Advertisement
E-Paper

র‌্যাগিং রুখতে স্ট্যাম্প পেপারে তিন মুচলেকা

কখনও রাখিবন্ধন উত্সব তো কখনও স্ট্যম্প পেপারে মুচলেকা। র‌্যাগিং এবং অন্যান্য হেনস্থা থেকে ছাত্রছাত্রীদের বাঁচাতে রক্ষাকবচ হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেই উদ্যোগেরই অঙ্গ হিসেবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এ বার নবাগতদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প পেপারে তিন-তিনটি মুচলেকা আদায় করে নিচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৫ ০৩:৩৮

কখনও রাখিবন্ধন উত্সব তো কখনও স্ট্যম্প পেপারে মুচলেকা। র‌্যাগিং এবং অন্যান্য হেনস্থা থেকে ছাত্রছাত্রীদের বাঁচাতে রক্ষাকবচ হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেই উদ্যোগেরই অঙ্গ হিসেবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় এ বার নবাগতদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প পেপারে তিন-তিনটি মুচলেকা আদায় করে নিচ্ছে।

কলেজে নতুন ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীদের একই সঙ্গে আশ্বস্ত এবং সতর্ক করার জন্যই এ বছর তারা কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে প্রেসিডেন্সির তরফে জানানো হয়েছে। র‌্যাগিং, যৌন হেনস্থা এবং ‘রেসিজম’ বা জাতপাতের খোঁচা দিয়ে নিগ্রহ ঠেকাতে তিন দফা মুচলেকার ব্যবস্থা হচ্ছে। মুচলেকা মানে ওই তিন নিগ্রহের ব্যাপারে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে সই করিয়ে নেওয়া হবে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের।

আজ, শুক্রবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের ভর্তির কাউন্সেলিং শুরু হচ্ছে। ভর্তির সময় অন্যান্য নথিপত্রের সঙ্গেই পড়ুয়াদের জমা দিতে হবে অ্যান্টি-র‌্যাগিং, অ্যান্টি-সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট এবং অ্যান্টি-রেসিজমের তিনটি পৃথক নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প পেপারে সই করা বয়ান। প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এর আগেও ছাত্রছাত্রীদের এই ধরনের লিখিত বয়ান দিয়েই ভর্তি হতে হত। তবে স্ট্যাম্প পেপারে সই করা বয়ান দাখিলের ব্যাপারটা এ বারেই প্রথম চালু করা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের বক্তব্যেই স্পষ্ট, দীর্ঘদিন ধরে পড়ুয়াদের কাছ থেকে এই ধরনের লিখিত বয়ান নেওয়া সত্ত্বেও র‌্যাগিং-ব্যাধি ঠেকানো যাচ্ছে না। সেই জন্যই কঠোরতর পদক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্সির রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ‘‘যৌন নিগ্রহের অভিযোগ জানিয়ে বেনামে বহু চিঠি পাই আমরা। তদন্ত করে এখনও পর্যন্ত তার ৯৯ শতাংশই ভুয়ো বেরিয়েছে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, কলকাতার
এই অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে, এমনকী রাজ্যের বাইরে থেকেও বহু ছাত্রছাত্রী পড়তে আসেন। স্বাভাবিক ভাবেই নতুন পরিবেশে নানান সংশয় এবং আশঙ্কার মধ্যেই থাকেন পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরা। নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প কাগজে পড়ুয়ার মুচলেকার সঙ্গে সঙ্গে থাকবে তাঁর অভিভাবকের স্বাক্ষরিত বয়ানও। সে-ক্ষেত্রে নতুন নিয়মে কোনও প্রকার যৌন নিগ্রহ
বা জাতপাত সংক্রান্ত নিগ্রহ, সর্বোপরি র‌্যাগিংয়ের শিকার হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা আরও অনেকটা নিশ্চিত করা যাবে বলেই দাবি বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের। একই
সঙ্গে পড়ুয়ারা এই বিষয়েও সতর্ক থাকবেন যে, তাঁরা অভিযুক্ত প্রমাণিত হলে কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন।

হিউম্যানিটিজ ও সমাজবিজ্ঞানের ডিন শান্তা দত্ত জানান, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর নিয়ম অনুযায়ী সব বিশ্ববিদ্যালয়েই এই ধরনের মুচলেকা দেওয়া ও নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু লাল ফিতের বাধা কাটিয়ে বাস্তবে এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা কতখানি ফলপ্রসূ হবে, সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর মেলেনি।

এই প্রশ্নেরও জবাব মিলছে না যে, মুচলেকা তো নেওয়া হচ্ছে নবাগত পড়ুয়াদের কাছে থেকে। যাঁদের কাছে তাঁদের নিগৃহীত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়, সেই বিশেষ শ্রেণির পুরনো পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? ভর্তির সময় মুচলেকা তাঁরাও তো দিয়েছিলেন। তবু ফি-বছর র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ ওঠে। তা হলে প্রতিষ্ঠানে এক বা দু’বছর কাটানোর পরে যাঁরা এমন নিগ্রহে মেতে উঠছেন, তাঁদের নিবৃত্ত করার জন্য কঠোরতর ব্যবস্থা নয় কেন?

সরাসরি জবাব দেননি রেজিস্ট্রার। তিনি শুধু জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে সব কিছুই বিস্তারিত ভাবে দেওয়া আছে। যদিও সাইটে এই সব প্রশ্নের জবাব মিলছে না।

ragging presidency ragging racism sexual harassement stamp paper presidency university
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy