রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এসে জল দাবি করেছিলেন স্থানীয় কয়েক জন যুবক। কিন্তু জল নেই বলতেই তাঁরা ক্ষেপে যান। অভিযোগ, ওই যুবকেরা প্রথমে রেস্তোরাঁর মালিক, কর্মীদের মারধর করে ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ওই যুবকেরা তাঁদেরও ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দেন বলেই অভিযোগ। পরে ওই যুবকদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে বিষ্টু, সোমনাথ ভুঁইয়া, সব্যসাচী দত্ত ও অরুণ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রত্যেকেই বালির বাসিন্দা। তবে ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সুমিত তৃণমূল যুব সংগঠনের সক্রিয় কর্মী এবং ওই দলেরই জয় হিন্দ বাহিনী নামের একটি সংগঠনের বালি ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি বলেও স্থানীয় সূত্রের খবর। যদিও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বলরাম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে এঁদের কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে জানি না। আর অন্যায়কে প্রশ্রয় করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। দোষ করলে শাস্তি পেতেই হবে।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাত ১১টা নাগাদ বালির কালীতলা এলাকায় জিটি রোডের উপর একটি বন্ধ রেস্তোরাঁয় সামনে আসেন সুমিতরা। দোকানের মালিক শামিম আনসারির কাছে তাঁরা পানীয় জল চান। অভিযোগ, শামিম ওই যুবকদের জানিয়ে দেন রেস্তোরাঁ বন্ধ হয়ে দিয়েছে, তাই আর জল দেওয়া সম্ভব নয়। এর পরেই ক্ষেপে গিয়ে সুমিত ও তাঁর সঙ্গীরা ‘কী ভাবে জিটি রোডের উপর ব্যবসা চালাও দেখে নেব’, ‘দোকানের ঝাঁপ বন্ধ’ করে দেওয়ার মতো হুমকি দিতে থাকেন। শামিম বলেন, ‘‘আমি ওঁদের বোঝানোর চেষ্টা করি জল নেই বলেই দিতে পারছি না। কিন্তু কোনও কথা না শুনে ওঁরা আমাকে এবং কর্মচারীদের এলোপাথাড়ি চড়, কিল, ঘুষি মারতে থাকেন।’’ এর পরেই অর্ধেক খোলা শাটারের নীচ দিয়ে রেস্তোরাঁর ভিতর ঢুকে ওই যুবকেরা জিনিসপত্র ভাঙচুর ও ফেলে দিতে শুরু করেন বলেও অভিযোগ। তখনই বালি থানায় খবর দেন শামিম।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছলে তাঁদেরও ‘চাকরি খেয়ে নেব’ গোছের হুমকি দিতে থাকেন ওই যুবকেরা। পুলিশ জানায়, যুবকেরা সকলেই মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এর পরেই তাঁদের ধরা হয়। পুলিশের এক কর্তা জানান, আগেও সুমিতের নামে অভিযোগ এসেছে। কয়েক মাস আগে পারিবারিক বিবাদের জেরে পিসিকে শিলনোড়া দিয়ে মারার অভিযোগও উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘রেস্তোরাঁর মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে ওই যুবকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি, ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ মঙ্গলবার হাওড়া আদালতে তোলা হলে ধৃতেরা সকলে জামিন পান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy