বাইপাসের ধারে একটি চায়ের দোকানে বৃহস্পতিবার রাতে হামলা চলে রফিয়া সাকিল শেখ নামে এক তরুণীর উপর। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার তাঁর সঙ্গে ওই চায়ের দোকানে ছিলেন এক ব্যক্তিও। ঘটনার পর থেকেই তিনি ‘নিখোঁজ’। কোথায় তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন, তা এখনও জানা নেই পুলিশের। তারা জানিয়েছে, ওই ব্যক্তির খোঁজ চলছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, রফিয়ার সঙ্গে তাঁর কী সম্পর্ক, আলাপ কী ভাবে, সব প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
তবে বাইপাস-কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রফিয়া বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। তাঁদের সম্পর্কের কথা জানতে পারে রফিয়ার ‘প্রেমিকে’র পরিবার। তার পরেই রফিয়াকে খুন করার পরিকল্পনা করেন তাঁর স্ত্রী এবং ১৬ বছরের পুত্র। বাবার উপর গোয়েন্দাগিরি শুরু করে নাবালক। রফিয়া ওই ব্যক্তির সঙ্গে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ৫০ মিনিট নাগাদ বাইপাস ধাবার কাছে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন। চারচাকার গাড়ি নিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন দু’জন। জিপিএস ট্র্যাকারের মাধ্যমে বাবার গাড়িকে অনুসরণ করতে অসুবিধা হয়নি ওই নাবালকের। তাঁদের অনুসরণ করতে করতে পিছনে আসে আরও একটি গাড়ি। ওই তরুণীকে খুনের পরিকল্পনা করে সঙ্গে ধারালো অস্ত্র রেখেছিলেন অভিযুক্তেরা। বাইপাসের ধারে ওই চায়ের দোকানে পৌঁছে আচমকা তরুণীর উপর তাঁরা চড়াও হন।
আরও পড়ুন:
স্ত্রী, পুত্রকে চায়ের দোকানে আসতে দেখেই ঘটনাস্থল ছেড়ে পালান ওই ব্যক্তি। তার পর থেকে তাঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। রফিয়াকে খুনের ঘটনায় তিনি জড়িত নন বলেই অনুমান তদন্তকারীদের। তবে এই খুনের ঘটনায় তাঁর বয়ান খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলেই দাবি পুলিশের। রফিয়ার সঙ্গে তাঁর কী ভাবে আলাপ, কেন বৃহস্পতিবার রফিয়ার সঙ্গে দেখা করেন— সেই সব প্রশ্নের উত্তর তাঁর থেকেই পাওয়া যেতে পারে। শুধু তা-ই নয়, বৃহস্পতিবার ঠিক কী ঘটেছিল, তা আরও স্পষ্ট হতে পারে ওই ব্যক্তির বয়ান থেকে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। আটক করা হয়েছে ওই নাবালককেও। পুলিশ পরকীয়া-তত্ত্বের কথা বললেও, তা মানতে নারাজ রফিয়ার শ্বশুরবাড়ি। তাদের দাবি, ‘‘এমনটা হতেই পারে না।’’ স্বামী মোবিন আহমেদের সঙ্গে রফিয়ার সম্পর্ক বেশ ভালই ছিল বলে জানিয়েছেন মৃত তরুণীর ভাসুর মিরাজ। তাঁর দাবি, স্বামী-স্ত্রীর সঙ্গে কোনও অশান্তি ছিল না। দু’জন প্রায় প্রতি দিন স্কুটারে চেপে বার হতেন। রাতের খাওয়াদাওয়া সারতেন বাইরেই। স্ত্রীকে তাঁর দিদার বাড়ি ছেড়ে রাতে কাজে যেতেন মোবিন। ঘরের কাজকর্মই সামলাতেন রফিয়া। স্বামী ছাড়া বাড়ির বাইরে খুব একটা বার হতেন না তিনি। তাই রফিয়ার সঙ্গে ওই ব্যক্তির কোনও সম্পর্ক থাকতে পারে, তা মনেই করছেন না মিরাজ।