কিছুর সঙ্গে পার্টিকে জড়ানো ঠিক নয়।’’

TMC assembly election 2016 vote crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy