Advertisement
E-Paper

বৃষ্টি নেই, এখনও ভোগাচ্ছে জমা জল

বৃষ্টির তেজ বেশি থাকলে জল জমবে ঠিকই, তবে ২-৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নেমেও যাবে বলে দাবি করেছিলেন নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহ। অথচ সোমবারের বৃষ্টির ৩৬ ঘণ্টা পরেও জল-চিত্র বদলাল না বেহালার ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:১৯
বেহালার সত্যজিৎ রায় সরণি। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

বেহালার সত্যজিৎ রায় সরণি। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র

বৃষ্টির তেজ বেশি থাকলে জল জমবে ঠিকই, তবে ২-৪ ঘণ্টার মধ্যে তা নেমেও যাবে বলে দাবি করেছিলেন নিকাশি দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহ। অথচ সোমবারের বৃষ্টির ৩৬ ঘণ্টা পরেও জল-চিত্র বদলাল না বেহালার ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই এলাকার কাউন্সিলর অবশ্য রাখঢাক করেননি জমা জলে এলাকার বেহাল দশা নিয়ে। তাঁর সাফ কথা, এই জল সরতে আরও দু’-তিন দিন লাগবে।’’

গত এক সপ্তাহে দিন তিনেক বৃষ্টির তোড়ে জলমগ্ন হয়েছে শহর কলকাতা। কখনও উত্তরে, কখনও দক্ষিণে, কখনও বা দু’প্রান্তেই। তবে সোমবারের বৃষ্টি রীতিমতো ভুগিয়েছে শহরবাসীকে। অথচ পুরভবনে বসে কর্তারা বলে গিয়েছেন, মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই জলমুক্ত হয়েছে শহর। বাস্তবে চিত্রটা তেমন নয় বলে ওই রাতেই প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল কলকাতার একাধিক অঞ্চলে। জমা জল এখনও ভোগাচ্ছে হাওড়ার একাধিক অঞ্চলেও। নাকাল হচ্ছেন প্রায় এক ডজন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। বুধবারও ত্রাণ বিলি করতে হয়েছে জলে আটকে থাকা মানুষজনকে।

এ দিন দুপুরেও এক হাঁটু জল জমে থাকতে দেখা যায় বেহালার রবীন্দ্রনগরে। বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার অনেক বাড়িতেই জল ঢুকে গিয়েছিল। বিকেল থেকে জল নামতে শুরু করে। স্থানীয় সত্যজিৎ রায় সরণিতে মঙ্গলবার রাতে জলবন্দি হয়ে ছিলেন বাসিন্দারা। তাঁদের অনেকেরই অভিযোগ, কাউন্সিলর ঠিক ভাবে কাজ করেন না। তাই এমন হাল সেখানে।

বাসিন্দাদের আর একটি অংশের মতে, অতীতে অল্প বৃষ্টিতেও এক সপ্তাহ জল জমে থাকত বেহালার বিভিন্ন রাস্তায়। এখন ভোগান্তি তুলনায় কমেছে।’’ যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুরসভার ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সেই কাউন্সিলর সংহিতা দাস বলেন, ‘‘আমি গত পুরভোটের সময়েই বলেছিলাম, ২০১৬ সালে বাসিন্দাদের একটু ভোগান্তি হবে। আগের থেকে পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে। ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন তৈরির চলছে। কাজ হয়ে গেলেই আর জল জমবে না। এখনকার জমা জল সরতে আরও দু’-তিন দিন লাগবে।’’

বুধবার জলে হাবুডুবু হাল ছিল হাওড়া পুরসভার কয়েকটি এলাকাতেও। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় ১০টি ওয়ার্ডের অলিগলিতে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে এ দিন। বন্ধ ছিল শহরের দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যান চলাচলও। এ দিকে বৃষ্টি থামার ৩৬ ঘণ্টা পরেও জল না নামায় নিকাশি সমস্যা সমাধানে পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। যদিও পুরসভার দাবি, অধিকাংশ ওয়ার্ডে জল নেমে গিয়েছে। কয়েকটা নিচু এলাকায় জল রয়েছে। তা-ও রাতেই নেমে যাবে।

রবিবার দুপুর থেকে সোমবার রাত পর্যন্ত দফায় দফায় মুষলধারে বৃষ্টির জেরে হাওড়া শহরের অবস্থা বেহাল হয়েছিল। জল জমে যায় হাওড়া পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৫টিতে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে পুরসভাকে বাসিন্দাদের জন্য শুকনো খাবার, জল ও ত্রিপল পৌঁছে দিতে হয়। জলমগ্ন ওয়ার্ডগুলিতে এ দিনও পুরসভার মেয়র পারিষদ ও কাউন্সিলরেরা উপস্থিত থেকে ত্রাণ বিলি করেন। পুরসভার তরফে জানানো হয়, জল বার করতে ৭টি ড্রেনেজ পাম্পিং স্টেশন ও আলাদা করে ৪১টি পাম্প চালানো হয়।

তাতেও জল নামেনি কেন?

পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) শ্যামল মিত্র বলেন, ‘‘অধিকাংশ জায়গায় জল নেমে গিয়েছে। আসলে রেলের জল এসে কয়েকটি ওয়ার্ডে জমায় সমস্যা বেড়েছে। আশা করা
যায় রাতে গঙ্গার ভাটা হলে সব জল বেরিয়ে যাবে।’’

বৃষ্টি না হলেও এ দিন জমা জলে ভাসতে দেখা যায় হাওড়া পুরসভার ৬, ৭, ৮, ৯, ১৯, ২০, ২১, ২২, ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে বিভিন্ন অলিগলি ও রাস্তা। কোথাও হাঁটু সমান, কোথাও বা কোমর সমান জল।

হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাওড়ার যে নিকাশির সমস্যা রয়েছে, তা সমাধান করতে একটা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। এর সঙ্গে প্রয়োজন রেলের নিজস্ব নিকাশি ব্যবস্থাকে উন্নত করা। কারণ রেলের জমা জলেই আমাদের অনেকগুলি ওয়ার্ডে প্রতি বছর জল জমে।’’

Rain water logging monsoon
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy