এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে অপহরণ ও খুনের ঘটনার পরে ছ’দিন কেটে গেলেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি বিধাননগর পুলিশ। তবে, পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে নিউ টাউনের একটি বাড়ি সংলগ্ন এলাকার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। সেই ফুটেজে দু’টি গাড়ি ছাড়াও কয়েকটি মোটরবাইকের দেখা মিলেছে।
গত ২৯ অক্টোবর যাত্রাগাছি এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছিল স্বর্ণ ব্যবসায়ী স্বপন কামিল্যার দেহ। দত্তাবাদে গোবিন্দ বাগ নামে এক ব্যক্তির বাড়ির নীচতলা ভাড়া নিয়ে একটি সোনার দোকান চালাতেন স্বপন। ৩১ অক্টোবর বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় তাঁর পরিবার অপহরণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করে। এই ঘটনায় নাম জড়ায় জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিডিও প্রশান্ত বর্মণের।
পুলিশ সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজের সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ অক্টোবর দুপুর ১টা নাগাদ গোবিন্দের বাড়িতে দু’টি গাড়ি এসেছিল। তার একটিতে গোবিন্দকে ও অন্যটিতে স্বপনকে তোলা হয়। অভিযোগ, তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়া ১-এ একটি বাড়িতে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে সামনে এসেছে, ওই বাড়ি থেকে রাত ৯টার পরে স্বপনকে বার করা হয়। এই সব তথ্যই যাচাই করা হচ্ছে। সরকারি ভাবে পুলিশ কিছু জানাতে চায়নি।
এর পাশাপাশি, যে সোনা চুরি হওয়ার অভিযোগ ঘিরে এত কাণ্ড, তা নিয়ে কোনও স্তরে অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলেও জানা যায়নি। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনের গৌরাঙ্গনগরের এক বাসিন্দা অশোক কর সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তিনি অ্যাকশন এরিয়া ১-এর একটি বাড়িতে কাজ করতেন। সেই বাড়িতে কখনও বসবাস করতেন, মাঝেমধ্যে সেখান থেকে যাতায়াতও করতেন প্রশান্ত। অশোকের দাবি, তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মাস চারেক আগে ওই বাড়ি থেকে সোনাচুরি করে স্বপনের কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পুলিশের উচিত এই দাবির সত্যতা খতিয়ে দেখা।
অশোক জানান, ২৮ অক্টোবর দুপুরে তাঁকে ওই বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয়। তিনি সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিলেন। অশোকের দাবি, তাঁকে ও স্বপনকে ওই বাড়িতে মারধর করা হয়। এমনকি, তার আগেও সোনা চুরির অভিযোগে তাঁকে মারধর করা হয়েছিল।
প্রশ্ন উঠেছে, অশোক পুলিশকে কিছু জানালেন না কেন? তিনি শুধু জানিয়েছেন, পুলিশ এখনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেনি। এমনকি, ওই সোনা চুরির ব্যাপারে স্থানীয় থানায় অভিযোগ হয়েছিল কিনা, তা নিয়েও পুলিশের তরফে স্পষ্ট ভাবে কিছু সামনে আসেনি।
এ দিকে, অভিযুক্ত বিডিও সরকারি কাজের টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ তুললেন ঠিকাদারেরা। এক ঠিকাদার দিলীপ দাস বলেন, “বিডিও শুধু ওঁর কাছের লোকেদের কাজ দেন। আমরা কাজ করলেও টাকা দেন না।“ আর এক ঠিকাদার গোপাল সরকারের অভিযোগ, “চারটি স্কুলে নির্মাণকাজ না করেই ২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বিডিও।’’ বিষয়টি নিয়ে তাঁরা হাই কোর্টেও যাবেন বলে ঠিকাদারেরা জানিয়েছেন।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)