Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্রীর বিয়ে ঠেকাল পুলিশ

দারোগা ঢুকে কনের অভিভাবকদের ডেকে বললেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে, সেই খবর আছে আমাদের কাছে। কেন আইন ভাঙলেন?’’ জবাব দিল কনে নিজেই, ‘‘আমার বিয়ে। আমি যখন খুশি করব। তাতে কার কী?’’

—প্রতীকী চিত্র

—প্রতীকী চিত্র

বিতান ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০২:১৪
Share: Save:

সবে শুরু হয়েছে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান। এমন সময়ে বিয়েবাড়িতে এসে থামল পুলিশের গাড়ি। দারোগা ঢুকে কনের অভিভাবকদের ডেকে বললেন, ‘‘নাবালিকার বিয়ে হচ্ছে, সেই খবর আছে আমাদের কাছে। কেন আইন ভাঙলেন?’’ জবাব দিল কনে নিজেই, ‘‘আমার বিয়ে। আমি যখন খুশি করব। তাতে কার কী?’’

সাধারণত নাবালিকার অমতেই বিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু শুক্রবার জগদ্দলের বিধানপল্লি হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীর কথায় চমকেছেন পোড় খাওয়া পুলিশ অফিসারেরাও। রাত পর্যন্ত তার সঙ্গে কথা বলেছেন নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু মেয়ের এক গোঁ।

মেয়েকে নিয়ে আতান্তরে পড়েছিলেন মা-বাবা। দিনরাত বিয়ের স্বপ্ন। পছন্দের ছেলেটি টোটো চালায়। বাবা-মায়ের আপত্তি দেখে আগে এক বার ফিনাইল খেয়েছে মেয়ে। সেই শোকে টোটোচালক যুবকটিও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। বাবা-মা মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, সবে ১৭ বছর বয়স। আর একটা বছর অপেক্ষা করতে। কিন্তু মেয়ে নাছোড়বান্দা।

শুক্রবার স্থানীয় একটি লজ ভাড়া করে বিয়ের আয়োজন করেন মেয়েটির বাবা, পেশায় লস্যি বিক্রেতা সজল দত্ত। অতিথিরাও এসে পড়েছিলেন। রান্না প্রায় শেষ। এমন সময়ে পুলিশের আবির্ভাব। শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার নিমন্ত্রিত অতিথিদের ফোন করে বারণ করেছেন সজলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমি গরিব মানুষ। মান-সম্মান, টাকা সব গেল। মেয়েটা একটু বুঝলে হয়!’’

বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় হতাশ পাত্রও। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আরও এক বছরের অপেক্ষা!’’ পাত্রের বাবা গৌতম শিকদার বলেন, ‘‘আমি সজলবাবুর অবস্থা বুঝতে পারছি। ছেলেমেয়েকে বহু বোঝানোর চেষ্টা করেছি। এ বার পুলিশ ও সরকারি কর্তারা বোঝাতে পারলে বাঁচি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Marriage Minor Marriage police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE