Advertisement
E-Paper

Water Pollution: জলাশয়ে মরছে মাছ, গাড়ির সার্ভিস সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ

অভিযোগ, পাশেই একটি গাড়ি সংস্থার শোরুম ও সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। সেই সেন্টারের তেল ও মোবিল-সহ নানা বর্জ্য পদার্থ জলে ফেলা হয়।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২১ ০৭:১৫
অঘটন: মরা মাছ ভাসছে ঝিলের জলে। নিজস্ব চিত্র

অঘটন: মরা মাছ ভাসছে ঝিলের জলে। নিজস্ব চিত্র

বিশাল জলাশয়ে অসংখ্য মরা মাছ— রুই, কাতলা, কালবোস, বাটা, মৃগেল, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প, গ্রাসকার্প, নাইলোটিকা। ই এম বাইপাস লাগোয়া পাটুলিতে প্রায় ৫০ বিঘা এলাকায় মাছ চাষ করেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরা। অভিযোগ, গত ৯ জুলাই থেকে এখনও জলাশয়ে রোজ মাছ মরে ভেসে উঠছে।

রাজ্য মৎস্য দফতরের কাছ থেকে ওই জলাশয়টি লিজ় নিয়েছে বৃজি-পাটুলি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি। সমিতির তরফে ইতিমধ্যেই পাটুলি থানা ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। সমিতির অভিযোগ, পাশেই একটি গাড়ি সংস্থার শোরুম ও সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। সেই সেন্টারের তেল ও মোবিল-সহ নানা বর্জ্য পদার্থ জলে ফেলা হয়। ওই দূষণের জেরেই মারা যাচ্ছে মাছ। ওই সংস্থা অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই জলাশয়কে ঘিরে একটি ইকো পার্কের উদ্বোধন করেছিলেন ২০১৬ সালে। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বেণুবনচ্ছায়া’। উদ্যান ঘিরে পাঁচটি বড়, সংযুক্ত জলাশয় রয়েছে। তারই মধ্যে একটি জলাশয়ে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার মাছ মারা গিয়েছে বলে অভিযোগ বৃজি-পাটুলি মৎস্যজীবী সমিতির চেয়ারম্যান গফুর হালদারের। মোট ৩৫ জন মাছ চাষি সেখানে মাছ চাষ করেন। গফুর বলেন, ‘‘গত ৯ জুলাই সকালে দেখি, জলাশয়ের রং কালো হয়ে গিয়েছে। প্রচুর মরা মাছ ভাসছে। জলাশয় লাগোয়া একটি গাড়ি সংস্থার শোরুম ও সার্ভিস সেন্টার থেকে তেল, মোবিল-সহ নানা বর্জ্য ওই জলে এসে মেশে। তা থেকেই এমনটা ঘটেছে। সে দিনই শোরুম ও সার্ভিস সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সঙ্গে দেখা করতে যাই। কিন্তু রক্ষী বলেন, তিনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আছেন। তার পর থেকে প্রতিদিনই প্রচুর মাছ মরে ভেসে উঠছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা তথা জিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ইঞ্জিনিয়ার অরোত্তম কুণ্ডুর অভিযোগ, ‘‘আমি গিয়ে দেখেছি, ওই সার্ভিস সেন্টারের নিকাশি নালা থাকলেও সেই পথ পুরো রুদ্ধ। সম্ভবত সেই কারণেই বর্জ্য পদার্থ জলাশয়ে ফেলা হচ্ছে। ওই গাড়ি সংস্থা ও সার্ভিস সেন্টারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে জলাশয়ের মাছ দূষণে মরে যাবে। বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হবে। চাষিদের আর্থিক ক্ষতি হবে।’’

শুক্রবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধিরা জলাশয় পরিদর্শন করে জলের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পর্ষদের এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার বললেন, ‘‘পাটুলির ওই জলাশয়ের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেন্ট্রাল ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।’’ পাটুলি থানার এক আধিকারিক জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৎস্য দফতরের সহকারী মৎস্য অধিকর্তা সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘ওই চাষিরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান, তার ব্যবস্থা করা হবে। ওই সার্ভিস সেন্টারের বর্জ্য জলে পড়ার কারণেই মাছ মারা গিয়েছে, এটা যদি প্রমাণিত হয়, তা হলে আমরা ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’’

ওই গাড়ি সংস্থা তথা সার্ভিস সেন্টারের তরফে বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী যাবতীয় অভিযোগ নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘সেন্টার থেকে বর্জ্য পদার্থ বেরোনোর জন্য আলাদা নিকাশি নালা রয়েছে। বর্জ্য কোনও ভাবেই জলাশয়ে পড়তে পারে না। এত দিন কিছু হয়নি। আর আজ হঠাৎ করে এমনটা ঘটল?’’

Water pollution Fish
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy