অনমিত্র বসু। —নিজস্ব চিত্র
এক যুবকের ফ্ল্যাটে জোর করে ঢুকে তাঁর হাত-পা বেঁধে লাগাতার অত্যাচারের অভিযোগে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দমদমের অমরপল্লিতে। আহতের নাম অনমিত্র বসু (৩৮)। ধৃতেরা হল শুভদীপ নাগ, অরুণাংশু ঘোষ এবং নবারুণ চৌধুরী। পুলিশ জানিয়েছে, অনমিত্র একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী, বর্তমানে একটি অডিট ফার্মে কাজ করেন।
ওই যুবক পুলিশকে জানিয়েছেন, গত এক মাস যাবৎ তিনি হুমকি-চিঠি পাচ্ছিলেন। অনমিত্রের অভিযোগ, ২৭ অক্টোবর চার অচেনা যুবক জোর করে তাঁর ফ্ল্যাটে ঢুকে, হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনাটি জানাজানি হলে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়। পরদিনই দমদম থানায় অভিযোগ জানান ওই যুবক।
অনমিত্রের কথায়, ২৯ অক্টোবর ফের ওই চার যুবক আসে তাঁর ফ্ল্যাটে। তাঁকে বেঁধে, মুখে সেলোটেপ আটকে, কেমরে লোহার শিকল পরিয়ে বেধড়ক মারধর করে। সেই অবস্থাতেই তাঁকে বাথরুমের পাশে ফেলে রেখে তারা আলমারি ভেঙে টাকা, গয়না ও অন্য সামগ্রী লুঠ করে পালায়। নিয়ে যায় ফ্ল্যাটের চাবিও। পুলিশ জেনেছে, এর পর থেকে ওই চার যুবক রোজই অনমিত্রের ফ্ল্যাটে আসত। নেশা করে তাঁকে মারধর করে হাত-পা-মুখ বেঁধে ফেলে রেখে যেত। অভিযোগ, সেই সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটটি তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্যও চাপ দিত তারা।
প্রতিবেশীরা জানান, কিছু দিন ধরেই অনমিত্রকে দেখা যাচ্ছিল না। রাতে কয়েক জন অচেনা যুবককে ওই ফ্ল্যাটে ঢুকতে–বেরোতে দেখছিলেন তাঁরা। এতেই সন্দেহ বাড়ে। সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এক যুবককে ঢুকতে দেখে বাসিন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলে সে নিজেকে অনমিত্রের বন্ধু বলে দাবি করে। এর পরেই পালালে বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ এসে অনমিত্রের ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখে, সেখানে আগে থেকেই বাকি তিন যুবক বসে রয়েছে। তাদের হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাই অনমিত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই যুবকের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলে রাখায় পচন ধরেছে হাত ও পায়ে। আপাতত তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। অনমিত্রের অনুমান, তাঁর এক আত্মীয় সম্পত্তি দখলের নামে এমন ঘটিয়ে থাকতে পারে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে জোর করে আটকে রাখা এবং মারধর করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy