Advertisement
E-Paper

পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের ছায়া সল্টলেকে, গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ তরুণীকে

পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের ছায়া এ বার উপনগরীতে। এবং আরও এক বার প্রশ্ন উঠে যাওয়া রাতের নিরাপত্তা নিয়ে। এ বারের ঘটনার কেন্দ্রে রাজ্যের গর্বের মুখ সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক পাঁচ নম্বর সেক্টর। অভিযোগ, রবিবার রাতে ওই এলাকা থেকে এক তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। সল্টলেকের মহিলা থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বিধাননগর কমিশনারেট।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৬ ০৪:১০

পার্ক স্ট্রিট-কাণ্ডের ছায়া এ বার উপনগরীতে। এবং আরও এক বার প্রশ্ন উঠে যাওয়া রাতের নিরাপত্তা নিয়ে। এ বারের ঘটনার কেন্দ্রে রাজ্যের গর্বের মুখ সল্টলেকের তথ্যপ্রযুক্তি তালুক পাঁচ নম্বর সেক্টর।

অভিযোগ, রবিবার রাতে ওই এলাকা থেকে এক তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তুলে গণধর্ষণ এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। সল্টলেকের মহিলা থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার রাতে কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, তরুণীর উপরে শারীরিক নির্যাতন হয়েছে। তাঁকে নিয়ে দুষ্কৃতীরা ঘুরেছে বিভিন্ন রাস্তায়। তবে ঘটনাটি ঠিক কোথায়, কী ভাবে ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। দেখা হচ্ছে তরুণীর অভিযোগের সারবত্তাও।

এই ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে সল্টলেক ও পাঁচ নম্বর সেক্টরের নিরাপত্তা ও নজরদারি। তথ্যপ্রযুক্তির অফিসগুলিতে দিনের পাশাপাশি রাতভরও কাজ হয়। রাতে এক দল কর্মী যেমন শিল্পতালুক থেকে বাড়ি ফেরেন, আবার আর এক অংশ রাতের ডিউটিতে সেখানে যান। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত লোকজনের যাতায়াত থাকে। তাই রাতেও নজরদারি দিনের তুলনায় কম নয়। উপরন্তু রয়েছে সিসিটিভি-র নজরদারি। তার পরেও অভিযোগ অনুযায়ী রাত ১২টা নাগাদ এক তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তুলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় কয়েক ঘণ্টা ধরে ঘুরে বেড়ানোর পরে সোমবার ভোরে সেই সল্টলেকেই ফিরে বৈশাখী মোড়ের কাছে তরুণীকে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে উদ্ধার করেছেন এক ট্যাক্সিচালক। প্রশ্ন উঠেছে, এত নজরদারি সত্ত্বেও পুলিশ এতক্ষণ ধরে চলা এই ঘটনা টের পেল না কেন? কেন ট্যাক্সিচালকের কাছ থেকেই নির্যাতিতার খোঁজ পেল তারা?

২০১২-র জানুয়ারিতে ঘটা করে কমিশনারেট তৈরির পরে পরিকাঠামো বেড়েছে। সিসিটিভি-সহ প্রযুক্তির নানা ব্যবহারে সাফল্য পেয়েছে বিধাননগর পুলিশ। চুরি-ছিনতাইও নিয়ন্ত্রণে। এ বারের বিধানসভা ভোটেও আইনশৃঙ্খলা রাখতে সফল পুলিশ। কিন্তু রবিবারের ঘটনার পরে এলাকায় রাতভর ও সকালে মোবাইল টহল, সল্টলেকের প্রবেশপথে গাড়ি পরীক্ষার প্রক্রিয়া— সবেতেই গাফিলতি দেখছেন বাসিন্দারা। তাঁদের কথায়, ভোটের সময়কার মতো গাড়ি পরীক্ষা বা নজরদারি ভোট মিটতে গায়েব। বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্তও বলেন, ‘‘ভোটের আগে এত সক্রিয়তা, এখন সকলে কি ঘুমিয়ে পড়ল?’’

যদিও অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ। এক কর্তা বলেন, ‘‘কিছু ঘটলেই নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অথচ সফল ভাবে বহু অপরাধ আটকেছে পুলিশ। ধরা পড়েছে অপরাধীরাও।’’ তবে রবিবারের ঘটনাটি কমিশনারেট জুড়ে থাকা নিরাপত্তা বলয়ের কোনও স্তরেই কেন ধরা পড়ল না, তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে পুলিশ মহলে।

চাঞ্চল্য শিল্পতালুকেও। এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের কথায়, এক তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তোলা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গাড়িটি ঘুরে বেড়িয়েছে শহরে। তা হলে পুলিশ কোথায় ছিল? নিজেদের নিরাপত্তার হাল নিয়েও শঙ্কায় তাঁরা। পাশাপাশি ওই কর্মীদের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকলে আন্তর্জাতিক মহলে তা শিল্পতালুকের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। যদিও পাঁচ নম্বর সেক্টরের প্রশাসনিক সংস্থা নবদিগন্তের তরফে এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা অপরিচিত বলেই দাবি করেছেন ওই তরুণী। তা হলে তাঁকেই কেন নিশানা করা হল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে তরুণীর দু’টি মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন দেখে গাড়ির গতিবিধি জানার চেষ্টা চলছে। দেখা হচ্ছে সিসিটিভির ফুটেজও। পাশাপাশি নিগৃহীতার বয়ানের ভিত্তিতে চার যুবকের স্কেচ আঁকানোর প্রস্তুতিও নিচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের দাবি, ইতিমধ্যে বেশ কিছু গূরুত্বপূর্ণ সূত্র হাতে এসেছে। বিধাননগরের কমিশনার জাভেদ শামিম জানান, তরুণীর বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুষ্কৃতীদের দ্রুত ধরা যাবে বলে আশাবাদী তিনি।

এ দিন সকালে বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে ওই তরুণীর শারীরিক পরীক্ষা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, পেশায় সঙ্গীতশিল্পী ওই তরুণী ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকেন। তাঁর পেশাগত তথ্যও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Salt Lake Molestation Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy