বাঙালি হিন্দুদের বারো মাসে তেরো পার্বণ। আর পার্বণের মধ্যেই পড়ে নানা দেবতার পুজোও। লক্ষ্মীপুজো, সরস্বতী পুজো প্রভৃতি ছাড়াও প্রায় সব বাঙালি বাড়িতেই যে কোনও শুভ কাজ শুরুর পূর্বে ভগবানের আরাধনা করার রেওয়াজ আছে। ঈশ্বরের প্রতি গভীর আস্থা থেকেই এই কাজ করা হয়ে থাকে। বিশ্বাস করা হয় তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কোনও কাজ শুরু করলে সেটি সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবেই। ভগবানের আশীর্বাদ সঙ্গে থাকবে। আর পুজো মানেই প্রসাদ। ভগবানের উদ্দেশ্যে যা নৈবেদ্য দেওয়া হয়, তা-ই পরবর্তী কালে প্রসাদ হিসাবে গ্রহণ করা হয়।
আরও পড়ুন:
ঘরোয়া ভাবে পুজো করা হোক বা আড়ম্বরের সঙ্গে, নৈবেদ্য দানের ক্ষেত্রে বাঙালি হিন্দুরা কোনও কমতি রাখেন না। তবে সমস্যা হয় যখন সেই প্রসাদ বেচে যায়। তখন সেটি নিয়ে কী করা উচিত বুঝতে পারা যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই সেই প্রসাদ পরে খাওয়া হবে ভেবে রেখে দিলেও পরে গিয়ে আর খাওয়া যায় না, তখন তা ফেলে দিতে হয়। যদিও শাস্ত্রমতে, এই কাজ করা অত্যন্ত ভুল। ঠাকুরের প্রসাদ কখনও ফেলে দিতে নেই। বাড়তি প্রসাদ নিয়ে কী করতে হয় জেনে নিন।
- ভগবানকে দেওয়া নৈবেদ্য সর্বদা সকলের সঙ্গে ভাগ করে খেতে হয়। এটি একা খাওয়ার জিনিস নয়। প্রসাদ যত অল্পই হোক, তা সকলের সঙ্গে ভাগ করে খেলে খুশি হন ভগবান। তাই যত বেশি মানুষের মধ্যে সম্ভব প্রসাদ বিতরণ করে দিন। প্রয়োজনে বাড়তি প্রসাদও পরে খাবেন ভেবে রেখে না দিয়ে অপরকে দিয়ে দিন। এতে ঈশ্বরের কৃপা আপনার উপর বর্ষাবে।
আরও পড়ুন:
- শুকনো প্রসাদ, যেমন লাড্ডু, সন্দেশ, মিছরি প্রভৃতি জিনিস পরে খাবেন ভেবে রেখে দেওয়া যেতে পারে। তবে সঠিক উপায় মেনে রাখতে হবে। কোনও পরিষ্কার ঢাকনা যুক্ত পাত্রে সেগুলিকে রেখে ঢাকনা ভাল করে আটকে রাখতে হবে। এর সঙ্গে আমিষ কোনও খাবার ছোঁয়ানো যাবে না। তবে সেগুলিকে নষ্ট হতেও দেওয়া যাবে না। সময় থাকতে থাকতে খেয়ে নিতে হবে।
- খিচুড়ি, পোলাও জাতীয় প্রসাদ অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে ফেলে দেওয়া ছাড়া আর কোনও গতি থাকে না। এমনটা হলে কোনও গাছের তলায় প্রসাদগুলি ফেলে দিতে পারেন। কিংবা, পরিষ্কার প্লাস্টিকে বেঁধে গাছের তলায় বা পুকুরের ধারে রেখে দিতে পারেন। প্রসাদ কখনও আবর্জনা ফেলার স্থানে ফেলা উচিত নয়। এতে ভগবানকে অসম্মান করা হয়।
আরও পড়ুন:
- প্রসাদে থাকা ফুলও তুলে ময়লা ফেলার স্থানে ফেলা উচিত নয়। সেগুলি প্রসাদের উপর থেকে সরিয়ে কোনও গাছের গোড়ায় দিয়ে দিতে পারলে খুব ভাল হয়।
- সিন্নি, চরণামৃত জাতীয় প্রসাদ নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলি কোনও গাছের গোড়ায় বা প্রবাহিত জলে ফেলে দিতে হবে। নর্দমা বা ময়লা ফেলার স্থানে ফেলা যাবে না।