খতিয়ে দেখা হচ্ছে নথিপত্র। সোমবার, তারাতলায়। — নিজস্ব চিত্র।
আশঙ্কা ছিলই। তা সত্যি প্রমাণিত হল অভিযানের প্রথম দিনেই। প্রশাসনের নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেদার স্কুলবাস আর স্কুলগাড়ি চলছে। কোনও গাড়ির টায়ারে তাপ্পি দেওয়া, কোনও কোনও গাড়ির আবার নেই আইনি কাগজপত্র।
পরিবহণ দফতর ও পুলিশ সূত্রে আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, সোমবার থেকে কলকাতার স্কুলবাস ও স্কুলগাড়ির হাল সরেজমিন খতিয়ে দেখা হবে। সেই মতো এ দিন কলকাতায় পাঁচটি দলে ভাগ হয়ে ওই অভিযান শুরু করে পরিবহণ দফতর ও পুলিশ। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, অভিযানের প্রথম দিনেই প্রায় ৫০টি স্কুলবাস ও স্কুলগাড়ি চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বাসকে আটকও করা হয়েছে।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, কলকাতার বিভিন্ন স্কুলের সামনে ছাত্রদের গাড়ি থেকে নামানোর পরে গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করে দেখা হয়। তখনই ধরা পড়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সচেতন করার পরেও তাপ্পি দেওয়া টায়ার-সহ, লাইসেন্স বা ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়াই রাস্তায় দিব্যি চলেছে বহু স্কুলগাড়ি। এর পরেই কয়েকটি স্কুলবাস আটক করা হয়, জরিমানাও করা হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ির মালিককে। এক পরিবহণ-কর্তার কথায়, ‘‘অভিযান চলবে। প্রতিদিনের রিপোর্ট জমা পড়বে মোটর ভেহিক্লস দফতরে। সপ্তাহের শেষে তা পরিবহণ সচিবকে দেওয়া হবে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘নিরাপত্তাই প্রধান বিষয়। যত দিন না সমস্যার সামধান হচ্ছে, তত দিন অভিযান চলবে।’’
মাসখানেক ধরে শহরে একের পর এক স্কুলবাস ও স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে উঠে এসেছে জোড়া-তাপ্পি দেওয়া টায়ার বা প্রশিক্ষণ ছাড়া চালকই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। বারবার স্কুলবাস ও স্কুলগাড়ি সংগঠনগুলিতে আবেদন করেও সুফল মেলেনি। তাই পুলিশ ও পরিবহণ দফতর একযোগে পাঁচটি পর্যবেক্ষক দল গঠন করে অভিযান শুরু করে। সোমবার থেকে কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকায় ওই অভিযান শুরু হয়।
অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্র্যাকচুয়াল ক্যারেজ ওনার অ্যান্ড অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি হিমাদ্রী গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শহরে বহু বেআইনি গাড়ি চলছে। পরিবহণ দফতর কঠোর পদক্ষেপ করলে ভালই হয়।’’ ভবানীপুরের ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সহ-সম্পাদক সুকান্ত বসু বলেন, ‘‘নিরাপত্তার স্বার্থে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়াই উচিত। তবে মালিক ও চালকদের স্বার্থের কথা ভেবে কিছু কর মকুবের আবেদন জানাচ্ছি।’’
এ দিকে, পড়য়াদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হেলমেট নিয়েও সচেতনতা বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন অব স্কুল ফর দি ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেটের সম্পাদক নবারুণ দে জানান, বিভিন্ন স্কুলের কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে অভিভাবকদের জানিয়ে দিতে, পড়ুয়ারা মোটরবাইকে করে এলে যেন অব্যশই মাথায় হেলমেট থাকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy