Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kashipur

Kashipur landslide: ‘যে ভাবে ফাটল ধরেছে, বাড়িটা আদৌ থাকবে তো?’

শনিবার রাত থেকে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পাশের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন রানি বিশ্বাস, প্রিয়াঙ্কা জানা, বাপি বিশ্বাস, পায়েল বাগরা।

বোজানো হচ্ছে ধসের ফলে তৈরি হওয়া গর্ত। সোমবার, কাশীপুরে।

বোজানো হচ্ছে ধসের ফলে তৈরি হওয়া গর্ত। সোমবার, কাশীপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২২ ০৭:৩৯
Share: Save:

কাশীপুরে শনিবার রাতে রতনবাবুর ঘাট লাগোয়া চন্দ্রকুমার রায় লেনে একশো বর্গফুট এলাকা জুড়ে ধস নামার ফলে সাত ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়েছিল। সোমবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, সেই ধসের পরিসর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ বর্গফুটে। যার জেরে ফাটল দেখা দিয়েছে আটটি বাড়িতে। ওই সমস্ত বাড়ির ৪০ জন বাসিন্দাকে স্থানীয় একটি স্কুলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ছেড়ে প্রবল আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

এ দিন দেখা গেল, ধসের জায়গায় বালি ফেলছেন পুরসভার কর্মীরা। দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বললেন, ‘‘বালি ফেলে দেখা হবে তা নীচে ঢুকে যাচ্ছে কি না। তার পরে কাজ শুরু হবে।’’ ধসের জন্য গোটা রাস্তা বন্ধ। পাশের একটি রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলছে। ওই এলাকাটি গঙ্গা থেকে মেরেকেটে দশ মিটার দূরে। এলাকাবাসীর বক্তব্য, গঙ্গাপাড়ের সংস্কার না করলে আগামী দিনে একাধিক বাড়ি নদীর ভাঙনে তলিয়ে যাবে। এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কার্তিক মান্না বলেন, ‘‘কাশীপুরে গঙ্গার পাড় ব্যাপক ভাবে ভাঙছে। দ্রুত পাড় না বাঁধালে বড় বিপর্যয় অনিবার্য। এ বিষয়ে মেয়রকে জানাব।’’ যে আটটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে, সেগুলি গঙ্গার একেবারে লাগোয়া।

শনিবার রাত থেকে নিজেদের বাড়ি ছেড়ে পাশের স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন রানি বিশ্বাস, প্রিয়াঙ্কা জানা, বাপি বিশ্বাস, পায়েল বাগরা। ধসের জেরে তিনটি বাড়ি হেলে পড়েছে। রানি বললেন, ‘‘একশো বছরেরও বেশি পুরনো বাড়ি। যে ভাবে ফাটল ধরেছে, বাড়িটা আদৌ থাকবে তো?’’

তাঁরা জানালেন, রতনবাবুর ঘাটের পাশেই বড়সড় একটি নিকাশি নালা ছিল। সেই নালার জল সরাসরি গঙ্গায় গিয়ে পড়ত। কিন্তু পরিবেশ আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি সেই নালা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার বদলে বড় আকারের একটি পাইপলাইনের মাধ্যমে নিকাশির জল গঙ্গাপাড়ে নিয়ে গিয়ে পরিশোধন করে গঙ্গায় ফেলা হচ্ছে। সেই পাইপলাইন গিয়েছে ধস নামা ওই এলাকার নীচ দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, নিকাশি পথের এই পরিবর্তনের জেরেই কি ধস নামল? বাসিন্দারা এ-ও জানালেন, আমপানের ধাক্কায় রতনবাবুর ঘাটের জেটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সেই জেটির সংস্কার হচ্ছে। যার জন্য লোহার বড় বড় বিম গঙ্গাপাড়ে মাটির নীচে অনেকটা গভীরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। যেখানে ধস নেমেছে, সেখান থেকে জেটির দূরত্ব বেশি নয়। ওই বিমগুলি মাটির নীচে প্রবেশ করানোর সময়ে এলাকায় খুব জোরে কম্পন হত। অনেকের ধারণা, সেটাও ধসের কারণ হতে পারে। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘নিকাশির সমস্যার জন্য ধস নামেনি। গঙ্গাপাড়ের দেওয়াল ক্ষয়ে যাওয়াতেই জল ঢুকে সমস্যা হচ্ছে। সেচ দফতর পরিদর্শন করেছে। অবিলম্বে সেচ দফতরের তরফে গঙ্গাপাড় মেরামতির কাজ শুরু হবে।’’

এ দিন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। এক শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘কেন ধস নেমেছে, তা খতিয়ে দেখছি। আপাতত আরও ধস নামা বন্ধ করাটাই প্রধান কাজ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Kashipur landslide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE