Advertisement
E-Paper

Bhatridwitiya: লৌহ কপাটের ওপারে ফোঁটায় ভ্রাতৃত্বের ডাক

ভাইফোঁটার পরদিন বহু সংবাদপত্রেই একটি ছবি প্রকাশিত হয়।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:৫১
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

কোভিড সংক্রমণের আতঙ্ক টের পাচ্ছিলেন বন্দিরাও। এই প্রথম ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দিতে কোনও বোন আসেননি সংশোধনাগারের দরজায়। এমনকি, এর জন্য আগাম আবেদনও করেননি কেউ! তবুও অটুট রইল কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন। ভাইফোঁটা পালন হল, একটু অন্য ভাবে।

প্রায় হাজারখানেক পুরুষ বন্দি একে অন্যের কপালে দইয়ের ফোঁটা দিলেন শনিবার সকালে। কেউ শাঁখে ফুঁ দিলেন। কেউ উলুধ্বনি দিলেন ভাইফোঁটার অনুষ্ঠানে। সেই বন্ধনে আবদ্ধ হলেন ভারতীয়, পাকিস্তানি, আফগান কিংবা নাইজিরীয়। কারা দফতর জানাচ্ছে, জেলের ভিতরে এ ভাবে আগে কখনও ভাইফোঁটা হয়নি।

ভাইফোঁটার পরদিন বহু সংবাদপত্রেই একটি ছবি প্রকাশিত হয়। দেখা যায়, জেলের বাইরের দেওয়ালের ঘুলঘুলি দিয়ে কোনও বোন ফোঁটা দিচ্ছেন বন্দি ভাই কিংবা দাদাকে। কারা দফতর জানাচ্ছে, ওই রীতি পালনের জন্য জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আগাম আবেদন করতে হয়। প্রতি বার দরখাস্তও আসে। কিন্তু এ বারে একটিও দরখাস্ত আসেনি। বন্দিরা অনেকেই জেল সুপারের অফিসে এসে তাঁদের বোনেরা কেউ ফোঁটা দিতে আসছেন কি না খোঁজ নিয়েছেন। ফোঁটা পাওয়ার আশা না দেখে বিমর্ষ ছিলেন তাঁরা।

শেষ পর্যন্ত সহ-বন্দির কপালে ফোঁটা দিয়ে এ দিন ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের নজির তৈরির পরিকল্পনা করেন জেল কর্তৃপক্ষই। সকালে জেলের সুপার দেবাশিস চক্রবর্তী প্রথম ফোঁটা দেন জাভেদ নামের এক সাফাইকর্মীকে। এর পরে জেলের প্রায় এক হাজার বন্দি যোগ দেন অভিনব অনুষ্ঠানে। বোনেরা ভাইয়ের কল্যাণ কামনায় তাঁদের হাতে রাখি বেঁধে থাকেন। বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধনের ডাক দিয়ে একতার বার্তা ছড়িয়েছিলেন গোটা দেশে। এ দিন যেন সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চাইল প্রেসিডেন্সি জেল।

জেলের সুপারের কথায়, ‘‘আমরা বিশ্বব্যাপী ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করেছি।’’ আর এডিজি (কারা) পীযূষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘সম্ভবত কোভিডের কারণেই এ বার বোনেরা কেউ ভাইকে ফোঁটা দেওয়ার জন্য আবেদন করেননি। আমাদেরও খুব আশ্চর্য লেগেছিল। বন্দিদের মনখারাপ হওয়াটাই স্বাভাবিক। এখানে বিভিন্ন ভাষার বন্দিরা থাকেন। সবাইকে মিলিয়ে রাখতে এই ভাবনাটাই মাথায় এল।’’

জেল সূত্রের খবর, বিদেশি বন্দিদের অনেকেই জাল কাগজ নিয়ে ভারতে প্রবেশের অভিযোগে জেল খাটছেন। এ দেশের বন্দিদের অনেকের বিরুদ্ধে খুন, বধূ নির্যাতনের মামলা রয়েছে। ফোঁটা দেওয়ার এই সংস্কৃতি দেখে বিদেশি বন্দিরাও আপ্লুত বলে জানা যাচ্ছে। জেলে ফোঁটার সঙ্গেই ছিল দেদার খাওয়া এবং গানবাজনার ব্যবস্থা। এক আধিকারিক জানান, বন্দিদের রাতের খাবারের মেনুতে রাখা হয়েছে ফ্রায়েড রাইস, ডাল, মাছের মাথা দিয়ে তরকারি, মুরগির কষা মাংস। শেষপাতে মিষ্টিমুখেরও ব্যবস্থা রাখা হয়।

Bhai Phota
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy