ভগ্নদশা: জীর্ণ বাড়িটির এই অংশই ভেঙে পড়ে। মঙ্গলবার, উত্তর হাওড়ায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
হাওড়ায় বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা জানতে সপ্তাহ দু’য়েক আগে হাওড়া পুরসভার পক্ষ থেকে বরোগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে উত্তর হাওড়ায় ভেঙে পড়ল একটি বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ। এর জেরে ঘরের ভিতরে আটকে পড়েন পাঁচ মহিলা-সহ আট জন। প্রায় এক ঘণ্টা পরে দমকল ও পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা গিয়ে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের নিরাপদে উদ্ধার করেন।
উত্তর হাওড়ার বাঁধাঘাট মোড়ের কাছে ৬৯, সালকিয়া স্কুল রোডে অবস্থিত ওই বাড়িটিকে দু’বছর আগে বিপজ্জনক ঘোষণা করেছিল পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে বাড়িটির দোতলার বারান্দা। বিকট শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। খবর যায় দমকলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়িটির একতলার দু’টি ঘর ভাড়া দেওয়া রয়েছে। একটি ঘরে চলে ভাতের হোটেল। অন্য ঘরটি সুতোর গুদাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ দিন ঘটনার সময়ে ভাতের হোটেলে দু’জন এবং সুতোর গুদামে পাঁচ জন মহিলা কর্মী ছিলেন। এ ছাড়াও বাড়িটির দোতলায় ছিলেন এক মহিলা।
দমকল জানিয়েছে, জীর্ণ ওই বাড়িটি ভেঙে বহুতল করার ব্যাপারে দায়িত্বে রয়েছেন এক ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী। তিনি তখন একাই ছিলেন। স্বামী ছিলেন বাইরে। বাড়িটির বারান্দা ভেঙে পড়ায় ধ্বংসস্তূপে আটকে যায় একতলার সদর দরজা। ফলে দোতলা ও একতলার ভাড়াটেরা কেউই বেরোতে পারেননি। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, রাস্তার উল্টো দিকের একটি দোকানের মালিক রাহুল চৌধুরী বলেন, “হঠাৎ দেখি, বাড়িটির বারান্দা হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল। ধুলোয় ঢেকে গেল চারদিক।’’
দিনের ব্যস্ত সময়ে এমন ঘটনায় সালকিয়া স্কুল রোড দিয়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে আসে দমকলের একটি ইঞ্জিন এবং পুরসভার বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। সকলে মিলে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ শুরু করেন। এসে পৌঁছন প্রাক্তন মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী। তিনি আটকে পড়া মানুষদের পাশের বাড়ির ছাদ থেকে খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে এলাকাবাসীর ভিড়। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ততক্ষণে উদ্ধার করা হয়েছে আটকে থাকা বাসিন্দাদের। পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা এসে বাড়িটির অবস্থা খতিয়ে দেখছেন। বাড়ির মালিক অমিত গুপ্ত বলেন, “দু’বছর আগে বাড়িটি বিপজ্জনক বলে পুরসভা নোটিস দেওয়ার পরেই ভাড়াটেদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা ওঠেননি। তার পরে নানা জটিলতায় বাড়িটি ভাঙা যায়নি। তবে চেষ্টা চলছিল।’’
ওই বাড়ির একতলায় যে ভাতের হোটেল, সেটির মালিকের ছেলে রমেশ গুপ্ত বলেন, “তখন রান্নার প্রস্তুতি চলছিল। আমরা হোটেলের ভিতরে ছিলাম। হঠাৎই বারান্দা ভেঙে পড়ে দরজা পুরোপুরি আটকে যায়।’’
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে হাওড়া পুরসভার কমিশনার তথা প্রশাসক বিজিন কৃষ্ণ বলেন, “বাড়িটি অবিলম্বে ভেঙে দেওয়া দরকার। আমাদের ইঞ্জিনিয়ারেরা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy