— ফাইল চিত্র
ভোটের আগে দাগি অপরাধীদের এলাকায় নজরদারি চালায় পুলিশ। এ বার বাজি রুখতে কার্যত একই পথে হাঁটতে চাইছে লালবাজার।
পুলিশ সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই থানায় থানায় এই নির্দেশ চলে গিয়েছে। ওসিদের বলা হয়েছে, নিজের এলাকার কোন কোন পাড়ায় গত কালীপুজো ও দীপাবলিতে বাজির উপদ্রব বেশি ছিল তা চিহ্নিত করতে। সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করে এ বারের পরিস্থিতি এবং আদালতের নির্দেশ বোঝাতে হবে। সে সব ভিডিয়ো করে রাখতে হবে। পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানান, বাজির বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বা বাজি সংক্রান্ত সব ঘটনাই থানায় জেনারেল ডায়েরি বা এফআইআর করে রাখতে বলা হয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, কালীপুজো এবং দীপাবলিতে নির্দেশ অমান্য করলে আদালতের রোষে যাতে পড়তে না হয়, তার জন্যই রেকর্ড রাখা হচ্ছে।
দাগিদের এলাকা ছাড়াও লালবাজার প্রতিটি পাড়ায় এবং ওয়ার্ডে প্রচার চালাতে বলেছে থানাগুলিকে। যা বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে। এক পুলিশকর্তা বলেন,
“ধরপাকড়ের আগে মানুষকে সচেতন করে বাজি পোড়ানো বন্ধ করার চেষ্টা হচ্ছে। অলিগলিতে মোটরসাইকেল ও অটোয় চেপে টহল দেওয়া হবে।”
সূত্রের খবর, কালীপুজো এবং দীপাবলির রাতে বাজি আটকাতে পুলিশ এ বার অটোয় টহলদারির উপরে বেশি ভরসা করছে। সাধারণত অলিগলিতে বাজি পোড়ানো হয় বেশি। ওই সব রাস্তায় পুলিশের বড় গাড়ি ঢোকানোর ক্ষেত্রে সমস্যা, তাই অটোর ব্যবহার করা হয়। লালবাজারের হিসেব অনুযায়ী, কলকাতা পুলিশের ন’টি ডিভিশনে মোট ১১৪টি অটো নামানো হবে শনিবার বিকেল থেকে। প্রতিটি অটোয় দু’জন করে কনস্টেবল থাকবেন। ডিভিশনের ডিসি ওই অটো থানা এলাকার মধ্যে ভাগ করে দেবেন। তবে প্রতি থানায় না হলেও প্রয়োজনীয় এলাকায় দু’টি করে অটো দেওয়া হবে।
লালবাজার সূত্রের খবর, বুধবার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা কালীপুজোর বৈঠকে বসেছিলেন ডেপুটি কমিশনার-সহ উচ্চপদস্থ কর্তাদের নিয়ে। বাজির বিরুদ্ধে পুলিশ যে সব কর্মসূচি নিচ্ছে ওই বৈঠক থেকেই তা রেকর্ড করে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। লালবাজারের ওই নির্দেশ ডিসিরা প্রতিটি থানার ওসিদের জানিয়ে দিয়েছেন। বলা হয়েছে, বাজার ও জনবহুল এলাকায় আদালতের নির্দেশের কথা জানিয়ে বাজির বিরুদ্ধে প্রচার করতে হবে। আদালত পুজো নিয়ে যে নির্দেশ দিয়েছে তা নিয়ে সচেতন করতে পুজো কমিটির সঙ্গে থানাগুলিকে বৈঠক করতে বলা হয়েছে।
কালীপুজোর রাতে শহরের কোথাও যাতে বড় গোলমাল না হয়, সে জন্য ছোট কিছু ঘটলে তাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থানাগুলিকে। বাজি ফাটালে বা গোলমাল হলে দ্রুত যাতে পুলিশ পৌঁছে ব্যবস্থা নিতে পারে লালবাজারের তরফে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
কালীপুজো এবং তার পরের দু’দিনের জন্য হাজার তিনেক পুলিশকর্মী রাস্তায় থাকবেন। সেই সঙ্গে শহরের ৩২৮৮টি বারোয়ারি কালীপুজোয় যাতে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা না হয়, সে জন্য পুলিশি টহল বাড়ানো হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে পুজোর তিন দিন বিকেল থেকে সারা রাত টহল দেবে ৫০টি হাই রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড, ১৩টি কুইক রেসপন্স টিম এবং ১৮টি স্পেশ্যাল মোবাইল পেট্রল বাহিনী। তৈরি করা হচ্ছে ২৭টি নজর-মিনার। কালীপুজোর রাতে অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও প্রস্তুত থাকবে বলে লালবাজার জানিয়েছে।
এ ছাড়া কালীঘাট-সহ শহরের ১৭টি মন্দিরে পৃথক ভাবে পুলিশি নজরদারির বিশেষ ব্যবস্থা থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy