লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন বাজারে আগুন। — ফাইল চিত্র।
রাত পেরোলেই বুধবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। বছরে এই এক দিন মাকে ভোগের উপকরণ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছেন গৃহস্থ। বাজারে সব্জি হোক বা ফল-ফুল, সবের দামই ছেঁকা দিচ্ছে গ্রাহককে। সবচেয়ে ভাবাচ্ছে টম্যাটো আর বেগুনের দাম। অনেকেই পুজোয় লক্ষ্মীকে প্রসাদে মাছভোগ দেন। সেই মাছের দামও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। তাঁদের আক্ষেপ, বর্ষার পর থেকে কমছে না ফল এবং সব্জির দাম। পুজোর সময় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে সেই দাম। সরকারের টাস্ক ফোর্সের কর্তা দাম বৃদ্ধির কথা মেনে নিয়েছেন। তবে জানিয়েছেন, মরসুমি সব্জি বাজারে এলেই কমবে দাম।
বুধবার কোজগরী লক্ষ্মীপুজোর আগে ভিড় ফল এবং সব্জির বাজারে। কিন্তু যতটা ভিড়, ততটা বিকিকিনি নেই বলেই জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। তাঁদের দাবি, আগে ক্রেতারা কোনও সব্জি বা ফল এক কেজি করে কিনলে এখন আধা কেজি বা তারও কম ওজনের জিনিস কিনছেন। লোকসান হচ্ছে আখেরে বিক্রেতাদের। কলকাতার বাজারে একটি নারকেলের দাম ৪০ টাকা। একটা ডাবের দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। অনেকেই ঘটে ডাব রাখার পরিবর্তে বিকল্পের খোঁজ করছেন। এক কেজি আপেলের দাম ২০০ টাকা, এক কেজি ন্যাসপাতির দাম ৩০০ টাকা, এক কেজি শসার দাম ৮০ টাকা, এক কেজি পেয়ারার দাম ৮০ টাকা। এক কেজি পানিফল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। বেদানায় হাত দেওয়া দুষ্কর। এক কেজি বেদানার দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এক কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। এক কেজি আঙুরের দাম ২০০ টাকা, এক কেজি পাকা পেঁপের দাম ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক কেজি আতার দাম কলকাতার বাজারে ৩০০ টাকা, এক কেজি তরমুজের দাম প্রায় ৮০ টাকা। লক্ষ্মীপুজোর আগের দিন এক জোড়া মুসাম্বি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, এক জোড়া কমলালেবু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
ফলের পাশাপাশি সব্জির দামও আগুন। অনেকেই লক্ষ্মীকে পঞ্চব্যঞ্জনে ভোগ সাজিয়ে দেন। এ বার তা করতে কালঘাম ছুটছে মধ্যবিত্ত বাঙালির। বর্ষার পর থেকে সব্জির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পুজোতেও তা কমেনি, বিশেষত বেগুন এবং টম্যাটোর দাম। মঙ্গলবার কলকাতার বাজারে এক কেজি পটলের দাম ৫০ টাকা, এক কেজি উচ্ছের দাম ৮০ টাকা, এক কেজি সিমের দাম ৫০০ টাকা। এক কেজি বিট বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, এক কেজি গাজর ১০০ টাকায়, এক কেজি লঙ্কা ১২০ টাকা, এক কেজি মটরশুঁটি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি বেগুনের দাম ১৫০ টাকা। এক কেজি টম্যাটোর দাম বাজারে ১০০ টাকা। এক কেজি কুমড়োর দাম ৪০ টাকা, এক কেজি বরবটির দাম ১০০ টাকা, এক কেজি বাঁধাকপির দাম এখন ৭০ টাকা। একটি ফুলকপির দাম ৩০ টাকার আশপাশে। এক কেজি জ্যোতি আলুর দাম ৩৪ টাকা, এক কেজি চন্দ্রমুখী আলুর দাম ৩৮ টাকা। এক গ্রাম আদার দাম ৩০ টাকা। অনেকে লক্ষ্মীকে ভোগে ইলিশ মাছ দেন। বাজারে সেই এক কেজি ইলিশের দাম ১,৬০০ থেকে ১,৭০০ টাকা।
রোজ মানিকতলা বাজারে কেনাকাটা করেন সীমা মান্না। তিনি বলেন, ‘‘বর্ষার পর থেকে আনাজের দাম কমছেই না।’’ টাস্ক ফোর্সের প্রধান রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, ‘‘বাজারে কিছু সব্জির দাম বেশি। পাইকারি বাজারেও কিছু সব্জির দাম বেশি। কারণ, সেগুলি গ্রীষ্মকালীন ফসল। এর পর শীতকালীন ফসল বাজারে এলে দাম অনেকটাই স্বাভাবিক হবে। আর দু’সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসবে শীতকালীন ফসল। আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy