Advertisement
E-Paper

অফিস থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করল সিবিআই

শেষ পর্যন্ত পুলিশের প্রহরাতেই শ্রীকান্ত মোহতাকে তাঁর অফিস থেকে আটক করে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:৩৬
শ্রীকান্ত মোহতা।—ফাইল চিত্র।

শ্রীকান্ত মোহতা।—ফাইল চিত্র।

শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস (এসভিএফ)-এর কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে রোজভ্যালি চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার করল সিবিআই। বৃহস্পতিবার টলিউডের অত্যন্ত প্রভাবশালী হিসাবে পরিচিত ওই প্রযোজককে তাঁর কসবার অফিস থেকে প্রথমে আটক করেন সিবিআই আধিকারিকরা। তার পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীকান্তকে। সেখানেই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে।

বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীকান্ত মোহতার এসভিএফ-এর দফতরে রোজভ্যালি-কাণ্ডে জেরা করতে যান সিবিআই আধিকারিকরা। কসবার একটি অভিজাত মলের ১৯ তলায় এসভিএফ-এর অফিস। এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রোজভ্যালি-কাণ্ডের তদন্তকারী আধিকারিক-সহ সিবিআই গোয়েন্দাদের একটি দল সেখানে পৌঁছয়। সিবিআইয়ের একটি সূত্রের দাবি, সেই সময় নিজের দফতরেই ছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা। গোয়েন্দারা তাঁর দফতরে ঢুকতে চাইলে শ্রীকান্তের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের বাধা দেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখানে হাজির হয় কসবা থানার একটি বড় বাহিনী। শ্রীকান্ত মোহতাকে জেরা করতে গিয়ে কলকাতা পুলিশের কাছে বাধা পায় সিবিআই। শুধু কলকাতা পুলিশের বাধাই নয়, সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয় শ্রীকান্ত মোহতার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীদেরও।এমন অভিযোগ করেছে কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের প্রহরাতেই শ্রীকান্ত মোহতাকে তাঁর অফিস থেকে আটক করে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয়। সেখানে জেরার পর এ দিন বেলা সাড়ে তিনটে নাগাদ শ্রীকান্তকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র তদন্তেও শ্রীকান্ত মোহতার নাম উঠেছিল। রোজভ্যালি নিয়ে সিবিআই তদন্তের সময়ে ইডি যে তাঁদের তদন্ত রিপোর্ট দিয়েছিল সিবিআইকে, সেখানে শ্রীকান্তের নাম উল্লেখ করা হয়। সেই রিপোর্টের সূত্র ধরেই রোজভ্যালি কর্ণধার জেলবন্দি গৌতম কুণ্ডুকে জেরা করেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেই জেরাতেই গৌতম দাবি করেন, রোজভ্যালি গোষ্ঠীর টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে ২০১০ সালে শ্রীকান্তের শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস-র একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী, ওই প্রযোজনা সংস্থা রোজভ্যালির চ্যানেলকে ২৫ কোটি টাকার বিনিময়ে ৭০টি ছবি রোজভ্যালির চ্যানেলে দেখানোর স্বত্ত্ব বিক্রি করে। পরে রোজভ্যালির তরফে আদালতে জানানো হয়, চুক্তি অনুযায়ী সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিও দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু যে ৩০টি ছবি শ্রী বেঙ্কটেশ ফিল্মস দিয়েছিল তার মধ্যে অধিকাংশই ছিল পুরনো। সিবিআইয়ের দাবি, ওই চুক্তিতে এটাও উল্লেখ ছিল যে এসভিএফ রোজভ্যালি থেকে পাওয়া ওই টাকা দিয়ে তারা ছবি বানাবে। এবং তারও ছোট পর্দায় সম্প্রচার সত্ত্ব থাকবে রোজভ্যালির হাতেই। কিন্তু, সেই শর্তও পূরণ করেননি শ্রীকান্ত মোহতা। কার্যত সেই টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল শ্রীকান্ত মোহতাকে। সেই অভিযোগের তদন্ত করতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল শ্রীকান্ত মোহতাকে।

আরও পড়ুন: অফিস থেকে শ্রীকান্ত মোহতাকে আটক করে নিয়ে গেল সিবিআই​

আরও পড়ুন: ঋণ দুর্নীতির জের, মুম্বইয়ে ভিডিয়োকনের দফতর-সহ তিন জায়গায় সিবিআই হানা​

এর আগেও একবার সিবিআই জেরা করেছে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে। এসভিএফ-এর কর্ণধার শ্রীকান্ত মোহতাকে এর আগেও রোজভ্যালি-কাণ্ডে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে এক দফা জেরা করেন সিবিআই গোয়েন্দারা।বৃহস্পতিবার ফের জেরা করতে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা সোজা পৌঁছে যান কসবায় শ্রীকান্তের অফিসে। সিবিআই সূত্রে খবর, এর আগে দু’বার তাঁকে নোটিস পাঠানো হয়। সেই নোটিস পেয়েও তিনি আসেননি। এক বার আইনজীবীকে দিয়ে কিছু নথি পাঠিয়েছিলেন। সেই নথি পরীক্ষা করার পর ফের যখন শ্রীকান্তকে ডাকা হয়েছিল, তিনি তার পর নানা কারণ দেখিয়ে নোটিস অগ্রাহ্য করেছেন। ঠিক সেই কারণেই এ দিন দুপুরে সিবিআই তদন্তকারীরা নিজেরাই পৌঁছে যান তাঁর অফিসে— এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।

সিবিআই আধিকারিকদের দাবি, শ্রীকান্ত মোহতার দেওয়া নথি অসম্পূর্ণ। তিনি বেশ কিছু তথ্য এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দেওয়া টাকা লেনদেনের নথিতে অস্পষ্টতা রয়েছে। সিবিআই সূত্রের খবর, তদন্তে অসহযোগিতা করার জন্য তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁকে হেফাজতে রেখে জেরা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।

SVF Shrikant Mohta CBI Rose Valley
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy