সাত মাস আগে কড়েয়া থানা এলাকার পার্ক সার্কাসের ফুটপাতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল মাথায় ভারী কিছুর আঘাতের ফলে। সেই ঘটনার সঙ্গে মঙ্গলবার টালিগঞ্জ থানার হাতে গ্রেফতার হওয়া ‘স্টোনম্যান’ রাজু নস্করের যোগ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে শুরু করল পুলিশ। বুধবারই রাজুকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে কড়েয়ার ওই খুনের ঘটনায় রাজুর জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে কিনা, তা নিয়ে পুলিশ কিছু জানায়নি। পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সাত মাস আগে ওই দেহ উদ্ধারের পরে পুলিশ খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ঘটনাস্থলের কাছে কোনও সিসি ক্যামেরা না থাকার বিষয়টি তদন্তে বাধা হয়ে দাঁড়ায় বলে দাবি পুলিশের। এ দিকে, পুলিশ জানিয়েছে, কড়েয়ার ওই ঘটনার সঙ্গে রাজু জড়িত কিনা, তা জানা না গেলেও তার বিরুদ্ধে বছর দুয়েক আগে এক ব্যক্তিকে ভারী জিনিস দিয়ে আঘাত করার মামলা রুজু হয়েছিল রবীন্দ্র সরোবর থানায়। তখন পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিল রাজু। এক পুলিশকর্তা জানান, এর আগে রাজু রবীন্দ্র সরোবর এবং লেক থানা এলাকায় একাধিক বার পাথর বা ইট দিয়ে আঘাত করে জখম করেছে অনেককে। মনে করা হচ্ছে, তার মানসিক সমস্যা রয়েছে। সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
মঙ্গলবার সকালে টালিগঞ্জ থানা এলাকার শরৎ বসু রোডের ফুটপাত থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। যাঁর দেহের বিভিন্ন জায়গায় ভারী বস্তুর আঘাত ছিল। মাথার ধারেও তেমন আঘাত মিলেছিল। কান দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। দেহের পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছিল একটা বড় পাথর। যা দেখে পুলিশের দাবি, ওই পাথর দিয়ে স্টোনম্যানের কায়দায় খুন করা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা সোমনাথ চক্রবর্তী ওরফে বুম্বাকে (২৮)। তাঁর বাড়ি মহেশতলায় হলেও তিনি ফুটপাতেই থাকতেন।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে পুলিশ ওই বিকেলেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর থেকে রাজুকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে বুধবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। পুলিশ জানিয়েছে, রাজু কখনও গাড়ি ধোয়ার কাজ করত, আবার কখনও ভিক্ষে করে চালাত। থাকত ফুটপাতে। যেখানে খাবার পেত সেখানেই থেকে যেত সে। ঘটনার কয়েক দিন আগে সোমনাথের সঙ্গে রাজুর ঝামেলা হয়েছিল। সেই আক্রোশ থেকেই সোমনাথকে রাজু স্টোনম্যানের কায়দায় খুন করেছে বলে দাবি পুলিশের।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)