Advertisement
E-Paper

মুছে ফেলা বার্তাই কি আবেশ-রহস্যের চাবি

যে মেয়েটির জন্মদিন, সে এবং তার বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এক ঝাঁক কিশোর-কিশোরী সে দিন জড়ো হয়েছিল আবাসনের বেসমেন্টে। তাদের বয়স কমবেশি ১৫-১৭ বছর। সিসিটিভি-র ফুটেজে পরিষ্কার, আবেশ মদের বোতল বগলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছে। কাচের বোতল শরীরে ঢুকে রক্তাক্ত আবেশের পড়ে থাকার ছবিও দেখা গিয়েছে সিসিটিভি-তে।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ০২:৪০
এক বছর আগের এক শনিবারে মারা গিয়েছিল আবেশ। প্রতি সপ্তাহের এই দিনে এ ভাবেই ছেলেকে স্মরণ করেন মা। নিজস্ব চিত্র

এক বছর আগের এক শনিবারে মারা গিয়েছিল আবেশ। প্রতি সপ্তাহের এই দিনে এ ভাবেই ছেলেকে স্মরণ করেন মা। নিজস্ব চিত্র

খুনের প্রমাণ মেলেনি এক বছরে। কিন্তু পরপর ঠিক কী ঘটেছিল, সেই ধোঁয়াশা কাটারও কোনও লক্ষণ নেই।

ঠিক এক বছর আগে, ২৩ জুলাই, বালিগঞ্জের সানি পার্কে এক বান্ধবীর জন্মদিনের পার্টিতে আবেশ দাশগুপ্ত নামে এক কিশোরের রহস্য-মৃত্যুর জটও তাই খোলেনি।

যে মেয়েটির জন্মদিন, সে এবং তার বন্ধু-বান্ধবীরা মিলে এক ঝাঁক কিশোর-কিশোরী সে দিন জড়ো হয়েছিল আবাসনের বেসমেন্টে। তাদের বয়স কমবেশি ১৫-১৭ বছর। সিসিটিভি-র ফুটেজে পরিষ্কার, আবেশ মদের বোতল বগলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছে। কাচের বোতল শরীরে ঢুকে রক্তাক্ত আবেশের পড়ে থাকার ছবিও দেখা গিয়েছে সিসিটিভি-তে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছিল, ধারালো কিছুতে কেটে গিয়ে রক্তক্ষরণেই সে মারা গিয়েছে। কিন্তু ঠিক কী ভাবে, কোন পরিস্থিতিতে সেই অঘটন ঘটল, তার স্পষ্ট জবাব মেলেনি। ঘটনার সময়ে উপস্থিত ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কথা বলেও সবটা বোঝা যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। উল্টে, ঘটনার আকস্মিকতায় আবেশের বন্ধুদের মধ্যে আতঙ্কেও রহস্য দানা বেঁধেছিল। পুলিশের দাবি, আবেশের বন্ধুদের মোবাইল ফোনগুলি তদন্তের স্বার্থে তখন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, আবেশের দুর্ঘটনার পরে বেশ কয়েকটি ফোন থেকে কিছু ‘মেসেজ’ মুছে ফেলা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার চ্যাটের কিছু কিছুও মুছে ফেলেছিল আবেশের বন্ধুরা। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই সব মুছে ফেলা মেসেজে আবেশের মৃত্যু-রহস্যের জবাব থাকতেও পারে।’’ গোয়েন্দাকর্তারা অবশ্য বলছেন, ‘‘এটা কখনওই বলব না যে, আমরা কাউকে সন্দেহ করছি। এমনও হতে পারে, হঠাৎ ঘটনাটা ঘটায় অল্পবয়সী ছেলেমেয়েরা ভয় পেয়ে গিয়েছিল। টেনশনে পারস্পরিক দোষারোপ বা ঝগড়াঝাঁটিও হতে পারে। হয়তো টেনশনের জেরেই কিছু মেসেজ তারা মুছে ফেলেছে।’’ তবে তদন্তের স্বার্থে এই মেসেজ-রহস্য জানাটাও জরুরি।

আরও পড়ুন: পাশে হাসপাতাল, কোলে ফিরল মেয়ে

ঠিক কী ভাবে মিলতে পারে এত অজানা প্রশ্নের উত্তর? পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, বাজেয়াপ্ত ফোনগুলি কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এক বছর বাদেও রিপোর্ট আসেনি। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘বেশির ভাগই ছিল আইফোন। ফোনের হার্ডডিস্ক ঘেঁটে মুছে ফেলা ‘মেসেজ’-এর কিছুটা ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা উদ্ধার করতেও পারেন। তবে তা সময়সাপেক্ষ। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা-প্রধান বিশাল গর্গ শনিবার জানিয়েছেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন। শীঘ্রই রিপোর্ট মিলতে পারে।

ফরেন্সিক রিপোর্ট পুরোটা হাতে না-এলে আবেশের মৃত্যু-রহস্যের চূড়ান্ত সমাধান সম্ভব নয়। আবেশের মা রিমঝিম দাশগুপ্তও এখনও সুবিচারের আশায় দিন গুনছেন। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘আশা করি, ছেলেটা কেন চলে গেল, তা এক দিন জানতে পারব। দেরি তো হচ্ছে বটেই! তবু পুলিশের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আমি নিরুপায়।’’

Abesh Dasgupta Mysterious Death Crime আবেশ দাশগুপ্ত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy